Dhaka বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মহাসড়কের ১৪ পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ, ঈদযাত্রায় দুর্ভোগের আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঈদ এলেই যানবাহনের চাপ বাড়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে। উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। মহাসড়কের দুটি লেনে দাঁড়িয়ে থাকে হাজার হাজার গাড়ি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এবারও একই দুর্ভোগে পড়তে হবে এই মহাসড়কে যাতায়াতকারীদের। এর অন্যতম কারণ গত কয়েক বছর ধরে চলছে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের চারলেনের উন্নয়নকাজ। উন্নয়নকাজের কারণে এবারও ঈদুল ফিতরে ঘরে ফেরা মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু সেতুু হয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ২২ জেলার যানবাহন চলাচল করে সিরাজগঞ্জের মহাসড়ক দিয়ে। এই মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পাড় থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত ১৪টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামী ৮ এপ্রিলের মধ্যে এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থান সংস্কার করতে ঠিকাদারকে তাগিদ দিয়েছে জেলা পুলিশ।

বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড় থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কে ৪ লেনে উন্নয়ন কাজ চলছে। মহাসড়কের দু’পাশে ড্যাম ট্রাক দিয়ে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য খানাখন্দে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আবার অনেক জায়গায় রাস্তা ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাতে পণ্যবাহী ট্রাকের চাপ বেড়ে যাওয়ায় মহাসড়কে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। কখনও ধীরগতি, কখনও থেমে থেমে, আবার কখনও ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এদিকে নবনির্মিত নলকা সেতুর উত্তরের লেন খুলে দিলেও ঢাকামুখী লেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঢাকামুখী লেন বন্ধ করে দেওয়ায় ঝুঁকিপুর্ণ পুরাতন সেতু দিয়েই চলাচল করছে যানবহন। এতে যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২০ সালে শুরু হয় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের চারলেনের সম্প্রসারণকাজ। কাজে ধীরগতির কারণে গত ঈদগুলোতেও বিড়ম্বনায় পড়েন উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরা। যানবাহনের চাপ বাড়ায় নিয়ন্ত্রণে বিপাকে পড়ে জেলা ও ট্রাফিক পুলিশ। এবারও একই পরিস্থিতির শঙ্কায় রয়েছেন চালক ও যাত্রীরা।

ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জগামী জেনিন পরিবহনের চালক কামরুল ইসলাম বলেন, এবারও ঈদযাত্রায় ভোগান্তিতে পড়তে হবে আমাদের। কারণ গত কয়েক বছর ধরে চলছে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের চারলেনের কাজ। ধীরগতির কারণে কাজ শেষ হচ্ছে না। কাজ শেষ হলে স্বস্তি মিলবে।

সাসেক-২ এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। মহাসড়কের যেসব জায়গায় খানাখন্দে রয়েছে সেগুলো জায়গায় মেরামত করে দেওয়া হবে। এবং সলঙ্গা বাজার, দাদপুর বাজার, ঘুড়কা বাজার, ভুইয়াগাাঁতী বাজার ও চান্দাইকোনা বাজার এলাকায় ১৫ রমজানের মধ্যে চার লেনের নতুন সড়ক খুলে দেওয়া হবে। সড়ক খুলে দিলে আশা করা যায়, যানজট কিছুটা কমবে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বদরুল কবির বলেন, সাসেক-২ এর কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জেলা পুলিশ এবং আমাদের দুই দফা মিটিং হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু থেকে চান্দাইকোনো পর্যন্ত ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো ১৫ রমজানের মধ্যে তারা সংস্কার করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে আমাদের ১০টা মোবাইল টিম, ১৬টি পয়েন্টে পিকেট টিম কাজ করবে। মাইকিং ও জিডিটাল সাইনবোর্ড লাগানো হবে। সবমিলিয়ে এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে আমাদের মোট ১৪৪ জন পুলিশ সদস্য কাজ করবেন।

সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খান সালেক বলেন, ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে যানজট মুক্ত রাখতে এসপি স্যারের সঙ্গে মিটিং হয়েছে। মহাসড়কে আমাদের ১৫ থেকে ১৮টা মোবাইল টিম থাকবে। তবে ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে কতজন পুলিশ সদস্য কাজ করবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুল রহমান মন্ডল বলেন, মহাসড়কে প্রায় ১৪টা ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সাসেক-২ এর কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিয়ে দুই দিন আগে আমি মিটিং করেছি। ১২ থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে তারা সেগুলো সংস্কার করে ফেলবেন।

ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে কতজন পুলিশ সদস্য কাজ করবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখনও যেহেতু সময় আছে, তাই এই বিষয়টি নিয়ে এখনও বসা হয়নি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নারায়ণগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ১০

মহাসড়কের ১৪ পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ, ঈদযাত্রায় দুর্ভোগের আশঙ্কা

প্রকাশের সময় : ১২:৫৯:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঈদ এলেই যানবাহনের চাপ বাড়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে। উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। মহাসড়কের দুটি লেনে দাঁড়িয়ে থাকে হাজার হাজার গাড়ি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এবারও একই দুর্ভোগে পড়তে হবে এই মহাসড়কে যাতায়াতকারীদের। এর অন্যতম কারণ গত কয়েক বছর ধরে চলছে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের চারলেনের উন্নয়নকাজ। উন্নয়নকাজের কারণে এবারও ঈদুল ফিতরে ঘরে ফেরা মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু সেতুু হয়ে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ২২ জেলার যানবাহন চলাচল করে সিরাজগঞ্জের মহাসড়ক দিয়ে। এই মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পাড় থেকে চান্দাইকোনা পর্যন্ত ১৪টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামী ৮ এপ্রিলের মধ্যে এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থান সংস্কার করতে ঠিকাদারকে তাগিদ দিয়েছে জেলা পুলিশ।

বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড় থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কে ৪ লেনে উন্নয়ন কাজ চলছে। মহাসড়কের দু’পাশে ড্যাম ট্রাক দিয়ে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য খানাখন্দে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আবার অনেক জায়গায় রাস্তা ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাতে পণ্যবাহী ট্রাকের চাপ বেড়ে যাওয়ায় মহাসড়কে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। কখনও ধীরগতি, কখনও থেমে থেমে, আবার কখনও ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এদিকে নবনির্মিত নলকা সেতুর উত্তরের লেন খুলে দিলেও ঢাকামুখী লেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঢাকামুখী লেন বন্ধ করে দেওয়ায় ঝুঁকিপুর্ণ পুরাতন সেতু দিয়েই চলাচল করছে যানবহন। এতে যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২০ সালে শুরু হয় রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের চারলেনের সম্প্রসারণকাজ। কাজে ধীরগতির কারণে গত ঈদগুলোতেও বিড়ম্বনায় পড়েন উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরা। যানবাহনের চাপ বাড়ায় নিয়ন্ত্রণে বিপাকে পড়ে জেলা ও ট্রাফিক পুলিশ। এবারও একই পরিস্থিতির শঙ্কায় রয়েছেন চালক ও যাত্রীরা।

ঢাকা থেকে সিরাজগঞ্জগামী জেনিন পরিবহনের চালক কামরুল ইসলাম বলেন, এবারও ঈদযাত্রায় ভোগান্তিতে পড়তে হবে আমাদের। কারণ গত কয়েক বছর ধরে চলছে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের চারলেনের কাজ। ধীরগতির কারণে কাজ শেষ হচ্ছে না। কাজ শেষ হলে স্বস্তি মিলবে।

সাসেক-২ এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। মহাসড়কের যেসব জায়গায় খানাখন্দে রয়েছে সেগুলো জায়গায় মেরামত করে দেওয়া হবে। এবং সলঙ্গা বাজার, দাদপুর বাজার, ঘুড়কা বাজার, ভুইয়াগাাঁতী বাজার ও চান্দাইকোনা বাজার এলাকায় ১৫ রমজানের মধ্যে চার লেনের নতুন সড়ক খুলে দেওয়া হবে। সড়ক খুলে দিলে আশা করা যায়, যানজট কিছুটা কমবে।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বদরুল কবির বলেন, সাসেক-২ এর কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জেলা পুলিশ এবং আমাদের দুই দফা মিটিং হয়েছে। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু থেকে চান্দাইকোনো পর্যন্ত ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো ১৫ রমজানের মধ্যে তারা সংস্কার করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে আমাদের ১০টা মোবাইল টিম, ১৬টি পয়েন্টে পিকেট টিম কাজ করবে। মাইকিং ও জিডিটাল সাইনবোর্ড লাগানো হবে। সবমিলিয়ে এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সিরাজগঞ্জের মহাসড়কে আমাদের মোট ১৪৪ জন পুলিশ সদস্য কাজ করবেন।

সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খান সালেক বলেন, ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে যানজট মুক্ত রাখতে এসপি স্যারের সঙ্গে মিটিং হয়েছে। মহাসড়কে আমাদের ১৫ থেকে ১৮টা মোবাইল টিম থাকবে। তবে ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে কতজন পুলিশ সদস্য কাজ করবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুল রহমান মন্ডল বলেন, মহাসড়কে প্রায় ১৪টা ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সাসেক-২ এর কর্মকর্তা এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিয়ে দুই দিন আগে আমি মিটিং করেছি। ১২ থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে তারা সেগুলো সংস্কার করে ফেলবেন।

ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে কতজন পুলিশ সদস্য কাজ করবেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এখনও যেহেতু সময় আছে, তাই এই বিষয়টি নিয়ে এখনও বসা হয়নি।