Dhaka শুক্রবার, ০৮ অগাস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংস্কার কোনো রাজনৈতিক দলের একক বিষয় নয় : আলী রীয়াজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সংস্কার প্রক্রিয়ায় সকলেই একত্র আছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সবাই মিলেই আমরা চেষ্টা করছি। এটি কোনো রাজনৈতিক দলের একক বিষয় নয়, কেবল মাত্র রাজনৈতিক দলের বিষয় নয়, সবার বিষয়।

তিনি বলেন, ‘জাতির আকাঙ্ক্ষা ধারণ করার জন্য আমাদের চেষ্টা। আমাদের লক্ষ্য এক, আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি। আমাদের সবার সাফল্য নির্ভর করছে, সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার মধ্যে।’

শনিবার (২৬ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, গত ১৬ বছর ধরে যখন ফ্যাসিবাদী শাসনের নিপীড়ন বাংলাদেশকে জর্জরিত করে ফেলেছিল, সে সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন, গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। বিচারিক এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার বাইরে বিচার বহির্ভূতভাবে আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) নেতাকর্মীরা নিপীড়ন, অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। তারপরও আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছেন, সেই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। সেজন্য আপনাদের অভিনন্দন। আপনাদের প্রতি আমাদের সবার সমর্থন থাকছে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রামে আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) অবদান নিঃসন্দেহে সবার স্মরণে থাকবে। দেশ এবং জাতি নতুন করে আবার পুনর্গঠিত হবে, যখনই আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করতে পারবো সেখানেও আপনাদের ভূমিকা থাকবে এটা আমরা আশা করি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময় আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) কর্মীরা সাহসিকতার সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছেন, প্রাণ দিয়েছেন। নেতারা কারাগারে আটক থেকেছেন, লড়াই সংগ্রামে উপস্থিত হয়েছেন।

রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই উদ্যোগ সরকারের উদ্যোগ নয়, এটি বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙক্ষার ফল। তারই অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজন এবং তাগিদ রাজনৈতিক দল, জনসমাজ, ছাত্র, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এসেছে। সেই প্রক্রিয়ায় আপনারা (জামায়াতে ইসলামী) আন্তরিকভাবে অংশগ্রহণ করায় আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।

রীয়াজ বলেন, এই প্রক্রিয়ার মধ্যে আমরা সবাই একত্রে আছি। সবাই মিলে আমরা এই চেষ্টাটা করছি। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের একক বিষয় নয়, এটা সবার বিষয়। জাতির আকাঙক্ষাকে ধারণ করার জন্য আমাদের চেষ্টা। আমাদের লক্ষ্য এক। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি। আমাদের সবার সাফল্য নির্ভর করছে আমাদের সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার মধ্যে।

জাতীয় সনদের বিষয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা দ্রুততার সঙ্গে একটি জাতীয় সনদে উপনীত হতে চাই। একই সঙ্গে এটাও স্মরণ করা দরকার যে, আমরা এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে আছি। আমাদের এই সুযোগ তৈরি করে দেওয়া বীর শহীদদের কাছে আমাদের ঋণ আছে। যাতে কোনো অবস্থাতেই এই সুযোগ হাতছাড়া না হয়ে যায়। যেন এ সুযোগকে কেন্দ্র করে আমরা এমন এক বাংলাদেশ তৈরি করতে পারি, যেখানে কোনো অবস্থাতেই কাউকে নিপীড়নের মুখে না পড়তে হয়, বিচার বা বিচার বহির্ভূত ব্যবস্থার মধ্যে তাকে মোকাবিলা করতে না হয়—সে লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমাদের যাত্রা।’

১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা জীবনবাজি রেখে লড়াই করেছিল মন্তব্য করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘বিচারিক এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার বাইরে বিচারবহির্ভূতভাবে আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) নেতা-কর্মীরা নিপীড়ন, অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। তারপরও আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছেন, সেই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন।’

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে জামায়াত ভূমিকা রাখবে আশা করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময় আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) কর্মীরা সাহসিকতার সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছেন, প্রাণ দিয়েছেন। নেতারা কারাগারে আটক থেকেছেন, লড়াই সংগ্রামে উপস্থিত হয়েছেন।’

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বৈরী আবহাওয়ার কারণে আগৈলঝাড়ায় ছাতার কারিগরদের ব্যাপক কদর

সংস্কার কোনো রাজনৈতিক দলের একক বিষয় নয় : আলী রীয়াজ

প্রকাশের সময় : ০৪:১৫:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সংস্কার প্রক্রিয়ায় সকলেই একত্র আছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সবাই মিলেই আমরা চেষ্টা করছি। এটি কোনো রাজনৈতিক দলের একক বিষয় নয়, কেবল মাত্র রাজনৈতিক দলের বিষয় নয়, সবার বিষয়।

তিনি বলেন, ‘জাতির আকাঙ্ক্ষা ধারণ করার জন্য আমাদের চেষ্টা। আমাদের লক্ষ্য এক, আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি। আমাদের সবার সাফল্য নির্ভর করছে, সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার মধ্যে।’

শনিবার (২৬ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, গত ১৬ বছর ধরে যখন ফ্যাসিবাদী শাসনের নিপীড়ন বাংলাদেশকে জর্জরিত করে ফেলেছিল, সে সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন, গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। বিচারিক এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার বাইরে বিচার বহির্ভূতভাবে আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) নেতাকর্মীরা নিপীড়ন, অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। তারপরও আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছেন, সেই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। সেজন্য আপনাদের অভিনন্দন। আপনাদের প্রতি আমাদের সবার সমর্থন থাকছে।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রামে আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) অবদান নিঃসন্দেহে সবার স্মরণে থাকবে। দেশ এবং জাতি নতুন করে আবার পুনর্গঠিত হবে, যখনই আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করতে পারবো সেখানেও আপনাদের ভূমিকা থাকবে এটা আমরা আশা করি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময় আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) কর্মীরা সাহসিকতার সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছেন, প্রাণ দিয়েছেন। নেতারা কারাগারে আটক থেকেছেন, লড়াই সংগ্রামে উপস্থিত হয়েছেন।

রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই উদ্যোগ সরকারের উদ্যোগ নয়, এটি বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের আকাঙক্ষার ফল। তারই অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজন এবং তাগিদ রাজনৈতিক দল, জনসমাজ, ছাত্র, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এসেছে। সেই প্রক্রিয়ায় আপনারা (জামায়াতে ইসলামী) আন্তরিকভাবে অংশগ্রহণ করায় আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।

রীয়াজ বলেন, এই প্রক্রিয়ার মধ্যে আমরা সবাই একত্রে আছি। সবাই মিলে আমরা এই চেষ্টাটা করছি। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের একক বিষয় নয়, এটা সবার বিষয়। জাতির আকাঙক্ষাকে ধারণ করার জন্য আমাদের চেষ্টা। আমাদের লক্ষ্য এক। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি। আমাদের সবার সাফল্য নির্ভর করছে আমাদের সবার আন্তরিক প্রচেষ্টার মধ্যে।

জাতীয় সনদের বিষয়ে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা দ্রুততার সঙ্গে একটি জাতীয় সনদে উপনীত হতে চাই। একই সঙ্গে এটাও স্মরণ করা দরকার যে, আমরা এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে আছি। আমাদের এই সুযোগ তৈরি করে দেওয়া বীর শহীদদের কাছে আমাদের ঋণ আছে। যাতে কোনো অবস্থাতেই এই সুযোগ হাতছাড়া না হয়ে যায়। যেন এ সুযোগকে কেন্দ্র করে আমরা এমন এক বাংলাদেশ তৈরি করতে পারি, যেখানে কোনো অবস্থাতেই কাউকে নিপীড়নের মুখে না পড়তে হয়, বিচার বা বিচার বহির্ভূত ব্যবস্থার মধ্যে তাকে মোকাবিলা করতে না হয়—সে লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমাদের যাত্রা।’

১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা জীবনবাজি রেখে লড়াই করেছিল মন্তব্য করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘বিচারিক এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার বাইরে বিচারবহির্ভূতভাবে আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) নেতা-কর্মীরা নিপীড়ন, অত্যাচারের শিকার হয়েছেন। তারপরও আপনারা সাহসিকতার সঙ্গে সঙ্গে তা মোকাবিলা করেছেন, সেই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন।’

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে জামায়াত ভূমিকা রাখবে আশা করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময় আপনাদের (জামায়াতে ইসলামী) কর্মীরা সাহসিকতার সঙ্গে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছেন, প্রাণ দিয়েছেন। নেতারা কারাগারে আটক থেকেছেন, লড়াই সংগ্রামে উপস্থিত হয়েছেন।’

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।