নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, শুধু রাজনীতিকে গণতন্ত্রায়ন করলে চলবে না, অর্থনীতিকেও গণতন্ত্রায়ন করতে হবে। মিডিয়াকেও গণতন্ত্রায়ন করতে হবে। শুধু ভোট দিয়ে সরকার গঠন করলেই গণতন্ত্র হবে না। প্রত্যেকটি জায়গায় যদি গণতন্ত্রের পতিফলন ঘটানো না যায়, তাহলে গণতন্ত্র কাজ করবে না।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে জিয়াউর রহমান স্টাডি সার্কেল আয়োজিত ‘ফ্যাসিস্ট আমলে গণমাধ্যম, বর্তমান অবস্থা: জনগণের প্রত্যাশা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, রাজনীতি শুধু গণতন্ত্রায়ন করলেই চলবে না। অর্থনীতিকেও গণতন্ত্রায়ন করতে হবে, মিডিয়াকেও গণতন্ত্রায়ন করতে হবে। গণতন্ত্র শুধু ভোট দিয়ে সরকার গঠন করলেই হবে না। প্রত্যেকটি জায়গায় যদি গণতন্ত্রের প্রতিফলন ঘটাতে না পারি, তাহলে গণতন্ত্র কাজ করবে না।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের নিজস্ব ব্যক্তিগত মতামত থাকবে, আদর্শ থাকবে। কিন্তু সাংবাদিকতায় সেটি প্রতিফলিত হওয়া উচিত না। তার কার্যক্রমের মধ্যে বস্তুনিষ্ঠতা থাকবে। বাংলাদেশ একটি বড় ক্রস রোডে আছে। দেশের মানুষের মনোজগতে যে আকাঙ্ক্ষার উদ্রেক হয়েছে সেটির প্রতিফলন আমাদের ঘটাতে হবে।
আমীর খসরু বলেন, অনেক সাংবাদিক দেশ থেকে চলে গেছে। অনেকে চাকরিচ্যুত হয়েছে, মানবেতর জীবনযাপন করেছে। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়ে যেই রেজিম সৃষ্টি করা হয়েছিল সেই রেজিম।
তিনি বলেন, এই রেজিমের কারণে শুধু সাংবাদিকরাই না, আমি মনে করি, কেউই স্বাধীনভাবে কোনো কাজ করতে পারেনি। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পারেনি।
খসরু বলেন, হাসিনাকে কখনোই সরকার বলতাম না। আমি সব সময় রেজিম শব্দটা ব্যবহার করতাম। কোনো দিনও আমি সরকার বলিনি। শেখ হাসিনার রেজিমের মধ্যে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, এটা কিন্তু ঘটারই কথা ছিল। আমি কিন্তু এই ঘটনাগুলোর কারণে মোটেও আশ্চর্য হইনি।
তিনি বলেন, এই ঘটনাগুলো ঘটতেই হত। আপনি যখন দেশের ক্ষমতাকে দখল করে, জনগণকে বাইরে রেখে, সাংবিধানিক-রাষ্ট্রীয় অধিকার কেড়ে নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন, সে জায়গায় গণমাধ্যমের অধিকার থাকবে এটি তো বিশ্বাস করার কোনো কারণ নাই। সুতরাং এটিই স্বাভাবিক ছিল।
আমীর খসরু বলেন, আজকের প্রেক্ষাপটে আমাদের নতুনভাবে চিন্তা করতে হবে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরে বাংলাদেশের মানুষের মনোজগতে যে প্রত্যাশা-আকাঙ্ক্ষা জেগেছে, যে রাজনীতিবিদ এবং যে রাজনৈতিক দল সেটা বুঝতে পারবে না, ধারণ করতে পারবে না, বাংলাদেশের রাজনীতিতে আগামী দিনে তাদের জন্য কোনো জায়গা থাকবে না। নতুন বাংলাদেশে মানুষের আকাঙ্ক্ষা-প্রত্যাশার জায়গাটা অন্য জায়গায় চলে গেছে। যে সব রাজনৈতিক দল বুঝবে না, তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে।
সেমিনারে জিয়াউর রহমান স্টাডি সার্কেলের প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ কাশেমের সভাপতিত্বে ও ডিআরইউ এর সাবেক সভাপতি মোরসালিন নোমানির সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খালেদা জিয়ার সাবেক সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব আশিক ইসলাম।
মূল প্রবন্ধে আশিক ইসলাম গত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের গণমাধ্যমের দুরাবস্থার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। পাশাপাশি গণমাধ্যমের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে ভবিষ্যতে গণমাধ্যম নিয়ে তিনি তার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ডেপুটি চিফ নিউজ এডিটর এ জে এম রাজিব হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম প্রমুখ।