মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

মারামারিতে জড়ানো সেই নারীদের মদপানের লাইসেন্স ছিল না: ডিবিপ্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪
মারামারিতে জড়ানো সেই নারীদের মদপানের লাইসেন্স ছিল না: ডিবিপ্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরের ক্যাফে সেলেব্রিটা বারের সামনে সম্প্রতি কয়েকজন নারীর চুলোচুলি ও মারামারির ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ডিবি জানিয়েছে, ওই নারীদের মদপানের লাইসেন্স ছিল না। তারা অবৈধভাবে অতিরিক্ত মদপান করে মাতাল হয়ে মারামারিতে জড়ান। তাদের কাছে মদ বিক্রি করায় সেলেব্রিটা বারের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব কথা বলেন।

গ্রেপ্তার তিন নারী হলেন, শারমিন আক্তার মিম (২৪), ফাহিমা ইসলাম তুরিন (২৬) ও নুসরাত আফরিন।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, নগরে বাস করতে গেলে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। যেকোন নারী-পুরুষ লাইসেন্স থাকলেই মদ পান করতে পারে। তবে পয়লা বৈশাখের রাতে গুলশান এলাকায় যারা মদ পান করেছেন, তাদের কারো লাইসেন্স ছিল না। লাইসেন্সহীনদের কাছে বার কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত পরিমাণে মদ বিক্রি করেছে। যা পান করে তারা মাতাল, বেসামাল হয়ে গেছেন।

তিনি বলেন, বার কর্তৃপক্ষের ওই বেসামাল নারীদের নিয়ন্ত্রণ করা উচিত ছিল। কিন্তু তা তারা করেনি। ওই নারীরা রাস্তায় গিয়ে প্রকাশ্যে মারামারি করেছেন। যা গুলশানের বাসিন্দারা দেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিলেন। ভাইরাল হলো দেশজুড়ে।

ডিবি প্রধান বলেন, আমি মনে করি এই ভিডিও দেশের মানুষের মধ্যে শহরের মানুষ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা হবে। এসব নারীরা কারো না কারো সন্তান। তাদের অভিভাবকদের উচিত মেয়েরা কোথায় যায়, কী করে সেদিকে খেয়াল রাখা। আজকে এই নারীরা বারে গিয়ে মদ পান করে এমন কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছেন। যে মেয়েকে তারা মেরেছেন সেই মেয়েটিও মাতাল ছিলেন।

হারুন অর রশীদ, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী একটি অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যে বারগুলো লাইসেন্স ছাড়া মদ বিক্রি করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নেব।

অন্যদিকে, মারধরের শিকার ভুক্তভোগী রিতা আক্তার সুস্মি বলেন, আমি রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলাম, কারণ ওখানকার খাবারটা অনেক ভালো। খেতে গিয়েছিলাম। ওই মেয়েরা চারজন মিলে ওয়াশরুমে গিয়েছে। কোনো নিয়ম আছে একটা রেস্টুরেন্টে চারজন মিলে ঢোকা (ওয়াশরুমে)? সিরিয়াল মতো যাওয়া যাওয়া, তাই না?

তিনি বলেন, ওখানকার ম্যানেজারকে বললাম, ভাইয়া, চারজন মিলে ওয়াশরুমে গিয়েছে, আরও কারও তো দরকার পড়তে পারে। পরে ম্যানেজার তাদের বের দিয়েছে ধরে। তাদের বের করে দেওয়ার পরে রাত সাড়ে ১২টার (রাত) দিকে বের হওয়ার পর আক্রমণ করেছে।

ওই নারী বলেন, প্রথমে আমার গলার দিকে অ্যাটাক করেছে। দেখেছে আমার গলায় কিছু (গহনা) আছে কি না। ওরা চারজন, আর আমি একা। আমি আবার শাড়ি পরা। কীভাবে আমি নিজেকে মেইনটেইন করব?

তিনি বলেন, সোস্যাল মিডিয়াতে আপনারা সবাই দেখেছেন, কীভাবে ভাইরাল হয়েছে। আমার তো একটা আত্মসম্মান আছে, তাই না? উনি তো একটা নারী, মেয়ে মানুষ। উনার দরকার ছিল, আমাকে একটা থাপ্পড় মারত, উনি আমাকে চুলে ধরত আমার কোনো দুঃখ থাকত না। আমার শাড়িটা খোলার কী দরকার ছিল? এটা সবার কাছে আমার প্রশ্ন। আমি চাই, তাদের সুষ্ঠু বিচার হোক, আর কিছু না। আমার সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, যেন কোনো বোনের সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।

তারা মিমাংসার কথা বলছে- সাংবাদিকরা এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে গ্রেপ্তার ওই নারী বলেন, ‘না, আমি কোনো মিমাংসা করব না। আমি হ্যারাসমেন্ট হইছি, সোস্যাল মিডিয়াতে আমি ভাইরাল হয়ে গেছি। উনারা হন নাই। উনারা মিডিয়াতে কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন। কেন, আমি যদি দোষ না করি কথা বলতে কোনো প্রবলেম আছে? উনারা দোষ করেছেন বলেই কথা বলতে চাচ্ছেন না। আমি সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার চাই। কারণ রাস্তায় একজন মেয়ে হয়ে আরেকজন মেয়ের কাপড় খুলে ফেলতে পারে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া