Dhaka মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হত্যা মামলায় তৌহিদ আফ্রিদি ৫ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলায় কন্টেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (২৫ আগস্ট) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিন দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়। এসময় তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ৭ রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানির সময় তাকে এজলাসে তোলা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ তার সর্বোচ্চ সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর চেয়ে শুনানি করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আফ্রিদিকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনে বলা হয়েছে, স্বৈরাচারীর পক্ষ নিয়ে ‘কনটেন্ট ক্রিয়েটর’ তৌহিদ আফ্রিদি সেলিব্রেটি ও অন্যান্য কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের দিয়ে আন্দোলন বন্ধের জন্য প্ররোচিত করেন। যারা দ্বিমত পোষণ করেছে তাদের বিভিন্ন হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। মামলার তদন্তকালে উঠে এসেছে এজাহারনামীয় আসামি তৌহিদ আফ্রিদি ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশ ও বিদেশে একজন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও মাই টিভির পরিচালক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিগত পতিত সরকারের বিশেষ সুবিধা প্রাপ্ত ও আজ্ঞাবহ হয়ে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এক্ষেত্রে সরাসরি একজন মিডিয়া সন্ত্রাসী ও প্রভাবশালী কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে এবং ওই টিভি চ্যানেলের পরিচালক হয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলেনের বিপক্ষে লাইভ প্রচার করে উস্কানিমূলক বক্তব্য ও প্রচার কার্যক্রম চালিয়ে ছাত্র জনতার দাবিকে উপেক্ষা করে আন্দোলন বিরোধীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ যোগায়।

আবেদনে আরো বলা হয়েছে, আফ্রিদিরএমন উস্কানিমূলক কার্যক্রমে অনুপ্রাণিত হয়ে স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসী, রাজনৈতিক নেতা, কর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে আসাদুল হক বাবু মারা যান বলে তদন্তে প্রকাশ পায়। তদন্তে এসেছে, মামলার এজাহারনামীয় তৌহিদ আফ্রিদি মাই টিভির ডিরেক্টর হিসেবে মহান সাংবাদিকতার পেশায় গুরুত্বপূর্ন পদে নিয়োজিত ও দায়িত্বে থেকে হলুদ সাংবাদিকতার মাধ্যমে তরুল সমাজের মাঝে থাকা তার অনৈতিক প্রভাব ও প্রতিপত্তিতে দলীয় ও ব্যক্তিগত হীনস্বার্থে তদানীন্তন আওয়ামী সরকাররে আজ্ঞাবহ হয়ে বিরোধী দলমতকে প্রত্যাখান করে উদ্দেশ্যমূলক হিংসাত্মক এহেন কার্যক্রম সংঘঠিত করায় মামলার প্রকৃত ঘটনা, অজ্ঞাতনামা আসামিদের পরিচয় সনাক্তকরণ ও রহস্য উদঘাটনের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন।

এর আগে রোববার (২৪ আগস্ট) রাতে বরিশাল থেকে তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি পুলিশ।

এদিকে এ মামলায় গত ১৭ আগস্ট রাজধানীর গুলশান থেকে তৌহিদ আফ্রিদির বাবা বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাকে এ মামলায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে গত ২৩ আগস্ট নাসিরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানাধীন পাকা রাস্তার ওপর আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মো. আসাদুল হক বাবু। এ ঘটনায় নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।

এ মামলায় নাসির উদ্দিন ২২ নম্বর ও তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংসদ নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি হলে ব্যবস্থা নেবে দুদক : দুদক চেয়ারম্যান

হত্যা মামলায় তৌহিদ আফ্রিদি ৫ দিনের রিমান্ডে

প্রকাশের সময় : ০৪:০৩:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলায় কন্টেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (২৫ আগস্ট) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিন দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হয়। এসময় তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক খান মো. এরফান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে ৭ রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। শুনানির সময় তাকে এজলাসে তোলা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ তার সর্বোচ্চ সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর চেয়ে শুনানি করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আফ্রিদিকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনে বলা হয়েছে, স্বৈরাচারীর পক্ষ নিয়ে ‘কনটেন্ট ক্রিয়েটর’ তৌহিদ আফ্রিদি সেলিব্রেটি ও অন্যান্য কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের দিয়ে আন্দোলন বন্ধের জন্য প্ররোচিত করেন। যারা দ্বিমত পোষণ করেছে তাদের বিভিন্ন হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। মামলার তদন্তকালে উঠে এসেছে এজাহারনামীয় আসামি তৌহিদ আফ্রিদি ইউটিউব ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশ ও বিদেশে একজন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও মাই টিভির পরিচালক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিগত পতিত সরকারের বিশেষ সুবিধা প্রাপ্ত ও আজ্ঞাবহ হয়ে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এক্ষেত্রে সরাসরি একজন মিডিয়া সন্ত্রাসী ও প্রভাবশালী কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে এবং ওই টিভি চ্যানেলের পরিচালক হয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলেনের বিপক্ষে লাইভ প্রচার করে উস্কানিমূলক বক্তব্য ও প্রচার কার্যক্রম চালিয়ে ছাত্র জনতার দাবিকে উপেক্ষা করে আন্দোলন বিরোধীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ যোগায়।

আবেদনে আরো বলা হয়েছে, আফ্রিদিরএমন উস্কানিমূলক কার্যক্রমে অনুপ্রাণিত হয়ে স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসী, রাজনৈতিক নেতা, কর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে আসাদুল হক বাবু মারা যান বলে তদন্তে প্রকাশ পায়। তদন্তে এসেছে, মামলার এজাহারনামীয় তৌহিদ আফ্রিদি মাই টিভির ডিরেক্টর হিসেবে মহান সাংবাদিকতার পেশায় গুরুত্বপূর্ন পদে নিয়োজিত ও দায়িত্বে থেকে হলুদ সাংবাদিকতার মাধ্যমে তরুল সমাজের মাঝে থাকা তার অনৈতিক প্রভাব ও প্রতিপত্তিতে দলীয় ও ব্যক্তিগত হীনস্বার্থে তদানীন্তন আওয়ামী সরকাররে আজ্ঞাবহ হয়ে বিরোধী দলমতকে প্রত্যাখান করে উদ্দেশ্যমূলক হিংসাত্মক এহেন কার্যক্রম সংঘঠিত করায় মামলার প্রকৃত ঘটনা, অজ্ঞাতনামা আসামিদের পরিচয় সনাক্তকরণ ও রহস্য উদঘাটনের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন।

এর আগে রোববার (২৪ আগস্ট) রাতে বরিশাল থেকে তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি পুলিশ।

এদিকে এ মামলায় গত ১৭ আগস্ট রাজধানীর গুলশান থেকে তৌহিদ আফ্রিদির বাবা বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাকে এ মামলায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে গত ২৩ আগস্ট নাসিরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানাধীন পাকা রাস্তার ওপর আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মো. আসাদুল হক বাবু। এ ঘটনায় নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন।

এ মামলায় নাসির উদ্দিন ২২ নম্বর ও তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।