Dhaka মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনে সহযোগিতা করেছে চীন, রোহিঙ্গা ইস্যুতেও সহায়তা করবে: কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, এ ক্ষেত্রে চীন ভূমিকা নিতে পারে। মিয়ানমার যেন তাড়াতাড়ি রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়, এ জন্য সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভূরাজনৈতিক কৌশলে চীন ও ভারত, মিয়ানমার ইস্যুতে আলাদাভাবে কাজ করছে। এটা আমাদের ইস্যু না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মার্কিন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেও বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক আছে বলে জানিয়েছেন। তারা নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ হয়েছে এটা বলেনি। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে।

তিনি বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আমাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী, আমরাও কাজ করব। আমরা গায়ে পড়ে সম্পর্ক খারাপ করতে যাব না।

মিয়ানমার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আরাকানে যে অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ চলছে, এটা সীমান্তে চলে এসেছে। আমাদের সাথে যুদ্ধ নয়। তবে গোলাগুলির কারণে ভয়ভীতি ছড়াচ্ছে। এ ক্ষেত্রে চীনের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ইস্যুতে আলাপ হয়েছে। সেটা কী? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘চীনের সঙ্গ কথা বলতে গেলে আমাদের এখন যে বিষয়টি একটা তো চলমান ইস্যু রয়েছে, রোহিঙ্গাদের বিষয়। এ বিষয়ে চীন একটা ভূমিকা নিতে পারে। এখানে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা হয়ে গেছে ১৩ লাখের মতো। এটা আমাদের জন্য অতিরিক্ত বোঝা। এমনিতেই আমাদের বিশ্ব সংকটের কারণে আমরা সংকটে আছি। তারপরে এতোগুলো লোককে খাওয়ানো, এদের যে সাহায্যটা আসতো সেটাও আগের থেকে অনেক কমে গেছে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য এটা একটা বিরাট বোঝা। যত তাড়াতাড়ি তাদের প্রত্যাবাসন করা যায়, মিয়ানমার যত তাড়াতাড়ি তাদের নাগরিকদের সসম্মানে ফেরত নেয়- সে ব্যাপারে চীন একটা ভূমিকা রাখতে পারে। সে বিষয়ে আমি কথা বলেছি।

‘আরেকটা বিষয় হচ্ছে, বর্তমানে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত, এখন যেটা আরাকান আর্মি এটার রেশ আমাদের সীমান্ত এলাকা পর্যন্ত এসে গেছে। আমাদের সীমান্ত থেকেও গোলাগুলির আওয়াজ শোনা যায়। একটা আতঙ্ক তো আছে। আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ না, যুদ্ধ তাদের অভ্যন্তরীণ, কিন্তু আমাদের সীমান্তে এসে যখন এ যুদ্ধের গোলাগুলির আওয়াজ, তখন স্বাভাবিক কারণে একটা ভয়ভীতি আমাদের নাগরিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়টিতে তাদের হস্তক্ষেপ আশা করছি,’ যোগ করেন তিনি।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গ্রুপের মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। এই লড়াইয়ের মধ্যে আজ রবিবার দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৪ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের অস্ত্র ও গুলি বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) হেফাজতে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এগুলো নিয়ে কথা বলেছি। বলেছি যে, আরাকান আর্মির সঙ্গে তাদের যে অভ্যন্তরীণ সংঘাত, সেটার কিছু কিছু বিষয়ের প্রতিক্রিয়া আমাদের এখানেও আসে। নাইক্ষ্যংছড়ি, বালুখালির মতো এলাকায় তাদের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ফলে গোলাগুলি হয়। গোলা নিক্ষেপ করে। এসব বিষয়ের প্রতিক্রিয়া আমাদের এখানে চলে আসে। সীমান্তবর্তী দেশ তো, সেই হিসেবে।’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যে সহযোগিতা চেয়েছেন, সে বিষয়ে চীনের সাড়া কী ছিল? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইতিবাচক। চীনা রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আমরা চেষ্টা করব। আমরা চেষ্টা করছি। আপনি যখন এ বিষয়টি বললেন, ভবিষ্যতে আমরা চেষ্টা আরও জোরদার করব।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ত্রুটিপূর্ণ বলেনি দাবি তিনি বলেন, তারা বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে, দুই দেশের স্বার্থই আছে এখানে।

তিনি বলেন, নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার দুই ধরনের কথা বলেছেন। একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। এটাও বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতি অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে সম্পর্ক রাখা আমাদের দায়িত্ব। সেখান থেকে সম্পর্ক রাখি এবং সম্পর্ক রাখার অঙ্গীকার আছে এবং সেটা করে যাব। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে তারা আগেও বলেছে। তবে তারা বলেনি, নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ হয়েছে। যে মন্তব্য করলে খারাপ কিছুর আশঙ্কা থাকে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে কোনো সহিংসতা হয়নি, শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এর চেয়ে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন কী হবে আমরা তা জানি না। বিএনপি নির্বাচনে এলো না, তার মানে কি নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হলো না? আমরা গায়ে পড়ে সম্পর্ক খারাপ করব না। সম্পর্কটা থাকুক। এখানে আমেরিকারও স্বার্থ আছে, আমাদেরও আছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

উড়োজাহাজ সংকটে কুয়েত ও দুবাইগামী দুই ফ্লাইট বাতিল

নির্বাচনে সহযোগিতা করেছে চীন, রোহিঙ্গা ইস্যুতেও সহায়তা করবে: কাদের

প্রকাশের সময় : ০৫:০০:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, এ ক্ষেত্রে চীন ভূমিকা নিতে পারে। মিয়ানমার যেন তাড়াতাড়ি রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়, এ জন্য সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ভূরাজনৈতিক কৌশলে চীন ও ভারত, মিয়ানমার ইস্যুতে আলাদাভাবে কাজ করছে। এটা আমাদের ইস্যু না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, মার্কিন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেও বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক আছে বলে জানিয়েছেন। তারা নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ হয়েছে এটা বলেনি। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে।

তিনি বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) আমাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী, আমরাও কাজ করব। আমরা গায়ে পড়ে সম্পর্ক খারাপ করতে যাব না।

মিয়ানমার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আরাকানে যে অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ চলছে, এটা সীমান্তে চলে এসেছে। আমাদের সাথে যুদ্ধ নয়। তবে গোলাগুলির কারণে ভয়ভীতি ছড়াচ্ছে। এ ক্ষেত্রে চীনের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ইস্যুতে আলাপ হয়েছে। সেটা কী? জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘চীনের সঙ্গ কথা বলতে গেলে আমাদের এখন যে বিষয়টি একটা তো চলমান ইস্যু রয়েছে, রোহিঙ্গাদের বিষয়। এ বিষয়ে চীন একটা ভূমিকা নিতে পারে। এখানে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা হয়ে গেছে ১৩ লাখের মতো। এটা আমাদের জন্য অতিরিক্ত বোঝা। এমনিতেই আমাদের বিশ্ব সংকটের কারণে আমরা সংকটে আছি। তারপরে এতোগুলো লোককে খাওয়ানো, এদের যে সাহায্যটা আসতো সেটাও আগের থেকে অনেক কমে গেছে।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য এটা একটা বিরাট বোঝা। যত তাড়াতাড়ি তাদের প্রত্যাবাসন করা যায়, মিয়ানমার যত তাড়াতাড়ি তাদের নাগরিকদের সসম্মানে ফেরত নেয়- সে ব্যাপারে চীন একটা ভূমিকা রাখতে পারে। সে বিষয়ে আমি কথা বলেছি।

‘আরেকটা বিষয় হচ্ছে, বর্তমানে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত, এখন যেটা আরাকান আর্মি এটার রেশ আমাদের সীমান্ত এলাকা পর্যন্ত এসে গেছে। আমাদের সীমান্ত থেকেও গোলাগুলির আওয়াজ শোনা যায়। একটা আতঙ্ক তো আছে। আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ না, যুদ্ধ তাদের অভ্যন্তরীণ, কিন্তু আমাদের সীমান্তে এসে যখন এ যুদ্ধের গোলাগুলির আওয়াজ, তখন স্বাভাবিক কারণে একটা ভয়ভীতি আমাদের নাগরিকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়টিতে তাদের হস্তক্ষেপ আশা করছি,’ যোগ করেন তিনি।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সামরিক জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গ্রুপের মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। এই লড়াইয়ের মধ্যে আজ রবিবার দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ১৪ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের অস্ত্র ও গুলি বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) হেফাজতে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এগুলো নিয়ে কথা বলেছি। বলেছি যে, আরাকান আর্মির সঙ্গে তাদের যে অভ্যন্তরীণ সংঘাত, সেটার কিছু কিছু বিষয়ের প্রতিক্রিয়া আমাদের এখানেও আসে। নাইক্ষ্যংছড়ি, বালুখালির মতো এলাকায় তাদের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ফলে গোলাগুলি হয়। গোলা নিক্ষেপ করে। এসব বিষয়ের প্রতিক্রিয়া আমাদের এখানে চলে আসে। সীমান্তবর্তী দেশ তো, সেই হিসেবে।’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যে সহযোগিতা চেয়েছেন, সে বিষয়ে চীনের সাড়া কী ছিল? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইতিবাচক। চীনা রাষ্ট্রদূত বলেছেন, আমরা চেষ্টা করব। আমরা চেষ্টা করছি। আপনি যখন এ বিষয়টি বললেন, ভবিষ্যতে আমরা চেষ্টা আরও জোরদার করব।’

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ত্রুটিপূর্ণ বলেনি দাবি তিনি বলেন, তারা বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে, দুই দেশের স্বার্থই আছে এখানে।

তিনি বলেন, নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার দুই ধরনের কথা বলেছেন। একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। এটাও বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতি অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে সম্পর্ক রাখা আমাদের দায়িত্ব। সেখান থেকে সম্পর্ক রাখি এবং সম্পর্ক রাখার অঙ্গীকার আছে এবং সেটা করে যাব। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে তারা আগেও বলেছে। তবে তারা বলেনি, নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ হয়েছে। যে মন্তব্য করলে খারাপ কিছুর আশঙ্কা থাকে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে কোনো সহিংসতা হয়নি, শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এর চেয়ে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন কী হবে আমরা তা জানি না। বিএনপি নির্বাচনে এলো না, তার মানে কি নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হলো না? আমরা গায়ে পড়ে সম্পর্ক খারাপ করব না। সম্পর্কটা থাকুক। এখানে আমেরিকারও স্বার্থ আছে, আমাদেরও আছে।