Dhaka বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জিম্মিদের ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনি বন্দিদের ছাড়লো না ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইসরায়েলের আরো ছয়জন জিম্মিকে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। বিনিময়ে এ দিনই ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরায়েলের। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে ইসরায়েলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে না।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করা এবং অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের নিন্দনীয়ভাবে ব্যবহার করাসহ হামাসের বারবার (যুদ্ধবিরতির চুক্তি) লঙ্ঘনের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পরবর্তী ধাপে অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) যেসব সন্ত্রাসীদের (ফিলিস্তিনি) মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাঁদের ছাড়া হবে না।

ইসরায়েলের সঙ্গে সপ্তম দফায় জিম্মি বিনিময়ের জন্য জড়ো হয়েছেন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সদস্যরা। সেখানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে এসেছে শিশুরাও। শনিবার মধ্য গাজার নুসরেইত শরণার্থীশিবিরে।

দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর পর থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাঁদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে। ওই অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে জিম্মিদের মুখোশ পরা হামাস যোদ্ধারা একটি মঞ্চে নিয়ে যান। এ সময় সেখানে উপস্থিত গাজাবাসীর উদ্দেশে জিম্মিদের হাত নাড়াতে এবং ভাষণ দিতে দেখা যায়।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) আগে বৃহস্পতিবার চার ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করে হামাস। তবে ওই দিন শিরি বিবাসের দেহাবশেষের জায়গায় ভুল করে অন্য কারও দেহাবশেষ হস্তান্তর করা হয়েছিল। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় ইসরায়েল। অবশ্য পরদিন শিরি বিবাসের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মরদেহটি শিরি বিবাসের বলে নিশ্চিত করেছে তাঁর পরিবার।

দিকে শর্ত মানলে এক ধাপে বাকি সব ইসরায়েলি জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দিতে হামাস প্রস্তুত রয়েছে বলে সংগঠনটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন। পাশাপাশি যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময়ের সব ধাপ বাস্তবায়নে হামাসের আন্তরিকতার বিষয়টিও পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।

চলমান যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ ৪২ দিনের। এই সময়ে মোট ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। তারপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ শুরুর কথা রয়েছে। তবে বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতিতে যেতে আগ্রহী নন নেতানিয়াহু। বেশির ভাগ জীবিত জিম্মি মুক্তি পাওয়ায় গাজায় আবারও যুদ্ধ শুরু করতে সরকারের উগ্রপন্থী শরিকেরা তাঁর ওপর চাপ দিচ্ছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জিম্মিদের ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনি বন্দিদের ছাড়লো না ইসরায়েল

প্রকাশের সময় : ১২:৩৮:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইসরায়েলের আরো ছয়জন জিম্মিকে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। বিনিময়ে এ দিনই ছয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ইসরায়েলের। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে ইসরায়েলের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে না।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, অপমানজনক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের জিম্মিদের অসম্মান করা এবং অপপ্রচারের জন্য জিম্মিদের নিন্দনীয়ভাবে ব্যবহার করাসহ হামাসের বারবার (যুদ্ধবিরতির চুক্তি) লঙ্ঘনের জেরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পরবর্তী ধাপে অপমানজনক অনুষ্ঠান ছাড়া জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) যেসব সন্ত্রাসীদের (ফিলিস্তিনি) মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তাঁদের ছাড়া হবে না।

ইসরায়েলের সঙ্গে সপ্তম দফায় জিম্মি বিনিময়ের জন্য জড়ো হয়েছেন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সদস্যরা। সেখানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে এসেছে শিশুরাও। শনিবার মধ্য গাজার নুসরেইত শরণার্থীশিবিরে।

দীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর পর থেকে যুদ্ধবিরতির চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তাঁদের মুক্তির সময় বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে। ওই অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে জিম্মিদের মুখোশ পরা হামাস যোদ্ধারা একটি মঞ্চে নিয়ে যান। এ সময় সেখানে উপস্থিত গাজাবাসীর উদ্দেশে জিম্মিদের হাত নাড়াতে এবং ভাষণ দিতে দেখা যায়।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) আগে বৃহস্পতিবার চার ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করে হামাস। তবে ওই দিন শিরি বিবাসের দেহাবশেষের জায়গায় ভুল করে অন্য কারও দেহাবশেষ হস্তান্তর করা হয়েছিল। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় ইসরায়েল। অবশ্য পরদিন শিরি বিবাসের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। ফরেনসিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মরদেহটি শিরি বিবাসের বলে নিশ্চিত করেছে তাঁর পরিবার।

দিকে শর্ত মানলে এক ধাপে বাকি সব ইসরায়েলি জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দিতে হামাস প্রস্তুত রয়েছে বলে সংগঠনটির এক মুখপাত্র জানিয়েছেন। পাশাপাশি যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময়ের সব ধাপ বাস্তবায়নে হামাসের আন্তরিকতার বিষয়টিও পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।

চলমান যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ ৪২ দিনের। এই সময়ে মোট ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। তারপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ শুরুর কথা রয়েছে। তবে বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতিতে যেতে আগ্রহী নন নেতানিয়াহু। বেশির ভাগ জীবিত জিম্মি মুক্তি পাওয়ায় গাজায় আবারও যুদ্ধ শুরু করতে সরকারের উগ্রপন্থী শরিকেরা তাঁর ওপর চাপ দিচ্ছে।