Dhaka মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না করে কারো ‘সেফ এক্সিট’ নেই : সারজিস আলম

নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধি : 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না করে কারো জন্য কোনও ‘সেফ এক্সিট’ নেই। মৃত্যু ছাড়া নিরাপদ প্রস্থান অসম্ভব।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে নেত্রকোণা জেলার একটি রেস্টুরেন্টে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জেলা সমন্বয় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, সেইফ এক্সিটের কথা সব উপদেষ্টাকে বলা হয়নি। কিছু কিছু উপদেষ্টার কথায় আচরণে মনে হচ্ছে তারা যেনতেন নির্বাচন দিয়ে সেইফ এক্সিট চাচ্ছেন। এটা হতে দেওয়া হবে না। বাংলাদেশের স্বার্থে এনসিপি এককভাবেও আগামী নির্বাচনে যেতে পারে। আবার কোনো অ্যালায়েন্সের মধ্য দিয়েও নির্বাচনে যেতে পারে। তবে যদি সেটা অ্যালায়েন্স হয়, তাহলে এনসিপি নামেই নির্বাচন করবে। আমরা প্রত্যাশা করছি- শাপলা প্রতীকেই নির্বাচন করবো।

শাপলা প্রতীক নিয়ে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের আইন অঙ্গন থেকে শুরু করে যারা এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আছেন- সচিব, নির্বাচন কমিশনসহ সবার সঙ্গে কথা বলেছি। শাপলা প্রতীক দিতে আইনগত কোনো বাধা নেই। যেহেতু আইনগত বাধা নেই, তাই আমরা প্রত্যাশা করি- আমাদের সঙ্গে অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এমন একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কোনোভাবেই প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে স্বেচ্ছাচারমূলক আচরণ করবে না। আমরা প্রত্যাশা করি, আমরা শাপলা প্রতীক পাবো এবং সেই প্রতীকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।

সারজিস আলম বলেন, সিরিয়াল কিলাররা কোন পদে আছেন বা কোন প্রতিষ্ঠানে আছেন, সেটি মুখ্য বিষয় নয়। এদের সবারই সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

ভারতের প্রভাব প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা মনে করি, ভারতীয় যে আধিপত্যবাদ রয়েছে, তা বিএনপি ও জামায়াত তাদের অবস্থান থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী মোকাবিলা করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে এনসিপি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। আমরা একটি স্থিতিশীল সরকার চাই, যা এনসিপির সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়।’

এনসিপি নেতা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে প্রায় ২৫ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটির উচিত নিজ অবস্থান থেকে সততা, মর্যাদা এবং স্বাধীনতা বজায় রাখা, যা বাংলাদেশের স্বার্থে প্রয়োজন। আমরা সবসময় চাই সেনাবাহিনী একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে থাকুক। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, এই প্রতিষ্ঠানের কিছু কর্মকর্তা খুনি হাসিনা ও তার সরকার দ্বারা ব্যবহার হয়ে অসংখ্য খুন, গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছেন।

তিনি বলেন, আয়না ঘরে ঘটানো বহু নির্মমতার সাক্ষী আমরা। এমনকি আমরা দেখেছি মাত্র একজন কর্মকর্তা ১ হাজার ৩০ জনকে হত্যা করেছে- যা ট্রাইব্যুনালের তথ্য থেকে উঠে এসেছে। এরা এক ধরনের সিরিয়াল কিলার। এদের কারো পদ-পদবি কিংবা প্রতিষ্ঠানের নাম দেখে বিবেচনা করা চলবে না। এ ধরনের সিরিয়াল কিলারদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

সারজিস আলম বলেন, আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আহ্বান জানাব, তারা যেন এই সিরিয়াল কিলারদের দায়ভার গ্রহণ না করে। বরং যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের বিচারের জন্য হস্তান্তর করতে সহযোগিতা করে। আমরা চাই, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যেন সব ধরনের কলুষতা থেকে মুক্ত থাকে। যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত, তারা যেই পদে থাকুক বা যেই প্রতিষ্ঠানে থাকুক, তাদের উপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রসঙ্গে এনসিপি নেতা বলেন, এই সরকারের অন্যতম বড় ব্যর্থতা হলো- ফ্যাসিস্ট কাঠামোর সঙ্গে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিদের তারা ক্ষমতা থেকে সরাতে পারেনি। বরং তারা ধীরে ধীরে পুনর্বাসিত হচ্ছে। আপনি যদি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেন, তারা যদি এখনও তাদের পদে বহাল থাকে- তাহলে তা স্পষ্টভাবে পুনর্বাসনেরই ইঙ্গিত দেয়।

তিনি বলেন, আমাদের এই সংগ্রাম দীর্ঘ এবং এটি চালিয়ে যেতে হবে। আমরা সকল রাজনৈতিক দলকে এবং এনসিপিকেও আহ্বান জানাব, যেন কেউ কোনো সিস্টেম, সুবিধা বা সমঝোতার বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট কাঠামোর সঙ্গে যুক্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্রয় না দেয়। আমরা বিশ্বাস করি, যদি আমরা এটা করতে পারি, তাহলে আমাদের জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে এনসিপির সম্মতি আছে কী-না এমন প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়নের ভিত্তি ও নিশ্চয়তা পেলে এবং গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দৃশ্যমান হলে এ সময়ের মধ্যে নির্বাচনে তার দলের আপত্তি নেই।

তিনি বলেন, একটি কনফারেন্সে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর নিজেই আমাদের কাছে বলেছিলেন- শেখ হাসিনাসহ এই খুনগুলোর সঙ্গে যারা সরাসরি নির্দেশদাতা ও সরাসরি সম্পৃক্ত, তাদের বিচারের রায় আগামী ডিসেম্বরে কার্যকর হবে। আমরা সেটার অপেক্ষায় আছি। এ রকম আস্থা যদি আমরা পাই, তাহলে আমরা মনে করি- এই ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হওয়াতে কোনো বাধা থাকতে পারে না।

সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবির বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, এনসিপি মনে করে যে- বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় উচ্চকক্ষে পিআর হতে পারে এবং এটা জানিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। আমরা মনে করি, উচ্চকক্ষে যদি পিআর বাস্তবায়নযোগ্য হয়, সফলতার মুখ দেখে এবং বাস্তবায়ন হয়, আগামী দিনে বাংলাদেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে নিম্নকক্ষে পিআর হবে কী-না। এ মুহূর্তে এনসিপির স্পষ্ট অবস্থান, আগামী নির্বাচনে আমরা উচ্চকক্ষে পিআরের পক্ষে এবং এ মুহূর্তে নিম্নকক্ষে পিআরের পক্ষে আমরা নই।

সেনাবাহিনীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সারজিস আলম বলেন, সেনাবাহিনীর কিছু অফিসারকে ব্যবহার করে শেখ হাসিনা অসংখ্য গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। আয়নাঘরের মতো অসংখ্য নির্মমতা আমরা দেখেছি। শুধু একজন অফিসার অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে—এ রকম তথ্যও আমরা ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনেছি। এসব সিরিয়াল কিলারের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা আশা করি, সেনাবাহিনী এসব খুনির দায়ভার গ্রহণ করবে না।

জেলা এনসিপির আয়োজনে সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকিন আলম। উক্ত সভায় কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) প্রীতম সোহাগ ও কেন্দ্রীয় সদস্য ফাহিম রহমান খান পাঠান, জুলাই ওরিয়র্সের জেলা কমিটির আহ্বায়ক তোফায়েল আহমদ, খালিয়াজুরি উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমানসহ জেলা ও উপজেলার নেতাদের সভায় অংশ নেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রাকিবের গোলে হংকংয়ের বিপক্ষে ড্র করল বাংলাদেশ

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না করে কারো ‘সেফ এক্সিট’ নেই : সারজিস আলম

প্রকাশের সময় : ০৪:১৪:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

নেত্রকোণা জেলা প্রতিনিধি : 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না করে কারো জন্য কোনও ‘সেফ এক্সিট’ নেই। মৃত্যু ছাড়া নিরাপদ প্রস্থান অসম্ভব।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে নেত্রকোণা জেলার একটি রেস্টুরেন্টে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জেলা সমন্বয় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, সেইফ এক্সিটের কথা সব উপদেষ্টাকে বলা হয়নি। কিছু কিছু উপদেষ্টার কথায় আচরণে মনে হচ্ছে তারা যেনতেন নির্বাচন দিয়ে সেইফ এক্সিট চাচ্ছেন। এটা হতে দেওয়া হবে না। বাংলাদেশের স্বার্থে এনসিপি এককভাবেও আগামী নির্বাচনে যেতে পারে। আবার কোনো অ্যালায়েন্সের মধ্য দিয়েও নির্বাচনে যেতে পারে। তবে যদি সেটা অ্যালায়েন্স হয়, তাহলে এনসিপি নামেই নির্বাচন করবে। আমরা প্রত্যাশা করছি- শাপলা প্রতীকেই নির্বাচন করবো।

শাপলা প্রতীক নিয়ে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশের আইন অঙ্গন থেকে শুরু করে যারা এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আছেন- সচিব, নির্বাচন কমিশনসহ সবার সঙ্গে কথা বলেছি। শাপলা প্রতীক দিতে আইনগত কোনো বাধা নেই। যেহেতু আইনগত বাধা নেই, তাই আমরা প্রত্যাশা করি- আমাদের সঙ্গে অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এমন একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কোনোভাবেই প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে স্বেচ্ছাচারমূলক আচরণ করবে না। আমরা প্রত্যাশা করি, আমরা শাপলা প্রতীক পাবো এবং সেই প্রতীকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবো।

সারজিস আলম বলেন, সিরিয়াল কিলাররা কোন পদে আছেন বা কোন প্রতিষ্ঠানে আছেন, সেটি মুখ্য বিষয় নয়। এদের সবারই সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

ভারতের প্রভাব প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা মনে করি, ভারতীয় যে আধিপত্যবাদ রয়েছে, তা বিএনপি ও জামায়াত তাদের অবস্থান থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী মোকাবিলা করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে এনসিপি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। আমরা একটি স্থিতিশীল সরকার চাই, যা এনসিপির সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়।’

এনসিপি নেতা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে প্রায় ২৫ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটির উচিত নিজ অবস্থান থেকে সততা, মর্যাদা এবং স্বাধীনতা বজায় রাখা, যা বাংলাদেশের স্বার্থে প্রয়োজন। আমরা সবসময় চাই সেনাবাহিনী একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে থাকুক। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, এই প্রতিষ্ঠানের কিছু কর্মকর্তা খুনি হাসিনা ও তার সরকার দ্বারা ব্যবহার হয়ে অসংখ্য খুন, গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছেন।

তিনি বলেন, আয়না ঘরে ঘটানো বহু নির্মমতার সাক্ষী আমরা। এমনকি আমরা দেখেছি মাত্র একজন কর্মকর্তা ১ হাজার ৩০ জনকে হত্যা করেছে- যা ট্রাইব্যুনালের তথ্য থেকে উঠে এসেছে। এরা এক ধরনের সিরিয়াল কিলার। এদের কারো পদ-পদবি কিংবা প্রতিষ্ঠানের নাম দেখে বিবেচনা করা চলবে না। এ ধরনের সিরিয়াল কিলারদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

সারজিস আলম বলেন, আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে আহ্বান জানাব, তারা যেন এই সিরিয়াল কিলারদের দায়ভার গ্রহণ না করে। বরং যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের বিচারের জন্য হস্তান্তর করতে সহযোগিতা করে। আমরা চাই, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যেন সব ধরনের কলুষতা থেকে মুক্ত থাকে। যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত, তারা যেই পদে থাকুক বা যেই প্রতিষ্ঠানে থাকুক, তাদের উপযুক্ত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রসঙ্গে এনসিপি নেতা বলেন, এই সরকারের অন্যতম বড় ব্যর্থতা হলো- ফ্যাসিস্ট কাঠামোর সঙ্গে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিদের তারা ক্ষমতা থেকে সরাতে পারেনি। বরং তারা ধীরে ধীরে পুনর্বাসিত হচ্ছে। আপনি যদি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেন, তারা যদি এখনও তাদের পদে বহাল থাকে- তাহলে তা স্পষ্টভাবে পুনর্বাসনেরই ইঙ্গিত দেয়।

তিনি বলেন, আমাদের এই সংগ্রাম দীর্ঘ এবং এটি চালিয়ে যেতে হবে। আমরা সকল রাজনৈতিক দলকে এবং এনসিপিকেও আহ্বান জানাব, যেন কেউ কোনো সিস্টেম, সুবিধা বা সমঝোতার বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট কাঠামোর সঙ্গে যুক্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্রয় না দেয়। আমরা বিশ্বাস করি, যদি আমরা এটা করতে পারি, তাহলে আমাদের জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে এনসিপির সম্মতি আছে কী-না এমন প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়নের ভিত্তি ও নিশ্চয়তা পেলে এবং গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দৃশ্যমান হলে এ সময়ের মধ্যে নির্বাচনে তার দলের আপত্তি নেই।

তিনি বলেন, একটি কনফারেন্সে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর নিজেই আমাদের কাছে বলেছিলেন- শেখ হাসিনাসহ এই খুনগুলোর সঙ্গে যারা সরাসরি নির্দেশদাতা ও সরাসরি সম্পৃক্ত, তাদের বিচারের রায় আগামী ডিসেম্বরে কার্যকর হবে। আমরা সেটার অপেক্ষায় আছি। এ রকম আস্থা যদি আমরা পাই, তাহলে আমরা মনে করি- এই ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হওয়াতে কোনো বাধা থাকতে পারে না।

সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবির বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, এনসিপি মনে করে যে- বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় উচ্চকক্ষে পিআর হতে পারে এবং এটা জানিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। আমরা মনে করি, উচ্চকক্ষে যদি পিআর বাস্তবায়নযোগ্য হয়, সফলতার মুখ দেখে এবং বাস্তবায়ন হয়, আগামী দিনে বাংলাদেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে নিম্নকক্ষে পিআর হবে কী-না। এ মুহূর্তে এনসিপির স্পষ্ট অবস্থান, আগামী নির্বাচনে আমরা উচ্চকক্ষে পিআরের পক্ষে এবং এ মুহূর্তে নিম্নকক্ষে পিআরের পক্ষে আমরা নই।

সেনাবাহিনীর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সারজিস আলম বলেন, সেনাবাহিনীর কিছু অফিসারকে ব্যবহার করে শেখ হাসিনা অসংখ্য গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। আয়নাঘরের মতো অসংখ্য নির্মমতা আমরা দেখেছি। শুধু একজন অফিসার অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে—এ রকম তথ্যও আমরা ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা প্রতিবেদনের মাধ্যমে জেনেছি। এসব সিরিয়াল কিলারের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আমরা আশা করি, সেনাবাহিনী এসব খুনির দায়ভার গ্রহণ করবে না।

জেলা এনসিপির আয়োজনে সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকিন আলম। উক্ত সভায় কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) প্রীতম সোহাগ ও কেন্দ্রীয় সদস্য ফাহিম রহমান খান পাঠান, জুলাই ওরিয়র্সের জেলা কমিটির আহ্বায়ক তোফায়েল আহমদ, খালিয়াজুরি উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক মুশফিকুর রহমানসহ জেলা ও উপজেলার নেতাদের সভায় অংশ নেন।