Dhaka বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঠাকুরগাঁওয়ের রামদাড়া নদীর পুরোনো সেতু ঝুঁকিপূর্ণ, আতঙ্কে হাজারো মানুষ

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব বেগুনবাড়ি নতুনপাড়া গ্রামের রামদাড়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি এখন আতঙ্কের নাম। চার দশকের পুরোনো এই সেতুটি নড়বড়ে হয়ে পড়ায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন হাজারো মানুষ। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৮০ সালের দিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে সেতুটি নির্মাণ হয়। তখন এটি মূলত হাঁটার পথ হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে যানবাহন চলাচল করায় সেতুর কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে, পলেস্তারাও খসে পড়ছে। এখন বড় কোনো গাড়ি উঠলেই থরথর করে কেঁপে ওঠে ব্রিজ।

কৃষিপ্রধান এ এলাকায় ভোগান্তি আরও বেশি। ভারী যান চলাচল বন্ধ থাকায় আশপাশের গ্রামের কৃষকদের ধান, ভুট্টা, সরষে, পাটসহ উৎপাদিত ফসল রিকশা-ভ্যানে করে বাজারে নিতে হচ্ছে। এতে সময় ও খরচ দুটোই বাড়ছে।

সেতুর পূর্ব পাশে রয়েছে দুটি বিদ্যালয়। প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে পার হয় শিক্ষার্থীরা। ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী হামিম, রাইসুল ও জমিরুল বলেন, আমরা প্রতিদিন মনে করি সেতুটি ভেঙে নদীতে পড়ে যাব। এখানে নতুন ব্রিজ খুব দরকার।

স্থানীয় কৃষক রমজান আলী বলেন, আমাদের ফসল এখানে থেকে হাট-বাজারে পৌঁছানোই দারুণ ঝুঁকির কাজ। এখন গাড়ি বোঝাই মালপত্র নিয়ে সেতুতে উঠতে ভয় লাগে। ধান কাটার আধুনিক যন্ত্র হারভেস্টার মেশিন এই সেতু দিয়ে পারাপার করা যায় না তাই নদীর তলদেশ দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। এতে প্রতিদিন সময় ও শ্রম অনেক বেশি লাগে।

আরেক কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, সেতুটি ভেঙে গেলে আমাদের ফসলও নদীতে পড়তে পারে। আগে ছোট ছোট গাড়ি পার হতো, এখন বড় কোনো গাড়ি উঠলে সেতু কেঁপে ওঠে। নতুন একটি ব্রিজ দ্রুত নির্মাণ করা না হলে আমাদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।

নতুন পাড়া এলাকার বাসিন্দা সাদ্দাম বলেন, সেতুর অবস্থা ভয়াবহ। বড় গাড়ি উঠলে মনে হয়, এখনই ভেঙে পড়বে। দ্রুত নতুন একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

ভ্যানচালক আরিফ বলেন, একই সময়ে দুটি ভ্যান চলাচল করা সম্ভব নয়। একটি ভ্যান উঠলে অন্য ভ্যানকে নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

তবে এলজিইডির সদর উপজেলা প্রকৌশলী মাবুদ হোসেন বলেন, সেতুটি হাঁটার জন্য নির্মিত হয়েছিল। এখন এটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। বিশেষ করে স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এই ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করেন। তারাও মনে ভয় নিয়ে পার হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জাকসু নির্বাচনের দায়িত্ব ছাড়লেন বিএনপিপন্থি ৩ শিক্ষক

ঠাকুরগাঁওয়ের রামদাড়া নদীর পুরোনো সেতু ঝুঁকিপূর্ণ, আতঙ্কে হাজারো মানুষ

প্রকাশের সময় : ০২:০১:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব বেগুনবাড়ি নতুনপাড়া গ্রামের রামদাড়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি এখন আতঙ্কের নাম। চার দশকের পুরোনো এই সেতুটি নড়বড়ে হয়ে পড়ায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন হাজারো মানুষ। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৮০ সালের দিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে সেতুটি নির্মাণ হয়। তখন এটি মূলত হাঁটার পথ হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে যানবাহন চলাচল করায় সেতুর কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে, পলেস্তারাও খসে পড়ছে। এখন বড় কোনো গাড়ি উঠলেই থরথর করে কেঁপে ওঠে ব্রিজ।

কৃষিপ্রধান এ এলাকায় ভোগান্তি আরও বেশি। ভারী যান চলাচল বন্ধ থাকায় আশপাশের গ্রামের কৃষকদের ধান, ভুট্টা, সরষে, পাটসহ উৎপাদিত ফসল রিকশা-ভ্যানে করে বাজারে নিতে হচ্ছে। এতে সময় ও খরচ দুটোই বাড়ছে।

সেতুর পূর্ব পাশে রয়েছে দুটি বিদ্যালয়। প্রতিদিন ভয়ে ভয়ে পার হয় শিক্ষার্থীরা। ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী হামিম, রাইসুল ও জমিরুল বলেন, আমরা প্রতিদিন মনে করি সেতুটি ভেঙে নদীতে পড়ে যাব। এখানে নতুন ব্রিজ খুব দরকার।

স্থানীয় কৃষক রমজান আলী বলেন, আমাদের ফসল এখানে থেকে হাট-বাজারে পৌঁছানোই দারুণ ঝুঁকির কাজ। এখন গাড়ি বোঝাই মালপত্র নিয়ে সেতুতে উঠতে ভয় লাগে। ধান কাটার আধুনিক যন্ত্র হারভেস্টার মেশিন এই সেতু দিয়ে পারাপার করা যায় না তাই নদীর তলদেশ দিয়ে নিয়ে যেতে হয়। এতে প্রতিদিন সময় ও শ্রম অনেক বেশি লাগে।

আরেক কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, সেতুটি ভেঙে গেলে আমাদের ফসলও নদীতে পড়তে পারে। আগে ছোট ছোট গাড়ি পার হতো, এখন বড় কোনো গাড়ি উঠলে সেতু কেঁপে ওঠে। নতুন একটি ব্রিজ দ্রুত নির্মাণ করা না হলে আমাদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।

নতুন পাড়া এলাকার বাসিন্দা সাদ্দাম বলেন, সেতুর অবস্থা ভয়াবহ। বড় গাড়ি উঠলে মনে হয়, এখনই ভেঙে পড়বে। দ্রুত নতুন একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

ভ্যানচালক আরিফ বলেন, একই সময়ে দুটি ভ্যান চলাচল করা সম্ভব নয়। একটি ভ্যান উঠলে অন্য ভ্যানকে নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

তবে এলজিইডির সদর উপজেলা প্রকৌশলী মাবুদ হোসেন বলেন, সেতুটি হাঁটার জন্য নির্মিত হয়েছিল। এখন এটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। বিশেষ করে স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এই ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করেন। তারাও মনে ভয় নিয়ে পার হয়।