Dhaka বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন ঘিরে ইসির নতুন বিধিমালা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০২:১৯:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৯৬ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী ঘনিয়ে আসছে বহুল কাঙ্ক্ষিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়। চলতি বছরের ডিসেম্বরেই ঘোষণা হতে পারে নির্বাচনের তারিখ। এ অবস্থায় সংসদীয় নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫’ জারি করেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পর্যবেক্ষক নীতিমালা জারির বিষয়ে জানান।

নীতিমালা অনুযায়ী, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো- সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে কোনও ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে তা জানা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বাড়িয়ে ভোটারের আস্থা বৃদ্ধি করা।

পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন প্রক্রিয়া

পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোকে নিবন্ধনের জন্য দৈনিক পত্রিকায় ১৫ দিন সময় দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। আগ্রহী সংস্থাকে নির্ধারিত ফরম এবং বিজ্ঞাপনে উল্লিখিত দলিলাদিসহ আবেদন জমা দিতে হবে।

বেসরকারি সংস্থা যারা গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে এবং যাদের নিবন্ধিত গঠনতন্ত্রে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নাগরিকদের মধ্যে তথ্য প্রচার ও উদ্বুদ্ধকরণের অঙ্গীকার রয়েছে, কেবল তারাই আবেদন করতে পারবে।

অযোগ্যতা

নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ব্যক্তি বা যারা নিবন্ধন লাভের জন্য আবেদনকৃত সময়ের মধ্যে কোনও নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী, এমন কেউ যদি সংস্থার প্রধান নির্বাহী বা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হন, তবে সেই সংস্থা নিবন্ধন পাবে না। আবেদনকারী সংস্থাকে অবশ্যই হলফনামা দিতে হবে যে তাদের প্রধান নির্বাহী বা পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্য রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্ট নন। জাতীয় বা আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে হুবহু মিল বা কাছাকাছি নাম ব্যবহার করা হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে, এমন প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন পাওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তবে আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক সংস্থার ক্ষেত্রে লিখিত অনাপত্তিপত্র দাখিল করলে বিবেচনা করা হতে পারে। সেইসঙ্গে পূর্বে যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন দাখিল করেছে, তাদের নিবন্ধন দেওয়া হবে না।

নিবন্ধনের মেয়াদ ও নবায়ন

প্রতিটি সংস্থার নিবন্ধনের মেয়াদ অনুমোদনের তারিখ থেকে ৫ (পাঁচ) বছরের জন্য বহাল থাকবে। মেয়াদ শেষ হলে কিছু শর্ত সাপেক্ষে নবায়ন করা যাবে। এছাড়া নিবন্ধন প্রাপ্তির পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যে জাতীয় সংসদের যেকোনো ১টি সাধারণ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের অন্তত ৪টি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে দাখিল করতে হবে। সেই সাথে প্রতি ২ বছর অন্তর দ্বি-বার্ষিক প্রতিবেদন কমিশন সচিবালয়ে দাখিল করতে হবে। সংস্থাটিকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ও দেশের প্রচলিত আইন-বিধি মানিয়া চলতে হবে।

পর্যবেক্ষকের যোগ্যতা ও মোতায়েন

নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে একজন ব্যক্তির লিখিত যোগ্যতা থাকতে হবে-

১. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।

২. বয়স ২১ (একুশ) বছর বা তদূর্ধ্ব হতে হবে।

৩. ন্যূনতম উচ্চমাধ্যমিক (এইচ.এস.সি.) বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

৪. কোনও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হতে পারবে না।

৫. কোনও রাজনৈতিক দল বা দলের অঙ্গসংগঠন বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে ব্যক্তিগত স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারবে না।

৬. রাজনৈতিক দল বা এর অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কেউ পর্যবেক্ষক হতে পারবেন না।

৭. পর্যবেক্ষক মোতায়েনের একক ইউনিট হবে উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানা অথবা সংসদীয় নির্বাচনি এলাকা।

৮. পর্যবেক্ষকদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার বাসিন্দা বা ভোটার হওয়া চলবে না।

৯. নিবন্ধিত পর্যবেক্ষক সংস্থা নির্বাচনের আগের দিন, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পরের দিন, অর্থাৎ ৩ (তিন) দিনের জন্য পর্যবেক্ষক মোতায়েন করতে পারবে।

বাতিল প্রক্রিয়া

নীতিমালা লঙ্ঘন বা রাষ্ট্র বা শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে কমিশন সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ১০ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব চেয়ে নোটিশ পাঠাবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে বা শুনানিতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কমিশন সংস্থার নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে। এক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন না দিতে পারলে এর দায় অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

নির্বাচন ঘিরে ইসির নতুন বিধিমালা

প্রকাশের সময় : ০২:১৯:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী ঘনিয়ে আসছে বহুল কাঙ্ক্ষিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়। চলতি বছরের ডিসেম্বরেই ঘোষণা হতে পারে নির্বাচনের তারিখ। এ অবস্থায় সংসদীয় নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫’ জারি করেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পর্যবেক্ষক নীতিমালা জারির বিষয়ে জানান।

নীতিমালা অনুযায়ী, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো- সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে কোনও ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে তা জানা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বাড়িয়ে ভোটারের আস্থা বৃদ্ধি করা।

পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন প্রক্রিয়া

পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোকে নিবন্ধনের জন্য দৈনিক পত্রিকায় ১৫ দিন সময় দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। আগ্রহী সংস্থাকে নির্ধারিত ফরম এবং বিজ্ঞাপনে উল্লিখিত দলিলাদিসহ আবেদন জমা দিতে হবে।

বেসরকারি সংস্থা যারা গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে এবং যাদের নিবন্ধিত গঠনতন্ত্রে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নাগরিকদের মধ্যে তথ্য প্রচার ও উদ্বুদ্ধকরণের অঙ্গীকার রয়েছে, কেবল তারাই আবেদন করতে পারবে।

অযোগ্যতা

নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ব্যক্তি বা যারা নিবন্ধন লাভের জন্য আবেদনকৃত সময়ের মধ্যে কোনও নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী, এমন কেউ যদি সংস্থার প্রধান নির্বাহী বা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হন, তবে সেই সংস্থা নিবন্ধন পাবে না। আবেদনকারী সংস্থাকে অবশ্যই হলফনামা দিতে হবে যে তাদের প্রধান নির্বাহী বা পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্য রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্ট নন। জাতীয় বা আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানের নামের সঙ্গে হুবহু মিল বা কাছাকাছি নাম ব্যবহার করা হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে, এমন প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন পাওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তবে আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক সংস্থার ক্ষেত্রে লিখিত অনাপত্তিপত্র দাখিল করলে বিবেচনা করা হতে পারে। সেইসঙ্গে পূর্বে যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন দাখিল করেছে, তাদের নিবন্ধন দেওয়া হবে না।

নিবন্ধনের মেয়াদ ও নবায়ন

প্রতিটি সংস্থার নিবন্ধনের মেয়াদ অনুমোদনের তারিখ থেকে ৫ (পাঁচ) বছরের জন্য বহাল থাকবে। মেয়াদ শেষ হলে কিছু শর্ত সাপেক্ষে নবায়ন করা যাবে। এছাড়া নিবন্ধন প্রাপ্তির পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যে জাতীয় সংসদের যেকোনো ১টি সাধারণ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের অন্তত ৪টি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে দাখিল করতে হবে। সেই সাথে প্রতি ২ বছর অন্তর দ্বি-বার্ষিক প্রতিবেদন কমিশন সচিবালয়ে দাখিল করতে হবে। সংস্থাটিকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ও দেশের প্রচলিত আইন-বিধি মানিয়া চলতে হবে।

পর্যবেক্ষকের যোগ্যতা ও মোতায়েন

নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে একজন ব্যক্তির লিখিত যোগ্যতা থাকতে হবে-

১. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।

২. বয়স ২১ (একুশ) বছর বা তদূর্ধ্ব হতে হবে।

৩. ন্যূনতম উচ্চমাধ্যমিক (এইচ.এস.সি.) বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

৪. কোনও নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হতে পারবে না।

৫. কোনও রাজনৈতিক দল বা দলের অঙ্গসংগঠন বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে ব্যক্তিগত স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারবে না।

৬. রাজনৈতিক দল বা এর অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কেউ পর্যবেক্ষক হতে পারবেন না।

৭. পর্যবেক্ষক মোতায়েনের একক ইউনিট হবে উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানা অথবা সংসদীয় নির্বাচনি এলাকা।

৮. পর্যবেক্ষকদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার বাসিন্দা বা ভোটার হওয়া চলবে না।

৯. নিবন্ধিত পর্যবেক্ষক সংস্থা নির্বাচনের আগের দিন, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পরের দিন, অর্থাৎ ৩ (তিন) দিনের জন্য পর্যবেক্ষক মোতায়েন করতে পারবে।

বাতিল প্রক্রিয়া

নীতিমালা লঙ্ঘন বা রাষ্ট্র বা শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে কমিশন সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ১০ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব চেয়ে নোটিশ পাঠাবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে বা শুনানিতে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কমিশন সংস্থার নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে। এক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।