Dhaka বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মহাসড়কে টর্চ জ্বালিয়ে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আহত ৩০

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে টর্চলাইট জ্বালিয়ে মহাসড়কে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন এবং কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে কয়েক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।

বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত পৌনে ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সদর উপজেলার উত্তর সুহিলপুর এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে তিন কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার সুহিলপুর পূর্বপাড়ার আওয়ামী লীগ-সমর্থিত উকিলের গোষ্ঠী ও বিএনপি-সমর্থিত আজিজ মিয়ার গোষ্ঠীর মধ্যে আগে থেকে বিরোধ চলে আসছে। চার থেকে পাঁচ দিন আগে নিজেদের মধ্যে তর্কের জেরে উকিলের গোষ্ঠীর সাবেক ইউপি সদস্য ও জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন একই গ্রামের আজিজ মিয়ার গোষ্ঠীর আক্তার মিয়াকে থাপ্পড় দেন। এ নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা চলতে থাকে।

বুধবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয় পক্ষ সুহিলপুর বাজারে সালিস বসে। কিন্তু সালিসে বিষয়টির কোনো সমাধান হয়নি। সালিসে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের লোকজন রামদা, ছুরি, বল্লম ও ইটপাটকেল নিয়ে টর্চলাইট জ্বালিয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় এলাকাজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষের কারণে রাত সোয়া ৮টা থেকে রাত সোয়া ১১টা পর্যন্ত কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সময় কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেও সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি পুলিশ। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে রাত সোয়া ১১টায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। তাঁরা বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজহারুল ইসলাম বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আজিজের গোষ্ঠী ও উকিল গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে দুই গোষ্ঠীর লোকজন সংঘর্ষে জড়ান। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। পরে যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

তিনি বলেন, পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায় রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মহাসড়কে টর্চ জ্বালিয়ে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আহত ৩০

প্রকাশের সময় : ১২:৩৩:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে টর্চলাইট জ্বালিয়ে মহাসড়কে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন এবং কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে কয়েক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।

বুধবার (২২ অক্টোবর) রাত পৌনে ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সদর উপজেলার উত্তর সুহিলপুর এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে তিন কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার সুহিলপুর পূর্বপাড়ার আওয়ামী লীগ-সমর্থিত উকিলের গোষ্ঠী ও বিএনপি-সমর্থিত আজিজ মিয়ার গোষ্ঠীর মধ্যে আগে থেকে বিরোধ চলে আসছে। চার থেকে পাঁচ দিন আগে নিজেদের মধ্যে তর্কের জেরে উকিলের গোষ্ঠীর সাবেক ইউপি সদস্য ও জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন একই গ্রামের আজিজ মিয়ার গোষ্ঠীর আক্তার মিয়াকে থাপ্পড় দেন। এ নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা চলতে থাকে।

বুধবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয় পক্ষ সুহিলপুর বাজারে সালিস বসে। কিন্তু সালিসে বিষয়টির কোনো সমাধান হয়নি। সালিসে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের লোকজন রামদা, ছুরি, বল্লম ও ইটপাটকেল নিয়ে টর্চলাইট জ্বালিয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় এলাকাজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষের কারণে রাত সোয়া ৮টা থেকে রাত সোয়া ১১টা পর্যন্ত কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এ সময় কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেও সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি পুলিশ। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে রাত সোয়া ১১টায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। তাঁরা বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজহারুল ইসলাম বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আজিজের গোষ্ঠী ও উকিল গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে দুই গোষ্ঠীর লোকজন সংঘর্ষে জড়ান। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। পরে যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

তিনি বলেন, পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায় রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।