Dhaka রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একটি বিশেষ মহল বিএনপির সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, একটি বিশেষ মহল বিএনপির সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের সঙ্গে কিছু সংবাদমাধ্যমও লিপ্ত। তদন্তের আগে কাউকে অপরাধী বলা নৈতিক নয়। কোনো প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে যেন সংবাদ প্রকাশ না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকা উচিত। কেউ যেন ইনোসেন্ট ভিক্টিম না হয়।

সোমবার (২৪ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মহাসচিবের খোঁজে বিএনপি- পত্রিকায় এ শিরোনাম দেখার দুদিন পর দেখলাম মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কাঁদছেন। পত্রিকায় এসেছে বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ বিধায় তিনি কেঁদেছেন। বেগম খালেদা জিয়া তো বহুদিন ধরে অসুস্থ। এতদিন তো কান্না দেখিনি। মহাসচিব খোঁজার শিরোনামের সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কান্নার কোনো সংযোগ আছে কি না, তা খুঁজে দেখার বিষয়।

আওয়ামী লীগের কাছ থেকে বিএনপির অনেক কিছু শেখার আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতি তিন বছর অন্তর সম্মেলন হয়। কলমের খোঁচায় আওয়ামী লীগ থেকে কাউকে অব্যাহতি দেওয়া হয় না, দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের সৌন্দর্য হলো- দলটি নেতার দল নয়, কর্মীদের দল। আওয়ামী লীগের সঙ্গে অন্যান্য দলের পার্থক্য হলো, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা আছে, আর বিএনপিসহ অন্যান্য দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা নেই।

হাছান মাহমুদ বলেন, যখন আওয়ামী লীগ সংকটময় মুহূর্তে পড়তে যাচ্ছিল, তখন দলের ঐক্যের প্রতীক হয়ে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তাকে ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নেওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন। বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগকে তিনি মায়ের মমতায়, বোনের স্নেহে কর্মীদের আগলে রেখে সংগঠিত করেছেন।

তিনি বলেন, ২১ বছর ধরে আমরা শুনেছিলাম, আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতায় যাবে না। আমরা অনেক টিটকারির শিকার হয়েছিলাম। সেই আওয়ামী লীগকে তিনি (শেখ হাসিনা) রাষ্ট্রক্ষমতায় নিয়ে গেছেন। পরপর চারবার আজ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায়। এর প্রধান কারণ হলো জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি, একতা এবং সংকটে থেকেও তা মোকাবেলা করার সাহস, দৃঢ়তা ও বুদ্ধিমত্তা।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা গণতন্ত্রের কথা বলে, তাদের দলেই গণতন্ত্র নেই। নির্বাচনের পর সরকার হটানোর পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়েছে তাদের। বিএনপির বেলুন ফিউজ হয়ে গেছে। যে কারণে এক রাতেই কলমের খোঁচায় নেতাকর্মীর পদ-পদবি আলাদা হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের প্রতি তিন বছর পরপর সম্মেলন হয়। কলমের খোঁচায় কাউকে বাদ অথবা পদ দেওয়া হয় না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগকে ভাগ করেছিলেন। ভেবেছিলেন এ দলকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া যাবে, কিন্তু পারেননি তিনি। কারণ, জনগণ সঙ্গে ছিল আর হাল ধরেছেন শেখ হাসিনা। তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর বঙ্গবন্ধুহীন দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বাবাহীন সংকটাপূর্ণ সংসারকে মায়ের মমতায় কর্মীদেরকে আগলে রেখেছেন তিনি। ২১ বছর ধরে আমাদের শুনতে হয়েছে আওয়ামী লীগ আর ক্ষমতায় যাবে না। তিনি পরপর চার বার দলকে ক্ষমতায় নিয়ে গেছেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা আওয়ামী লীগ থেকে সরে গেছে-তারা আজ রাজনীতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছেন। ৭৫ বছরের পথ চলায় দলটি নিশ্চিহ্ন করতে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। অনেকে দল ছেড়েছেন ও বেঈমানিও করেছেন; তারা রাজনীতি থেকে হারিয়েও গেছেন। এটাই রাজনীতির শিক্ষা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা পুনরুদ্ধার হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতার দল নয়, কর্মীদের দল। অন্য দলের সঙ্গে পার্থক্য হচ্ছে অভ্যন্তরীণ চর্চা আছে। বিএনপিসহ অন্য দলের যে যোগ্যতা নেই। এটাই আওয়ামী লীগের সৌন্দর্য। শেখ হাসিনা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের আগলে রাখেন। যে কারণে সকল সংকটে তারা দলের পাশে থাকেন। যারা আওয়ামী লীগ থেকে সরেছে-তারা আজ রাজনীতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছেন। ৭৫ বছরের পথ চলায় দলটি নিশ্চিহ্ন করতে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। অনেকে দল ছেড়েছেন ও বেঈমানিও করেছেন; তারা রাজনীতি থেকে হারিয়েও গেছেন। এটাই রাজনীতির শিক্ষা।

আওয়ামী লীগের এ নেতা আরও বলেন, এবছর দুবার আমরা ভারত সফরে গিয়েছি। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। বিভিন্ন দেশের সরকার প্রতিনিধিরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। স্টেজ থেকে ঘোষণা হচ্ছিল লংগেস্ট সার্ভিস প্রোভাইডার লেডি ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। যে কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যখন উপস্থিত হওয়া হয়, সবার আকর্ষণে থাকেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের কাছে যেমন শেখার আছে, শেখ হাসিনার কাছেও অনেকের শেখার আছে। বিশ্ব সংকটের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। টালমাটাল পৃথিবী, সেই পরিস্থিতিতেও আমরা উচ্চ প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছি। ইউরোপে পণ্যের সংকট হলেও আমাদের দেশে হয়নি। এটি তার কারণেই সম্ভব হয়েছে।

দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলোকে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আগেও দেখেছি, একটি বিশেষ মহল সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই বিশেষ মহলের সঙ্গে দুই-একটি গণমাধ্যমও যুক্ত। দেশে দুর্নীতি হলে সেটি অবশ্যই সংবাদে আসবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের সরকারের জিরো টলারেন্স রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ইচ্ছেকৃতভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে সংবাদ পরিবেশিত হলে, বুঝতে হবে এটি ষড়যন্ত্রের অংশ। তদন্তের আগে গণমাধ্যমের সামনে কাউকে দুর্নীতিবাজ বলাও সমীচীন নয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, অবশ্যই দুর্নীতির সংবাদ আসবে এবং তা দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বনে প্রয়োজন রয়েছে। কোনো নিরপরাধ মানুষ যাতে ভিকটিম (ভুক্তভোগী) না হয়। কোনো প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রয়াস হিসেবে যেন কোন সংবাদ পরিবেশন না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

তিনি বলেন, গত নির্বাচনের আগে অনেক ষড়যন্ত্র ছিল। প্রথমে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সেই ষড়যন্ত্র বানচাল হওয়ার পর ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল সরকার যেন বিশ্ব দরবারে সমাদৃত না হয়। ৮০টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট চিঠি লিখে সরকারের সঙ্গে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এরপর বিএনপির বেলুন ফিউজ হয়ে গেছে। এখন তারা অভ্যন্তরীণ সংকটে নিমজ্জিত। সে কারণে দেখা যায়, মধ্যরাতে কমিটি বাতিল, আবার ভোররাতে আরেকজনকে বহাল। এটি বিএনপির মধ্যে এখন রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে দলের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা নেই, তারা আবার গণতন্ত্রের কথা বলে কীভাবে?

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি অরূপ রতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য বলরাম পোদ্দার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলী শিকদার প্রমুখ।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাকুন্দিয়ায় শরীফ হত্যা মামলার আরো এক আসামী গ্রেফতার

একটি বিশেষ মহল বিএনপির সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৬:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, একটি বিশেষ মহল বিএনপির সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের সঙ্গে কিছু সংবাদমাধ্যমও লিপ্ত। তদন্তের আগে কাউকে অপরাধী বলা নৈতিক নয়। কোনো প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে যেন সংবাদ প্রকাশ না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকা উচিত। কেউ যেন ইনোসেন্ট ভিক্টিম না হয়।

সোমবার (২৪ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মহাসচিবের খোঁজে বিএনপি- পত্রিকায় এ শিরোনাম দেখার দুদিন পর দেখলাম মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কাঁদছেন। পত্রিকায় এসেছে বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ বিধায় তিনি কেঁদেছেন। বেগম খালেদা জিয়া তো বহুদিন ধরে অসুস্থ। এতদিন তো কান্না দেখিনি। মহাসচিব খোঁজার শিরোনামের সঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কান্নার কোনো সংযোগ আছে কি না, তা খুঁজে দেখার বিষয়।

আওয়ামী লীগের কাছ থেকে বিএনপির অনেক কিছু শেখার আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতি তিন বছর অন্তর সম্মেলন হয়। কলমের খোঁচায় আওয়ামী লীগ থেকে কাউকে অব্যাহতি দেওয়া হয় না, দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের সৌন্দর্য হলো- দলটি নেতার দল নয়, কর্মীদের দল। আওয়ামী লীগের সঙ্গে অন্যান্য দলের পার্থক্য হলো, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা আছে, আর বিএনপিসহ অন্যান্য দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা নেই।

হাছান মাহমুদ বলেন, যখন আওয়ামী লীগ সংকটময় মুহূর্তে পড়তে যাচ্ছিল, তখন দলের ঐক্যের প্রতীক হয়ে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তাকে ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নেওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন। বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগকে তিনি মায়ের মমতায়, বোনের স্নেহে কর্মীদের আগলে রেখে সংগঠিত করেছেন।

তিনি বলেন, ২১ বছর ধরে আমরা শুনেছিলাম, আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতায় যাবে না। আমরা অনেক টিটকারির শিকার হয়েছিলাম। সেই আওয়ামী লীগকে তিনি (শেখ হাসিনা) রাষ্ট্রক্ষমতায় নিয়ে গেছেন। পরপর চারবার আজ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায়। এর প্রধান কারণ হলো জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি, একতা এবং সংকটে থেকেও তা মোকাবেলা করার সাহস, দৃঢ়তা ও বুদ্ধিমত্তা।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা গণতন্ত্রের কথা বলে, তাদের দলেই গণতন্ত্র নেই। নির্বাচনের পর সরকার হটানোর পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়েছে তাদের। বিএনপির বেলুন ফিউজ হয়ে গেছে। যে কারণে এক রাতেই কলমের খোঁচায় নেতাকর্মীর পদ-পদবি আলাদা হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের প্রতি তিন বছর পরপর সম্মেলন হয়। কলমের খোঁচায় কাউকে বাদ অথবা পদ দেওয়া হয় না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগকে ভাগ করেছিলেন। ভেবেছিলেন এ দলকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া যাবে, কিন্তু পারেননি তিনি। কারণ, জনগণ সঙ্গে ছিল আর হাল ধরেছেন শেখ হাসিনা। তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করার পর বঙ্গবন্ধুহীন দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বাবাহীন সংকটাপূর্ণ সংসারকে মায়ের মমতায় কর্মীদেরকে আগলে রেখেছেন তিনি। ২১ বছর ধরে আমাদের শুনতে হয়েছে আওয়ামী লীগ আর ক্ষমতায় যাবে না। তিনি পরপর চার বার দলকে ক্ষমতায় নিয়ে গেছেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, যারা আওয়ামী লীগ থেকে সরে গেছে-তারা আজ রাজনীতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছেন। ৭৫ বছরের পথ চলায় দলটি নিশ্চিহ্ন করতে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। অনেকে দল ছেড়েছেন ও বেঈমানিও করেছেন; তারা রাজনীতি থেকে হারিয়েও গেছেন। এটাই রাজনীতির শিক্ষা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা পুনরুদ্ধার হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতার দল নয়, কর্মীদের দল। অন্য দলের সঙ্গে পার্থক্য হচ্ছে অভ্যন্তরীণ চর্চা আছে। বিএনপিসহ অন্য দলের যে যোগ্যতা নেই। এটাই আওয়ামী লীগের সৌন্দর্য। শেখ হাসিনা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের আগলে রাখেন। যে কারণে সকল সংকটে তারা দলের পাশে থাকেন। যারা আওয়ামী লীগ থেকে সরেছে-তারা আজ রাজনীতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছেন। ৭৫ বছরের পথ চলায় দলটি নিশ্চিহ্ন করতে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। অনেকে দল ছেড়েছেন ও বেঈমানিও করেছেন; তারা রাজনীতি থেকে হারিয়েও গেছেন। এটাই রাজনীতির শিক্ষা।

আওয়ামী লীগের এ নেতা আরও বলেন, এবছর দুবার আমরা ভারত সফরে গিয়েছি। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। বিভিন্ন দেশের সরকার প্রতিনিধিরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। স্টেজ থেকে ঘোষণা হচ্ছিল লংগেস্ট সার্ভিস প্রোভাইডার লেডি ইন দ্য ওয়ার্ল্ড। যে কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যখন উপস্থিত হওয়া হয়, সবার আকর্ষণে থাকেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের কাছে যেমন শেখার আছে, শেখ হাসিনার কাছেও অনেকের শেখার আছে। বিশ্ব সংকটের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। টালমাটাল পৃথিবী, সেই পরিস্থিতিতেও আমরা উচ্চ প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছি। ইউরোপে পণ্যের সংকট হলেও আমাদের দেশে হয়নি। এটি তার কারণেই সম্ভব হয়েছে।

দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলোকে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আগেও দেখেছি, একটি বিশেষ মহল সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই বিশেষ মহলের সঙ্গে দুই-একটি গণমাধ্যমও যুক্ত। দেশে দুর্নীতি হলে সেটি অবশ্যই সংবাদে আসবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের সরকারের জিরো টলারেন্স রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ইচ্ছেকৃতভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে সংবাদ পরিবেশিত হলে, বুঝতে হবে এটি ষড়যন্ত্রের অংশ। তদন্তের আগে গণমাধ্যমের সামনে কাউকে দুর্নীতিবাজ বলাও সমীচীন নয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, অবশ্যই দুর্নীতির সংবাদ আসবে এবং তা দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বনে প্রয়োজন রয়েছে। কোনো নিরপরাধ মানুষ যাতে ভিকটিম (ভুক্তভোগী) না হয়। কোনো প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রয়াস হিসেবে যেন কোন সংবাদ পরিবেশন না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

তিনি বলেন, গত নির্বাচনের আগে অনেক ষড়যন্ত্র ছিল। প্রথমে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সেই ষড়যন্ত্র বানচাল হওয়ার পর ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল সরকার যেন বিশ্ব দরবারে সমাদৃত না হয়। ৮০টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট চিঠি লিখে সরকারের সঙ্গে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এরপর বিএনপির বেলুন ফিউজ হয়ে গেছে। এখন তারা অভ্যন্তরীণ সংকটে নিমজ্জিত। সে কারণে দেখা যায়, মধ্যরাতে কমিটি বাতিল, আবার ভোররাতে আরেকজনকে বহাল। এটি বিএনপির মধ্যে এখন রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে দলের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা নেই, তারা আবার গণতন্ত্রের কথা বলে কীভাবে?

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি অরূপ রতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য বলরাম পোদ্দার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোবারক আলী শিকদার প্রমুখ।