Dhaka মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দুই সংসদ সদস্যের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া এবং সাবেক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম শাহজাহান কামাল ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মাত্র ১৭ মিনিটের ব্যবধানে এই দুই সংসদ সদস্য মারা গেছেন।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টা ২ মিনিটে উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া এবং ৩টা ১৯ মিনিটে একেএম শাহজাহান কামাল মারা গেছেন।

আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার একমাত্র ছেলে মাইনুল হাসান তুষার তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বাবা দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে এক সপ্তাহ আগে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল। শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টা ২ মিনিটে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান।

অন্যদিকে শাহজাহান কামালের ছোট ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তিনি বলেন, বার্ধক্যজনিত রোগে আমার বড় ভাই শাহজাহান কামাল মারা গেছেন। বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় প্রথম ও লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাদ আসর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

আব্দুল সাত্তার ভূঞা ১৯৩৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ ভূঞা ও রহিমা খাতুনের সংসারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে আইনজীবী পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি পদে ছিলেন দীর্ঘদিন।

১৯৭৯ সালে প্রথম তৎকালীন কুমিল্লা-১ (নাসিরনগর ও সরাইলের একাংশ) বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসন থেকে ১৯৯১ সালে, ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনসহ দুটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সবশেষ ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হন।

গত বছরের ১১ ডিসেম্বর বিএনপির আন্দোলনের অংশ হিসেবে দলটির সাত সংসদ সদস্য দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদত্যাগ করেন। তার মধ্যে উকিল আবদুস সাত্তারও ছিলেন। পরে তিনি একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন। এতে দল থেকে আবদুস সাত্তারকে বহিষ্কার করে বিএনপি। ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আবদুস সাত্তার ৪৪ হাজার ৯১৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন।

এদিকে প্রবীণ নেতা শাহজাহান কামালের মৃত্যুতে লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও সদরের একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

শাহজাহান কামাল ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নোয়াখালী-১১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ ও ১৮ সালের তিনি লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ২০১৮ সালে প্রায় এক বছর তিনি বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

শাহজাহান কামাল লক্ষ্মীপুর পৌরসভার আটিয়াতলি এলাকার ফরিদ আহমেদ ও মাছুমা খাতুন দম্পতির বড় ছেলে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও ৩ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

দলীয় সূত্র জানায়, শাহজাহান কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ১৯৬৬ সালের ৬ দফা ও ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন। ১৯৭২ সালে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আবহাওয়া

সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি তরুণীর পা বিচ্ছিন্ন

কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দুই সংসদ সদস্যের মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ১২:৪৭:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সাবেক ভূমি প্রতিমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া এবং সাবেক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম শাহজাহান কামাল ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মাত্র ১৭ মিনিটের ব্যবধানে এই দুই সংসদ সদস্য মারা গেছেন।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টা ২ মিনিটে উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া এবং ৩টা ১৯ মিনিটে একেএম শাহজাহান কামাল মারা গেছেন।

আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার একমাত্র ছেলে মাইনুল হাসান তুষার তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বাবা দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে এক সপ্তাহ আগে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল। শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টা ২ মিনিটে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান।

অন্যদিকে শাহজাহান কামালের ছোট ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।

তিনি বলেন, বার্ধক্যজনিত রোগে আমার বড় ভাই শাহজাহান কামাল মারা গেছেন। বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় প্রথম ও লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাদ আসর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

আব্দুল সাত্তার ভূঞা ১৯৩৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের আব্দুল হামিদ ভূঞা ও রহিমা খাতুনের সংসারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে আইনজীবী পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি পদে ছিলেন দীর্ঘদিন।

১৯৭৯ সালে প্রথম তৎকালীন কুমিল্লা-১ (নাসিরনগর ও সরাইলের একাংশ) বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসন থেকে ১৯৯১ সালে, ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনসহ দুটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সবশেষ ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হন।

গত বছরের ১১ ডিসেম্বর বিএনপির আন্দোলনের অংশ হিসেবে দলটির সাত সংসদ সদস্য দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদত্যাগ করেন। তার মধ্যে উকিল আবদুস সাত্তারও ছিলেন। পরে তিনি একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন। এতে দল থেকে আবদুস সাত্তারকে বহিষ্কার করে বিএনপি। ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আবদুস সাত্তার ৪৪ হাজার ৯১৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন।

এদিকে প্রবীণ নেতা শাহজাহান কামালের মৃত্যুতে লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও সদরের একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহজাহান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

শাহজাহান কামাল ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নোয়াখালী-১১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ ও ১৮ সালের তিনি লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর মধ্যে ২০১৮ সালে প্রায় এক বছর তিনি বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

শাহজাহান কামাল লক্ষ্মীপুর পৌরসভার আটিয়াতলি এলাকার ফরিদ আহমেদ ও মাছুমা খাতুন দম্পতির বড় ছেলে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও ৩ মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

দলীয় সূত্র জানায়, শাহজাহান কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ১৯৬৬ সালের ৬ দফা ও ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন। ১৯৭২ সালে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।