Dhaka সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চুপ্পুর কাছ থেকে জুলাই সনদ নেওয়ার চেয়ে পানিতে ডুবে মরে যাওয়া ভালো : হাসনাত আব্দুল্লাহ

ভোলা জেলা প্রতিনিধি : 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)র মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ঢাকার পর দ্বীপ জেলা ভোলায় জুলাই আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। এখন চুপ্পুর হাত থেকে যদি জুলাই সনদের সার্টিফিকেট নিতে হয়, তাহলে শহীদ ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের পরিবারের কাছে এটি চরম অপমানের হবে। এরচেয়ে পানিতে ডুবে মরা ভালো।

রোববার (২ নভেম্বর) ভোলা জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ভোলা জেলা সমন্বয় সভায় শেষে দুপুরের দিকে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ইতিহাসের নির্মম বাস্তবতা হলো- যারা জুলাই আন্দোলনের চেতনা ধরে রাখার কথা বলে, তারাই আজ চুপ্পুর কাছে বায়াত নিয়ে সেই সনদ নিতে চাইছে। চুপ্পু ফ্যাসিবাদের সুপ্রিম লিডার। তার কাছ থেকে বায়াত নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলা এক ধরনের প্রতারণা।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ইতিহাসের কী নির্মম বাস্তবতা যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল চুপ্পুর হাতে বায়াত হয়ে জুলাইয়ের সনদ নিতে চায়। এর চেয়ে দুঃখজনক ও পরিতাপের বিষয় আর কিছুই হতে পারে না। ফ্যাসিবাদের সুপ্রিম লিডার চুপ্পুর হাত থেকে বায়াত নিয়ে যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তাদের এই উদ্দেশ্যকে আমরা সন্দেহ করি এবং অবশ্যই আমাদের সন্দেহ করা উচিত।

তিনি বলেন, জুলাই সনদের বৈধতা একমাত্র ড. মুহাম্মদ ইউনুসের। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দায়িত্ব নেওয়ার কারণে তার নির্দেশেই সনদ প্রদান হতে হবে। কোনো প্রজ্ঞাপন বা অস্থায়ী নির্দেশ নয় সরকারের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। নির্বাচনের মতো জুলাই সনদের ক্ষেত্রেও সরকারের বৈধ ম্যান্ডেট রয়েছে। নির্বাচনের সময় ফেব্রুয়ারিই হতে হবে।

এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, গণভোটের সঙ্গে সঙ্গে জুলাই সনদের আদেশ দিতে হবে। এই আদেশ অবশ্যই ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জারি করতে হবে।
হাসনাত আরো বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার বৈধতা কেবলমাত্র রয়েছে গণ-অভুত্থানের। গণ-অভুত্থানের মধ্য দিয়ে যেহেতু ড. মুহাম্মদ ইউনূস এসেছেন, তিনিই এটির আদেশ দেবেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে দিতে হবে। কোনো অধ্যাদেশ নয়, প্রজ্ঞাপন নয়।

এনসিপির এই নেতা বলেন, গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী এই সরকারের যদি সংস্কার ও জুলাই সনদ ঘোষণা দেওয়ার ম্যান্ডেট না থাকে, তাহলে এই সরকার কোন ম্যান্ডেটে নির্বাচন দেবে; সেই ম্যান্ডেটটি আমি দেখতে চাই। নির্বাচন অবশ্যই ফেব্রুয়ারিতে হওয়া উচিত এবং হতে হবে। নির্বাচনকে তারাই পিছিয়ে দিতে চায়, যারা এই সরকারের সঙ্গে জুলাই সনদকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিতে চায়।

তিনি বলেন, এই সরকারের যেমন নির্বাচনের ম্যান্ডেট রয়েছে, এই সরকারের জুলাই সনদের ম্যান্ডেট রয়েছে, আবার এই সরকারেরই সংস্কারের ম্যান্ডেট রয়েছে। সুতরাং সংস্কার প্রক্রিয়া যথাসময়ে সম্পন্ন করে ফেব্রুয়ারিতে অবশ্যই নির্বাচন হতে হবে। এনসিপি যেই অবস্থান নেবে, দিনশেষে সব রাজনৈতিক দল সেই অবস্থান নেবে।

আগামী নির্বাচনে জোট গঠন নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের সঙ্গে তাদেরই জোট হবে, যারা সংস্কারের পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করেছেন এবং ২৪ যে আকাঙ্ক্ষা কারণে ঘটেছে, দীর্ঘ দেড় দশকের লড়াইয়ে ক্ষোভের যে বহিঃপ্রকাশ হিসাবে, রাষ্ট্র, সাংবিধানিক কাঠামোর যে দুর্বলতা, সেগুলো উত্তোরণে যারা আমাদের পাশে আসবে, যারা আমাদের সঙ্গে থাকবে; তাদের নিয়েই আমাদের জোট হতে পারে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদের বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা বলে জুলাই সনদ প্রয়োজন নেই, তারা কাল হয়তো বলবে ২৪ আন্দোলনেরও প্রয়োজন নেই। এর একটি বাস্তব নমুনা ভোলায় দেখা গেছে।

এসময় ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থের দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, রাজনীতিতে পেশীশক্তির ব্যবহার মারাত্মক সংকেত। আমরা আশা করি পার্থ ভেবে দেখবেন এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আগের অবস্থানে ফিরে আসবেন।

সমন্বয় সভায় এনসিপির ভোলা জেলার প্রধান সমন্বয়কারী মেহেদী হাসান শরীফের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল বিভাগীয় সম্পাদক সহকারী এটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) ডা. মাহমুদা আলম মিতু।

বিশেষ বক্তা ছিলেন যুগ্ম সদস্য সচিব এবং শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন, কেন্দ্রীয় সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন ফয়সাল, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মেসবাহ কামাল, কেন্দ্রীয় সদস্য রফিকুল ইসলাম কনক ও আবু সাঈদ মুসা।

সভায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে দলীয় কার্যক্রম আরো জোরদার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চুপ্পুর কাছ থেকে জুলাই সনদ নেওয়ার চেয়ে পানিতে ডুবে মরে যাওয়া ভালো : হাসনাত আব্দুল্লাহ

প্রকাশের সময় : ০৭:০৭:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ নভেম্বর ২০২৫

ভোলা জেলা প্রতিনিধি : 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)র মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ঢাকার পর দ্বীপ জেলা ভোলায় জুলাই আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি মানুষ শহীদ হয়েছেন। এখন চুপ্পুর হাত থেকে যদি জুলাই সনদের সার্টিফিকেট নিতে হয়, তাহলে শহীদ ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের পরিবারের কাছে এটি চরম অপমানের হবে। এরচেয়ে পানিতে ডুবে মরা ভালো।

রোববার (২ নভেম্বর) ভোলা জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ভোলা জেলা সমন্বয় সভায় শেষে দুপুরের দিকে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ইতিহাসের নির্মম বাস্তবতা হলো- যারা জুলাই আন্দোলনের চেতনা ধরে রাখার কথা বলে, তারাই আজ চুপ্পুর কাছে বায়াত নিয়ে সেই সনদ নিতে চাইছে। চুপ্পু ফ্যাসিবাদের সুপ্রিম লিডার। তার কাছ থেকে বায়াত নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলা এক ধরনের প্রতারণা।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ইতিহাসের কী নির্মম বাস্তবতা যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল চুপ্পুর হাতে বায়াত হয়ে জুলাইয়ের সনদ নিতে চায়। এর চেয়ে দুঃখজনক ও পরিতাপের বিষয় আর কিছুই হতে পারে না। ফ্যাসিবাদের সুপ্রিম লিডার চুপ্পুর হাত থেকে বায়াত নিয়ে যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তাদের এই উদ্দেশ্যকে আমরা সন্দেহ করি এবং অবশ্যই আমাদের সন্দেহ করা উচিত।

তিনি বলেন, জুলাই সনদের বৈধতা একমাত্র ড. মুহাম্মদ ইউনুসের। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দায়িত্ব নেওয়ার কারণে তার নির্দেশেই সনদ প্রদান হতে হবে। কোনো প্রজ্ঞাপন বা অস্থায়ী নির্দেশ নয় সরকারের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। নির্বাচনের মতো জুলাই সনদের ক্ষেত্রেও সরকারের বৈধ ম্যান্ডেট রয়েছে। নির্বাচনের সময় ফেব্রুয়ারিই হতে হবে।

এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, গণভোটের সঙ্গে সঙ্গে জুলাই সনদের আদেশ দিতে হবে। এই আদেশ অবশ্যই ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জারি করতে হবে।
হাসনাত আরো বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার বৈধতা কেবলমাত্র রয়েছে গণ-অভুত্থানের। গণ-অভুত্থানের মধ্য দিয়ে যেহেতু ড. মুহাম্মদ ইউনূস এসেছেন, তিনিই এটির আদেশ দেবেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে দিতে হবে। কোনো অধ্যাদেশ নয়, প্রজ্ঞাপন নয়।

এনসিপির এই নেতা বলেন, গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী এই সরকারের যদি সংস্কার ও জুলাই সনদ ঘোষণা দেওয়ার ম্যান্ডেট না থাকে, তাহলে এই সরকার কোন ম্যান্ডেটে নির্বাচন দেবে; সেই ম্যান্ডেটটি আমি দেখতে চাই। নির্বাচন অবশ্যই ফেব্রুয়ারিতে হওয়া উচিত এবং হতে হবে। নির্বাচনকে তারাই পিছিয়ে দিতে চায়, যারা এই সরকারের সঙ্গে জুলাই সনদকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিতে চায়।

তিনি বলেন, এই সরকারের যেমন নির্বাচনের ম্যান্ডেট রয়েছে, এই সরকারের জুলাই সনদের ম্যান্ডেট রয়েছে, আবার এই সরকারেরই সংস্কারের ম্যান্ডেট রয়েছে। সুতরাং সংস্কার প্রক্রিয়া যথাসময়ে সম্পন্ন করে ফেব্রুয়ারিতে অবশ্যই নির্বাচন হতে হবে। এনসিপি যেই অবস্থান নেবে, দিনশেষে সব রাজনৈতিক দল সেই অবস্থান নেবে।

আগামী নির্বাচনে জোট গঠন নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের সঙ্গে তাদেরই জোট হবে, যারা সংস্কারের পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করেছেন এবং ২৪ যে আকাঙ্ক্ষা কারণে ঘটেছে, দীর্ঘ দেড় দশকের লড়াইয়ে ক্ষোভের যে বহিঃপ্রকাশ হিসাবে, রাষ্ট্র, সাংবিধানিক কাঠামোর যে দুর্বলতা, সেগুলো উত্তোরণে যারা আমাদের পাশে আসবে, যারা আমাদের সঙ্গে থাকবে; তাদের নিয়েই আমাদের জোট হতে পারে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদের বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা বলে জুলাই সনদ প্রয়োজন নেই, তারা কাল হয়তো বলবে ২৪ আন্দোলনেরও প্রয়োজন নেই। এর একটি বাস্তব নমুনা ভোলায় দেখা গেছে।

এসময় ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থের দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, রাজনীতিতে পেশীশক্তির ব্যবহার মারাত্মক সংকেত। আমরা আশা করি পার্থ ভেবে দেখবেন এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আগের অবস্থানে ফিরে আসবেন।

সমন্বয় সভায় এনসিপির ভোলা জেলার প্রধান সমন্বয়কারী মেহেদী হাসান শরীফের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশাল বিভাগীয় সম্পাদক সহকারী এটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) ডা. মাহমুদা আলম মিতু।

বিশেষ বক্তা ছিলেন যুগ্ম সদস্য সচিব এবং শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আরিফুর রহমান তুহিন, কেন্দ্রীয় সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন ফয়সাল, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মেসবাহ কামাল, কেন্দ্রীয় সদস্য রফিকুল ইসলাম কনক ও আবু সাঈদ মুসা।

সভায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে দলীয় কার্যক্রম আরো জোরদার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।