Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন করলেন তারেক রহমান-মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। কর্মসূচির প্রথম দিনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যপদ নবায়ন করেছেন।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে নিজের সদস্যপদ নবায়ন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তারেক রহমান।

এ ছাড়া মঞ্চে উপস্থিত থাকা সভাপতি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সদস্যপদ নবায়ন করে।

মেধাবী ও আদর্শবান লোকদেরকে দলে আনার জন্য নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, যারা মেধাবী মানুষ, সেই মানুষগুলোকে আমাদের সামনে নিয়ে আসতে হবে। যারা পরিশ্রমী, সততা, আদর্শ আছে এরকম মানুষগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। আরও বেশি করে দলের কাছে নিয়ে আসতে হবে, দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। আমাদের ভালো মানুষ দরকার, অ্যাফেকটিভ মানুষ আমাদের আগামী দিনে দরকার। কারণ এ রাষ্ট্রকে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার ধ্বংস করে দিয়েছে, অনেক পেছনে নিয়ে গেছে। কাজেই আমাদের দলকে যদি পুনর্গঠিত করতে হয় সেরকম মানুষ দরকার। সেই রকম মানুষকে বের করে নিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, দলকে যত শক্তিশালী পুনর্গঠিত করতে পারব, আগামী দিনে আমাদের ৩১ দফার মাধ্যমে রাষ্ট্র দ্রুত আমরা মেরামত করতে পারব, রাষ্ট্রকে পুনর্গঠন করতে পারব।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের সমর্থন পাওয়ার পর দেশকেও পুনর্গঠন করতে হবে। দেশকে পুনর্গঠন করার জন্য রাষ্ট্রকে মেরামত করার জন্য আমরা ৩১ দফা দেশের সামনে, দেশের মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছি। সেটিকে যদি বাস্তবায়ন করতে হয় অবশ্যই দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে পুনর্গঠিত করতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, সদস্যপদ নবায়ন করার দিনটি আমাদের জন্য আনন্দের। দীর্ঘদিন গ্রাম-গঞ্জের অসংখ্য নেতাকর্মী অবর্ণনীয় নির্যাতনের মধ্য দিয়ে গেছেন। দেশের ওপর দিয়ে একটা ঝড় গেছে। যাতে দেশটি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। প্রত্যেক সেক্টরকে লণ্ডভণ্ড করে দেয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের গুম-খুন করা হয়েছে। বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের গুম-খুন ও পঙ্গু করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোকেও নিষ্পেষিত করা হয়েছে। এখন সেই ঝড় কেটে গেছে। তবে মানুষ ঝড়ের পর কিন্তু লণ্ডভণ্ড অবস্থার পুনর্গঠন করে। এই ঝড়ে আমাদের বহু সহকর্মীকে হারিয়েছি। অনেকেই হয়তো রাজনীতি থেকে সরে গেছে। যেই মানুষেরা এখনো দল ধরে রেখেছে তাদের আবারো আমরা একত্রিত করতে চাই। সেজন্যই সদস্যপদ নবায়ন কার্যক্রম শুরু। যা আমরা সারা দেশে লাখ কোটি নেতাকর্মীর মাঝে আনন্দ ছড়িয়ে দিতে চাই।

তারেক রহমান বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে চাই, ইনশাআল্লাহ জনগণের সমর্থন পাবো। দল পুনর্গঠনের পর আমরা রাষ্ট্রকেও পুনর্গঠন করবো। ৩১ দফা কার্যকর করা হবে। সেজন্য মেধাবী, সততা ও আদর্শবান মানুষকে দলে আনতে হবে। দলকে সমৃদ্ধ করতে হবে। আমাদের ভালো মানুষ দরকার। রাষ্ট্র থেকে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সেজন্যই কাজের লোকদের বের করে আনতে হবে। যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকরা কিন্তু এই কাজ বাস্তবায়ন করবেন। সারাদেশের নেতাকর্মী ও মানুষ আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছেন। অতীতের মতোই আপনারা এই কর্মসূচিটি সফল করবেন।

তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, গতবার কিন্তু আমাদের কর্মসূচিতে একটি দুর্বলতা ছিল। এবার আমরা সেটিকে পাশ কাটিয়ে তৃণমূলের আরো গভীরে যাবো। আমাদের কোনো বক্তৃতা নেই। দরকার কাজ। যে উদ্যোম নিয়ে আমরা স্বৈরাচারের শত নির্যাতনেও দমে যাইনি বরং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। আসুন আমরা সবাই মিলে কাজ শুরু করি যাতে আমরা দল এবং দেশকে পুনর্গঠন করতে পারি।

দেশের বর্তমান রাজনীতিতে স্লোগান নয়, বরং মেধা ও বুদ্ধির প্রতিযোগিতা চলছে বলে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখন রাজনীতিতে যে প্রতিযোগিতা চলছে, এটি কিন্তু স্লোগান দেওয়ার প্রতিযোগিতা নয়। এখন কিন্তু মেধা এবং বুদ্ধির প্রতিযোগিতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় কে কেমন লিখতে পারেন, কে কেমন কথা বলতে পারেন, তার প্রতিযোগিতা চলছে। এ বিষয়গুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে। শুধু স্লোগান দিয়ে সামনের যুদ্ধ জয় করতে পারবো না।

মির্জা ফখরুল বলেন, যারা সদস্য ছিলেন তাদের পদই নবায়ন হবে। এ নবায়ন ফরমগুলো জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে যাবে। এক্ষেত্রে আমাদের সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদককে এই কাজ নিশ্চিত করতে হবে। এটি করা গেলে আমরা এক মাসের মধ্যে তৃণমূলে পৌঁছে যেতে পারবো। এক্ষেত্রে সদস্যদের জানাতে হবে, আপনার সদস্যপদ নবায়ন হচ্ছে। যদি তিনি না জানেন তবে আগ্রহ হারাবেন।

এক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি বলেন, অতীতে যেটা হয়েছে, বিশেষ করে আমাদের যারা এমপি পদপ্রার্থী, তারা সবগুলো কিনে নিয়ে চলে গেছেন। এই জিনিসটা খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

‘এটি যেন সাংগঠনিকভাবেই যায়। যারা এমপি পদপ্রত্যাশী তারা যেন আবার সেগুলো নিয়ে চলে না যায়।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে খুব বেশি। নেতাকর্মীরা কেন জানি না রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে কিছু কর্মীর স্লোগানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এটি রাজনীতি না। কোনো রাজনৈতিক কর্মীর মুখ থেকে এ ধরনের স্লোগান আসা উচিত নয়। এটি রাজনীতির কত বড় দেউলিয়াপনা হতে পারে তা এখান থেকে বোঝা যায়। এ জায়গাটাতে আমাদের একটা চরম দৈন্যতা আছে। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত। এক্ষেত্রে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উদ্যোগ নেবেন বলে নিজের বিশ্বাসের কথা জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিটি জেলা-উপজেলায় রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ খুব জরুরি। কিভাবে বক্তৃতা করতে হবে, কিভাবে একটা সভা চলে, কিভাবে উপস্থাপনা করবেন, এড্রেস কিভাবে করবেন- এই জিনিসগুলোর খুব বেশি প্রয়োজন।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, সত্যিকার অর্থে আমাদের একটি রাজনৈতিক দল তৈরি করা দরকার। একটি পলিটিক্যাল পার্টি তৈরি করা দরকার। আমাদের এখন সত্যিকার অর্থেই একটি আদর্শিক রাজনৈতিক দলে পরিণত হতে হবে।

তিনি বলেন, সামনে যখন আমরা দলে রিক্রুট করবো তখন যেন ভালো ও মেধাবী মানুষদের সদস্য করি। দল যেন সামনে আরও শক্তিশালী হয়।

প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত বক্তব্য দেন।

প্রাথমিক সদস্যপদ নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী দিনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুস সালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবে রহমান শামীম, শ্যামা ওবায়েদ, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, শরীফুল আলমসহ সাংগঠনিক সম্পাদক, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক, মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি, বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যানসহ উপস্থিত নেতারা তাদের সদস্যপদ নবায়ন করেন।

আবহাওয়া

সাবেক মন্ত্রী দস্তগীরের ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন করলেন তারেক রহমান-মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৯:২৩:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। কর্মসূচির প্রথম দিনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যপদ নবায়ন করেছেন।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে নিজের সদস্যপদ নবায়ন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তারেক রহমান।

এ ছাড়া মঞ্চে উপস্থিত থাকা সভাপতি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সদস্যপদ নবায়ন করে।

মেধাবী ও আদর্শবান লোকদেরকে দলে আনার জন্য নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, যারা মেধাবী মানুষ, সেই মানুষগুলোকে আমাদের সামনে নিয়ে আসতে হবে। যারা পরিশ্রমী, সততা, আদর্শ আছে এরকম মানুষগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। আরও বেশি করে দলের কাছে নিয়ে আসতে হবে, দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। আমাদের ভালো মানুষ দরকার, অ্যাফেকটিভ মানুষ আমাদের আগামী দিনে দরকার। কারণ এ রাষ্ট্রকে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার ধ্বংস করে দিয়েছে, অনেক পেছনে নিয়ে গেছে। কাজেই আমাদের দলকে যদি পুনর্গঠিত করতে হয় সেরকম মানুষ দরকার। সেই রকম মানুষকে বের করে নিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, দলকে যত শক্তিশালী পুনর্গঠিত করতে পারব, আগামী দিনে আমাদের ৩১ দফার মাধ্যমে রাষ্ট্র দ্রুত আমরা মেরামত করতে পারব, রাষ্ট্রকে পুনর্গঠন করতে পারব।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের সমর্থন পাওয়ার পর দেশকেও পুনর্গঠন করতে হবে। দেশকে পুনর্গঠন করার জন্য রাষ্ট্রকে মেরামত করার জন্য আমরা ৩১ দফা দেশের সামনে, দেশের মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছি। সেটিকে যদি বাস্তবায়ন করতে হয় অবশ্যই দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে পুনর্গঠিত করতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, সদস্যপদ নবায়ন করার দিনটি আমাদের জন্য আনন্দের। দীর্ঘদিন গ্রাম-গঞ্জের অসংখ্য নেতাকর্মী অবর্ণনীয় নির্যাতনের মধ্য দিয়ে গেছেন। দেশের ওপর দিয়ে একটা ঝড় গেছে। যাতে দেশটি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। প্রত্যেক সেক্টরকে লণ্ডভণ্ড করে দেয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের গুম-খুন করা হয়েছে। বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতাকর্মীদের গুম-খুন ও পঙ্গু করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোকেও নিষ্পেষিত করা হয়েছে। এখন সেই ঝড় কেটে গেছে। তবে মানুষ ঝড়ের পর কিন্তু লণ্ডভণ্ড অবস্থার পুনর্গঠন করে। এই ঝড়ে আমাদের বহু সহকর্মীকে হারিয়েছি। অনেকেই হয়তো রাজনীতি থেকে সরে গেছে। যেই মানুষেরা এখনো দল ধরে রেখেছে তাদের আবারো আমরা একত্রিত করতে চাই। সেজন্যই সদস্যপদ নবায়ন কার্যক্রম শুরু। যা আমরা সারা দেশে লাখ কোটি নেতাকর্মীর মাঝে আনন্দ ছড়িয়ে দিতে চাই।

তারেক রহমান বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে চাই, ইনশাআল্লাহ জনগণের সমর্থন পাবো। দল পুনর্গঠনের পর আমরা রাষ্ট্রকেও পুনর্গঠন করবো। ৩১ দফা কার্যকর করা হবে। সেজন্য মেধাবী, সততা ও আদর্শবান মানুষকে দলে আনতে হবে। দলকে সমৃদ্ধ করতে হবে। আমাদের ভালো মানুষ দরকার। রাষ্ট্র থেকে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। সেজন্যই কাজের লোকদের বের করে আনতে হবে। যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকরা কিন্তু এই কাজ বাস্তবায়ন করবেন। সারাদেশের নেতাকর্মী ও মানুষ আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছেন। অতীতের মতোই আপনারা এই কর্মসূচিটি সফল করবেন।

তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, গতবার কিন্তু আমাদের কর্মসূচিতে একটি দুর্বলতা ছিল। এবার আমরা সেটিকে পাশ কাটিয়ে তৃণমূলের আরো গভীরে যাবো। আমাদের কোনো বক্তৃতা নেই। দরকার কাজ। যে উদ্যোম নিয়ে আমরা স্বৈরাচারের শত নির্যাতনেও দমে যাইনি বরং স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। আসুন আমরা সবাই মিলে কাজ শুরু করি যাতে আমরা দল এবং দেশকে পুনর্গঠন করতে পারি।

দেশের বর্তমান রাজনীতিতে স্লোগান নয়, বরং মেধা ও বুদ্ধির প্রতিযোগিতা চলছে বলে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখন রাজনীতিতে যে প্রতিযোগিতা চলছে, এটি কিন্তু স্লোগান দেওয়ার প্রতিযোগিতা নয়। এখন কিন্তু মেধা এবং বুদ্ধির প্রতিযোগিতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় কে কেমন লিখতে পারেন, কে কেমন কথা বলতে পারেন, তার প্রতিযোগিতা চলছে। এ বিষয়গুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে। শুধু স্লোগান দিয়ে সামনের যুদ্ধ জয় করতে পারবো না।

মির্জা ফখরুল বলেন, যারা সদস্য ছিলেন তাদের পদই নবায়ন হবে। এ নবায়ন ফরমগুলো জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে যাবে। এক্ষেত্রে আমাদের সাংগঠনিক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদককে এই কাজ নিশ্চিত করতে হবে। এটি করা গেলে আমরা এক মাসের মধ্যে তৃণমূলে পৌঁছে যেতে পারবো। এক্ষেত্রে সদস্যদের জানাতে হবে, আপনার সদস্যপদ নবায়ন হচ্ছে। যদি তিনি না জানেন তবে আগ্রহ হারাবেন।

এক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি বলেন, অতীতে যেটা হয়েছে, বিশেষ করে আমাদের যারা এমপি পদপ্রার্থী, তারা সবগুলো কিনে নিয়ে চলে গেছেন। এই জিনিসটা খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

‘এটি যেন সাংগঠনিকভাবেই যায়। যারা এমপি পদপ্রত্যাশী তারা যেন আবার সেগুলো নিয়ে চলে না যায়।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে খুব বেশি। নেতাকর্মীরা কেন জানি না রাজনীতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে কিছু কর্মীর স্লোগানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এটি রাজনীতি না। কোনো রাজনৈতিক কর্মীর মুখ থেকে এ ধরনের স্লোগান আসা উচিত নয়। এটি রাজনীতির কত বড় দেউলিয়াপনা হতে পারে তা এখান থেকে বোঝা যায়। এ জায়গাটাতে আমাদের একটা চরম দৈন্যতা আছে। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত। এক্ষেত্রে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উদ্যোগ নেবেন বলে নিজের বিশ্বাসের কথা জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিটি জেলা-উপজেলায় রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ খুব জরুরি। কিভাবে বক্তৃতা করতে হবে, কিভাবে একটা সভা চলে, কিভাবে উপস্থাপনা করবেন, এড্রেস কিভাবে করবেন- এই জিনিসগুলোর খুব বেশি প্রয়োজন।

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, সত্যিকার অর্থে আমাদের একটি রাজনৈতিক দল তৈরি করা দরকার। একটি পলিটিক্যাল পার্টি তৈরি করা দরকার। আমাদের এখন সত্যিকার অর্থেই একটি আদর্শিক রাজনৈতিক দলে পরিণত হতে হবে।

তিনি বলেন, সামনে যখন আমরা দলে রিক্রুট করবো তখন যেন ভালো ও মেধাবী মানুষদের সদস্য করি। দল যেন সামনে আরও শক্তিশালী হয়।

প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত বক্তব্য দেন।

প্রাথমিক সদস্যপদ নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী দিনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুস সালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবে রহমান শামীম, শ্যামা ওবায়েদ, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, শরীফুল আলমসহ সাংগঠনিক সম্পাদক, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক, মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি, বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যানসহ উপস্থিত নেতারা তাদের সদস্যপদ নবায়ন করেন।