নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ পথ হারাবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (২০ মে) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত জাতীয় ওলামা লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছেন। আমরা এখন একটি সংকটের মধ্যে আছি। যেটা আমাদের সৃষ্টি নয়। করোনা মহামারি সামলানোর পর যুদ্ধ শুরু হয়। ফলে জ্বালানি ও ডলারের দাম বেড়ে যায়। বেড়ে যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও। অনেক পণ্যই বাইরে থেকে আমদানি করে আনতে হয়। কিছু পণ্য আনা কমিয়ে দিলে মানুষের কষ্ট বাড়বে। আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। কিন্তু জ্বালানি সংকটে পুরোপুরিভাবে সে চাহিদা মেটাতে পারছি না।
মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার মতো নেত্রী আছে বলেই পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ ভালো আছে। অথচ একটি দল তাকে নিয়ে অপপ্রচার করে। অথচ সারা দুনিয়া তাকে নিয়ে প্রশংসা করে। তিনি থাকলে দেশ পথ হারাবে না।
তিনি বলেন, করোনা সামলানোর পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। ফলে জ্বালানি ও ডলারের পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও বেড়ে যায়। আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিলেও জ্বালানি সংকটে পুরোপুরিভাবে সে চাহিদা মেটাতে পারছি না।
বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এতো সভা-সমাবেশ, দফা, মানববন্ধন করে লাভ কী হলো? আপনারা দীর্ঘদিন ধরে বলছেন সরকারের সময় শেষ। সেই শেষ সময়টা কবে? বিএনপি আছে সরকার পতনের আন্দোলন নিয়ে। আর আমরা আছি জানমাল রক্ষার আন্দোলন নিয়ে।
কাদের বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের শিকড় অনেক গভীরে। ক্ষমতায় কে থাকবে, সেটা দেশের জনগণ নির্ধারণ করবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ডেকে নিয়ে আমাদের ঋণ দিয়েছে। সংস্থার প্রধান বলেছেন, বাংলাদেশের সামর্থ্য আছে বলেই ঋণ দিয়েছি। বাংলাদেশ কখনো ঋণখেলাপি হয়নি, এটাই সত্য। ঋণ নিয়ে সময়মতো পরিশোধ করেছি।
মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী ওলামা লীগের একটি ইচ্ছা ছিলে যে সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠিত হবে। তার জন্য সময় লেগেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আজ তা সম্ভব হয়েছে। যেহেতু এটি প্রথম সম্মেলন, তাই কতজনকে নিয়ে কমিটি হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। আমি ১০১ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিচ্ছি। যাতে ত্যাগী ও সিনিয়র নেতারা স্থান পাবেন।
তিনি বলেন, কমিটিতে যেন বাস্তবতার ও রাজনৈতিক আদর্শের প্রতিফলন থাকে। নেতাদের অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলায় আসতে হবে।ওয়ান ইলেভেনের সময় রাজপথে ওলামা লীগের কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো। মাঝে কিছুটা স্বেচ্ছাচারিতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল।তবে সেসব কাটিয়ে উঠে যেন একটি যোগ্য কমিটি তৈরি হয়। দলাদলি করে বদনাম কামাবেন না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই সরকারের সময় কখন শেষ হবে তা নির্ধারণ করবে জনগণ। এ দেশের নেতৃত্ব আগামী দিনে কারা দেবে তাও এ দেশের জনগণ ঠিক করবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগকে তার কচুপাতার ওপর ভোরের শিশির বিন্দু মনে করলে বিএনপি ভুল করবে।
বিএনপিকে পথহারা পথিক আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বারবার বসেও বিএনপি এখনও আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করতে পারেনি। তারা এখন পথহারা পথিক।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতন কবে হবে তার নির্দিষ্ট সময় ও দিনক্ষণ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে জানতে চেয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তীব্র বেগে নাকি ঝড় আসবে, সেই ঝড় শেখ হাসিনার গদি উলটে দেবে। কত নম্বর বিপদ সংকেত তা বলেননি। ঝড়ের কথা শুনছি ১০ বছর ধরে। ১০ বছর ধরে শুনছি, আর সরকারের সময় নেই। দেখতে দেখতে ১৪ বছর, ঝড় হবে কোন বছর? দেখতে দেখতে ১৪ বছর সরকার যাবে কোন বছর?
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুলকে আমি জিজ্ঞাসা করতে চাই—কয়েক দিন আগে ঝড় কেটে গেছে, শেখ হাসিনা আল্লাহর ইমানদার বান্দা সেই জন্য বাংলাদেশে ওই ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের মধ্যেও তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ফখরুল সাহেব, কবে সময় শেষ বলেন না কেন? সন-তারিখ বলেন, সময় বলেন, আমরা একটু তৈরি হই। কীভাবে ঝড় আসবে, ঠাকুরগাঁও থেকে আসবে নাকি লন্ডন থেকে আসবে? কোথা থেকে ঝড় আসবে সেটা একটু বলে দিন। কত নম্বর বিপদ সংকেত তাও বলে দিন।
মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, সরকারের বিদায় দেবেন, সরকারেরও তো একটা প্রস্তুতি আছে। ফখরুল সাহেব একে একে কত কর্মসূচি দেন। সরকারের সময় শেষ প্রতিদিনই বলছেন। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিএনপি মহাসচিবের কাছে জানতে চাই, সময়টা কখন, দিন-ক্ষণটা একটু বলুন, ১০ বছর ধরে তো শুনতে পাচ্ছি সরকারের সময় শেষ। এই সরকারের সময় কত এইটা জানে মহান সৃস্টিকর্তা আর এ দেশের জনগণ।
ওলামা লীগের আহ্বায়ক আব্দুল মোমিন সিরাজীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, ওলামা লীগের নেতা হাফেজ মওলানা মিজানুর রহমান প্রমুখ।