Dhaka সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় মদপানে ৬ জনের মৃত্যু

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি : 

চুয়াডাঙ্গা সদরের ডিঙ্গেদহে মদপানে ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া অসুস্থ হয়ে আলিম উদ্দিন নামে আরও এক দিনমজুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিহতরা হলেন- নফরকান্দি গ্রামের ভ্যানচালক খেদের আলী (৪০), খেজুরা হাসপাতালপাড়ার মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলিম (৪০), পিরোজখালী স্কুলপাড়ার ভ্যানচালক মোহাম্মদ লান্টু ওরফে রিপু (৩০), শংকরচন্দ্র গ্রামের শ্রমিক মোহাম্মদ শহীদ (৪৫), ডিঙ্গেদহ টাওয়ারপাড়ার মিল শ্রমিক মোহাম্মদ সামির (৫৫) এবং এশিয়া বিস্কুট ফ্যাক্টরি পাড়ার শ্রমিক সরদার মোহাম্মদ লান্টু (৫২)।

তারা সবাই পেশায় দিনমজুর ও লেবারের কাজ করতেন বলে জানা গেছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জামাল আল নাসের আলী জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে ডিঙ্গেদহ বাজার এলাকায় কয়েকজন একসঙ্গে অ্যালকোহল পান করেন। এরপর একে একে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বিভিন্ন সময়ে ছয়জন মারা যান। রোববার (১২ অক্টোবর) রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও একজনের মৃত্যুর পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

তিনি বলেন, নিহতদের পরিবারের সদস্যরা শুরুতে বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। এখন পর্যন্ত চারজনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশ প্রত্যেকের বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে এবং ঘটনাটি তদন্ত করছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাতে ডিঙ্গেদহ বাজারে মদপানের পর শনিবার (১১ অক্টোবর) প্রথমে খেদের আলী ও সেলিম মারা যান। পরদিন রোববার (১২ অক্টোবর) আরও চারজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা গোপনে দাফন সম্পন্ন করলেও পরবর্তীতে বিষয়টি প্রকাশ পায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ডিঙ্গেদহ বাজারে গোপনে দেশি মদ বিক্রি হয়ে আসছে। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বলে তারা দাবি করেছেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আলিম উদ্দিন বলেন, আমরা ভুট্টার গাড়ির লোডের কাজ করি। আমাদের সর্দার স্পিরিট পান করান। আমি অল্প পরিমাণে খেয়েছিলাম। কয়েকদিন পর আমরা সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ি।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আফরিনা ইসলাম জানান, রোববার (১২ অক্টোবর) বিকালে লান্টু মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে জরুরি বিভাগে আনা হয়। পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি দুদিন আগে অ্যালকোহল পান করেছিলেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ওয়ার্ডে পাঠানো হয়, কিন্তু সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি খালেদুর রহমান বলেন, মদপানে ছয়জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মৃত্যুর কারণ ও অ্যালকোহলের উৎস অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।

পুলিশ জানায়, মৃতদের লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চুয়াডাঙ্গায় মদপানে ৬ জনের মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ০১:০৩:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি : 

চুয়াডাঙ্গা সদরের ডিঙ্গেদহে মদপানে ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া অসুস্থ হয়ে আলিম উদ্দিন নামে আরও এক দিনমজুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নিহতরা হলেন- নফরকান্দি গ্রামের ভ্যানচালক খেদের আলী (৪০), খেজুরা হাসপাতালপাড়ার মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলিম (৪০), পিরোজখালী স্কুলপাড়ার ভ্যানচালক মোহাম্মদ লান্টু ওরফে রিপু (৩০), শংকরচন্দ্র গ্রামের শ্রমিক মোহাম্মদ শহীদ (৪৫), ডিঙ্গেদহ টাওয়ারপাড়ার মিল শ্রমিক মোহাম্মদ সামির (৫৫) এবং এশিয়া বিস্কুট ফ্যাক্টরি পাড়ার শ্রমিক সরদার মোহাম্মদ লান্টু (৫২)।

তারা সবাই পেশায় দিনমজুর ও লেবারের কাজ করতেন বলে জানা গেছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জামাল আল নাসের আলী জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে ডিঙ্গেদহ বাজার এলাকায় কয়েকজন একসঙ্গে অ্যালকোহল পান করেন। এরপর একে একে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বিভিন্ন সময়ে ছয়জন মারা যান। রোববার (১২ অক্টোবর) রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও একজনের মৃত্যুর পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

তিনি বলেন, নিহতদের পরিবারের সদস্যরা শুরুতে বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। এখন পর্যন্ত চারজনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশ প্রত্যেকের বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করছে এবং ঘটনাটি তদন্ত করছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাতে ডিঙ্গেদহ বাজারে মদপানের পর শনিবার (১১ অক্টোবর) প্রথমে খেদের আলী ও সেলিম মারা যান। পরদিন রোববার (১২ অক্টোবর) আরও চারজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা গোপনে দাফন সম্পন্ন করলেও পরবর্তীতে বিষয়টি প্রকাশ পায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ডিঙ্গেদহ বাজারে গোপনে দেশি মদ বিক্রি হয়ে আসছে। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বলে তারা দাবি করেছেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আলিম উদ্দিন বলেন, আমরা ভুট্টার গাড়ির লোডের কাজ করি। আমাদের সর্দার স্পিরিট পান করান। আমি অল্প পরিমাণে খেয়েছিলাম। কয়েকদিন পর আমরা সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ি।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আফরিনা ইসলাম জানান, রোববার (১২ অক্টোবর) বিকালে লান্টু মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে জরুরি বিভাগে আনা হয়। পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি দুদিন আগে অ্যালকোহল পান করেছিলেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ওয়ার্ডে পাঠানো হয়, কিন্তু সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি খালেদুর রহমান বলেন, মদপানে ছয়জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মৃত্যুর কারণ ও অ্যালকোহলের উৎস অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।

পুলিশ জানায়, মৃতদের লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং এ ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে।