Dhaka রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

একজনও কালো টাকা সাদা করেনি : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গত এক বছরে একজনও কালো টাকা সাদা করেনি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

শুক্রবার (২ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা জানতে চান, গত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিলেও এবারের বাজেটে এ ধরনের কোনো সুযোগ কেন রাখা হয়নি। পরে এ কথা জানান মন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বলেন, গত বছরের বাজেটে বলেছিলাম, কেউ যদি অপ্রত্যাশিত টাকা দেশে নিয়ে আসে, তাহলে সেই টাকার কোনো কর দিতে হবে না। গত বাজেটে এ সুযোগটি দেওয়ার পরও এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রত্যাশিত টাকা বাংলাদেশে আসেনি। তাই এবারের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়নি।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, গত পাঁচ বছরে আমরা যে বাজেটগুলো দিয়েছি, প্রতি বছরই বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা কতটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি, তা সবসময় প্রচার করেছি। ফেল করিনি, ইনশাআল্লাহ আগামীতেও ফেল করব না। এটি আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা এখানে যারা উপস্থিত হয়েছি প্রত্যেকের দেশপ্রেম আছে। দেশপ্রেম আছে বলেই আমরা বার বার বিজয়ী হয়েছি। আমরা ফেল করি না।

তিনি বলেন, এদেশের সব কিছুর মূলে হলো মানুষ। তাদের কর্মদক্ষতা, দেশের প্রতি তাদের মায়া-মমতা, দায়বদ্ধতা অসাধারণ এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। আমার বিশ্বাস আমরা পরাজিত হবো না, বিজয়ী হবোই হবো।

প্রস্তাবিত বাজেটে দেওয়া রাজস্ব আদায় সম্ভব কি না- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সরকার যখন ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে, তখন রাজস্ব আদায় ছিল ৫৯ হাজার কোটি টাকা। এখন আমাদের রাজস্ব ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। ৫৯ হাজার কোটি টাকা থেকে যদি ৩ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছানো যায় তাহলে এখন যেটা বাড়তি বলা হচ্ছে, তা আমরা অর্জন করতে পারব।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রেসক্রিপশনে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে মর্মে বিভিন্ন মহল থেকে ওঠা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে বাজেট প্রণয়ন করিনি।

বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে সরকার আইএমএফের দেওয়া শর্তের ভিত্তিতে বাজেট প্রণয়ন করেছে— এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের প্রেসক্রিপশনে বাজেট করিনি। তাদের পরামর্শের যেটুকু গ্রহণ করা যায় সেটুকু করবো। সেখানে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আইএমএফের সঙ্গে যারা কাজ করে সেটি ভালো। তারা শুধু অর্থ দিয়ে সাহায্য করে না, অর্থনৈতিক বিভিন্ন সংস্কারে সহায়তা করে। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখারও থাকে।’

তিনি বলেন, আমরা এখন বিশ্বের সবার সঙ্গে সম্পৃক্ত। কেউ আলাদাভাবে বসবাস করার কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। আপনি যদি আমদানি করেন, তাহলেও কাউকে লাগবে, রফতানি করলেও কাউকে লাগবে।

তিনি আরো বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমরা শঙ্কিত। যেসব কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ে, তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি আমরা। প্রয়োজনে খাদ্য আমদানি করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১২ শতাংশ। আমরা মূল্যস্ফীতির এই টার্গেট অর্জন করতে পারবো। আইএমএফ থেকে যে ঋণ নিয়েছি, তা আমাদের দেড় মাসের রেমিট্যান্সের সমান।

মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমরা শঙ্কিত মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, যেসব কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ে, তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি আমরা। প্রয়োজনে খাদ্য আমদানি করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আমরা যখন দায়িত্ব নিই, তখন মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১২ শতাংশ। আমরা মূল্যস্ফীতির এই টার্গেট অর্জন করতে পারবো। আইএমএফ থেকে যে ঋণ নিয়েছি, তা আমাদের দেড় মাসের রেমিট্যান্সের সমান।

তিনি বলেন, আমাদের সব বাজেটই নির্বাচনি বাজেট। জনগণের কল্যাণের কথা বিবেচনা করেই প্রতিবছর বাজেট দিই আমরা।

এসময় কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

খাগড়াছড়িতে সেতুটির সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগ শিশু শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা

একজনও কালো টাকা সাদা করেনি : অর্থমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৬:২১:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গত এক বছরে একজনও কালো টাকা সাদা করেনি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

শুক্রবার (২ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা জানতে চান, গত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিলেও এবারের বাজেটে এ ধরনের কোনো সুযোগ কেন রাখা হয়নি। পরে এ কথা জানান মন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বলেন, গত বছরের বাজেটে বলেছিলাম, কেউ যদি অপ্রত্যাশিত টাকা দেশে নিয়ে আসে, তাহলে সেই টাকার কোনো কর দিতে হবে না। গত বাজেটে এ সুযোগটি দেওয়ার পরও এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রত্যাশিত টাকা বাংলাদেশে আসেনি। তাই এবারের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়নি।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, গত পাঁচ বছরে আমরা যে বাজেটগুলো দিয়েছি, প্রতি বছরই বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা কতটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি, তা সবসময় প্রচার করেছি। ফেল করিনি, ইনশাআল্লাহ আগামীতেও ফেল করব না। এটি আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা এখানে যারা উপস্থিত হয়েছি প্রত্যেকের দেশপ্রেম আছে। দেশপ্রেম আছে বলেই আমরা বার বার বিজয়ী হয়েছি। আমরা ফেল করি না।

তিনি বলেন, এদেশের সব কিছুর মূলে হলো মানুষ। তাদের কর্মদক্ষতা, দেশের প্রতি তাদের মায়া-মমতা, দায়বদ্ধতা অসাধারণ এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। আমার বিশ্বাস আমরা পরাজিত হবো না, বিজয়ী হবোই হবো।

প্রস্তাবিত বাজেটে দেওয়া রাজস্ব আদায় সম্ভব কি না- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সরকার যখন ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসে, তখন রাজস্ব আদায় ছিল ৫৯ হাজার কোটি টাকা। এখন আমাদের রাজস্ব ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। ৫৯ হাজার কোটি টাকা থেকে যদি ৩ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছানো যায় তাহলে এখন যেটা বাড়তি বলা হচ্ছে, তা আমরা অর্জন করতে পারব।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রেসক্রিপশনে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে মর্মে বিভিন্ন মহল থেকে ওঠা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমএফের প্রেসক্রিপশনে বাজেট প্রণয়ন করিনি।

বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে সরকার আইএমএফের দেওয়া শর্তের ভিত্তিতে বাজেট প্রণয়ন করেছে— এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের প্রেসক্রিপশনে বাজেট করিনি। তাদের পরামর্শের যেটুকু গ্রহণ করা যায় সেটুকু করবো। সেখানে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আইএমএফের সঙ্গে যারা কাজ করে সেটি ভালো। তারা শুধু অর্থ দিয়ে সাহায্য করে না, অর্থনৈতিক বিভিন্ন সংস্কারে সহায়তা করে। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখারও থাকে।’

তিনি বলেন, আমরা এখন বিশ্বের সবার সঙ্গে সম্পৃক্ত। কেউ আলাদাভাবে বসবাস করার কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। আপনি যদি আমদানি করেন, তাহলেও কাউকে লাগবে, রফতানি করলেও কাউকে লাগবে।

তিনি আরো বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমরা শঙ্কিত। যেসব কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ে, তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি আমরা। প্রয়োজনে খাদ্য আমদানি করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১২ শতাংশ। আমরা মূল্যস্ফীতির এই টার্গেট অর্জন করতে পারবো। আইএমএফ থেকে যে ঋণ নিয়েছি, তা আমাদের দেড় মাসের রেমিট্যান্সের সমান।

মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমরা শঙ্কিত মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, যেসব কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ে, তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি আমরা। প্রয়োজনে খাদ্য আমদানি করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আমরা যখন দায়িত্ব নিই, তখন মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১২ শতাংশ। আমরা মূল্যস্ফীতির এই টার্গেট অর্জন করতে পারবো। আইএমএফ থেকে যে ঋণ নিয়েছি, তা আমাদের দেড় মাসের রেমিট্যান্সের সমান।

তিনি বলেন, আমাদের সব বাজেটই নির্বাচনি বাজেট। জনগণের কল্যাণের কথা বিবেচনা করেই প্রতিবছর বাজেট দিই আমরা।

এসময় কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।