নিজস্ব প্রতিবেদক :
র্যানসমওয়্যারের আক্রমণের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ বিমানের ই-মেইল সার্ভার। বাংলাদেশ বিমানের ই-মেইল সার্ভার শুক্রবার (১৭ মার্চ) র্যানসমওয়্যারে আক্রান্ত হলেও এখনো তা পুনরুদ্ধার করতে পারেনি সংস্থাটি।
এ মুহূর্তে বিমানের কর্মকর্তাদের সব ই-মেইলে প্রবেশ করতে পারছে র্যানসমওয়্যার। এসব ই-মেইলের মধ্যে উড়োজাহাজ, রুট, ক্রু, পাইলট, বিমানবন্দর, সময়সূচি, যাত্রী, ক্রয় ও বিলিং সম্পর্তিত নানা সংবেদনশীল তথ্য রয়েছে।
কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে ও বিভিন্ন বিমানবন্দরের সঙ্গে ই-মেইলে যোগাযোগ করতে পারছেন না। এখন পর্যন্ত বিষয়টির কোনো সমাধান করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন বিমানের কর্মকর্তারা। তবে টিকিট বিক্রি, সংরক্ষণ ও চেকিং বিষয়ক কার্যক্রম নিরাপদ রয়েছে ও চালু রয়েছে।
সংগঠনের প্রকৃতি বিবেচনা করে বাংলাদেশ বিমানকে গত বছরের অক্টোবরে একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুসারে, এই পরিকাঠামোগুলো এমন সব তথ্য-উপাত্ত বা ইলেকট্রনিক তথ্য নিয়ন্ত্রণ, প্রক্রিয়াজাত, প্রচার বা সংরক্ষণ করে, যেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত বা জটিলভাবে আক্রান্ত হলে জননিরাপত্তা, আর্থিক নিরাপত্তা, জনস্বাস্থ্য, জাতীয় নিরাপত্তা বা জাতীয় সার্বভৌমত্বকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
র্যানসমওয়্যার এক ধরনের ম্যালওয়ার বা ক্ষতিকর কম্পিউটার প্রোগ্রাম, যা কাজে লাগিয়ে সাইবার অপরাধীরা কম্পিউটার বা মুঠোফোনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ‘মুক্তিপণ’ দাবি করে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে মুক্তিপণ হিসেবে অর্থ প্রদানের আগে পর্যন্ত ব্যবহারকারীকে তার ডিভাইসে প্রবেশের সুযোগ বন্ধ করে রাখে। এই মুক্তিপণের পরিমাণ কয়েক হাজার থেকে কয়েক লাখ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
বিমানের অপারেশনস বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ম্যালওয়্যারটি মেইল সার্ভারকে এনক্রিপ্ট করেছে। এর জন্য বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে বিমানের আউটস্টেশনের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি।
তবে বিমানের ই-মেইল সার্ভারে যা ঘটেছে, তা হ্যাকিং নয় বলে দাবি করেছেন শফিউল আজিম। বিমানের ই-মেইল সার্ভার থেকে কোনো তথ্য বা উপাত্ত চুরি হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমাদের আইটি টিম সিস্টেম পুনরুদ্ধারে কাজ শুরু করে এবং ইতোমধ্যে আমাদের ই-মেইল সার্ভারের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যাচ্ছে। ‘ এ ধরনের পরিকাঠামো হ্যাক করার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
উল্লেখ্য, র্যানসমওয়্যার এক ধরনের ম্যালওয়ার, যা কোনো কম্পিউটারের তথ্যে প্রবেশ করে এবং সেটা প্রকাশ করে দেওয়ার হুমকি দেয়। অথবা মুক্তিপণ হিসেবে অর্থ প্রদানের আগে পর্যন্ত ব্যবহারকারীকে তার ডিভাইসে প্রবেশের সুযোগ বন্ধ করে রাখে। এই র্যানসমের (মুক্তিপণ) পরিমাণ কয়েক হাজার থেকে কয়েক লাখ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।