মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রীবাহী বাসসহ বেশ কয়েকটি যানবাহনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) ভোর থেকে সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে মহাসড়কের শিকারপুর আন্ডারপাস, নিমতলা, হাঁসাড়া ও চালতিপাড়া এলাকায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে। এতে সাতটি বাস ও একটি প্রাইভেটকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির নাম মো. ফরহাদ হোসেন (৪০)। তিনি ফরিদপুরের ভাঙা এলাকার বাসিন্দা। তিনি একটি বাসের চালক ছিলেন। আহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় জানা গেছে। তাঁর নাম জাকির হোসেন (৩২)। নোয়াখালীর এই বাসিন্দা বাসচালকের সহকারী।
উদ্ধারকাজে নিয়োজিত ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, ঘন কুয়াশার কারণে পথ পরিষ্কার দেখতে না পাওয়ায় এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোর থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে প্রচণ্ড কুয়াশা ছিল। সামান্য দূরের কিছুও দেখা যাচ্ছিল না। এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর থেকে হাসাড়া পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার সড়কে মাওয়ামুখী লেনে কয়েকটি যানবাহন একটির পেছনে আরেকটি ধাক্কা দেয়। তাতে বেশ কয়েকজন আহত হন। সড়কেও গাড়ির জটলা তৈরি হলে বিষয়টি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়।
শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা দেওয়ান আজাদ বলেন, শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর থেকে হাসাড়া এলাকার চার-পাঁচ কিলোমিটার জায়গা। এখানে চারটি স্থানে সাকুরা পরিবহনসহ কয়েকটি বড় পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার, পিকআপ ভ্যান, কাভার্ডভ্যানসহ ১০টি গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। কোথাও সড়ক বিভাজকের সঙ্গে ধাক্কা লেগেছে। কোথাও একটি গাড়ি আরেকটির পেছনে ধাক্কা দেয়।
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, সবগুলো ঘটনাই ঘটেছে ঘন কুয়াশার কারণে। এসব ঘটনায় ১০-১৫ জন আহত হয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনার কারণে সকাল ১০টা পর্যন্ত মাওয়া টোল প্লাজা থেকে ষোলঘর পর্যন্ত সাত-আট কিলোমিটারে যানজট ছড়িয়ে পড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধারকাজ করছেন।
শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মারজিয়া মাহবুব বলেন, আহত অবস্থায় ফরহাদ হোসেন ও জাকির হোসেন নামের দুজনকে হাসপাতালে আনা হয়। জাকিরের রক্তক্ষরণ হলেও অবস্থা কিছুটা ভালো ছিল। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়। এ সময় ফরহাদ বলেছিলেন, তাঁর কোমরে ব্যথা হচ্ছে। এক্স-রে করে তাঁকেও ঢাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। তবে এক্স-রে করার আগেই ফরহাদ মারা যান। লাশ বর্তমানে হাসপাতালে আছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, সকালে চারটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাতে ১০-১৫ জনের মতো আহত এবং একজন নিহত হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। তবে এখন ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।