লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, এখন পর্যন্ত এরা (আওয়ামী লীগ) জাতির কাছে ক্ষমা চায়নি। উল্টো আমাদের থ্রেট করছে, ধমক দিচ্ছে। এ থ্রেট পুরো জাতিকে, পুরো বাংলাদেশের জনগণকে করছে। কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে আমাদের পৌঁছাতে হবে। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশকে আমরা সুন্দর দেশ হিসেবে দেখতে চাই।

রোববার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে লক্ষ্মীপুর জেলা আউটার স্টেডিয়ামে আয়োজিত তাঁতবস্ত্র দেশীয় শিল্প ও পণ্য মেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ মেলার আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, একসময় আওয়ামী লীগ মিছিল করেছে। এখন তারা সেই মিছিলের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। আমরা যারা লড়াই-সংগ্রাম, অত্যাচারিত-নির্যাতিত, গুম-খুনের শিকার হয়েছি, যদি আমরা এখন সজাগ না থাকি, তারা এ বিপ্লবকে নস্যাৎ করে ফেলবে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যদিয়ে আমরা স্বাভাবিক পরিবেশ পেয়েছি। সজাগ ও সতর্ক না থাকলে ওই হায়নারা আবারো আমাদের পরিবেশ বিনষ্ট করতে পারে। কারণ বিভিন্নভাবে তারা ষড়যন্ত্র করে চলেছে। পুরোনো মিছিলের ছবি-ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। আর পার্শ্ববর্তী দেশে বসে বলছে, ‘যে কোনো সময় চলে আসবো’।

এ্যানি বলেন, বিএনপি ও ছাত্ররা আন্দোলন করছে দেশ-জনগণের জন্য। সুতরাং আমাদের টার্গেট আর ছাত্রদের টার্গেট এক। একই লক্ষ্যে পৌঁছাতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এখানে সুযোগ নেওয়ার জন্য অনেকেই দুর্বল পয়েন্ট তৈরি করে দেবে। সেখানেও কোনো সুযোগ দেওয়া যাবে না। আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকবে, কিন্তু প্রতিহিংসার কোনো সুযোগ নেই।

বিএনপিসহ সমমনা সব দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের সকলকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকবে, কিন্তু প্রতিহিংসার কোনো সুযোগ নেই। নয়তো পরাজিত আওয়ামী লীগ সুযোগ নিয়ে আবার দেশে বিশৃঙ্খলা করতে পারে। কারণ তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ছাত্রদের আহ্বানে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি এবং হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তিনি পালিয়ে গিয়ে এখন আবার ষড়যন্ত্র করছেন।

বর্তমান প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, ভবিষ্যতে মেধার ভিত্তিতে আপনাদের জায়গা খুঁজতে হবে। আপনারা মেধার জন্য আন্দোলন করেছেন। আমার কাছে অনেক তদবির আসে, বিভিন্ন চাকরির জন্য। চাকরি তো আপনি করবেন, কিন্তু মেধার ভিত্তিতে আসতে হবে। সুতরাং আমার মনে হয় তদবিরটা কমিয়ে কীভাবে মেধার প্রতিযোগিতায় সেখানে যেতে পারেন, সেই চেষ্টা আপনারা করবেন।

খেলাধুলা নিয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেক ক্লাব উৎসবমুখর ও জমজমাট রাখতে হবে। ক্রীড়াঙ্গন উৎসবমুখর রাখলে মাদক স্পর্শ করতে পারবে না। বিগত সরকার শুধু অবৈধ সরকার নয়, মাদকেরও সরকার ছিল। তারা মাদক দিয়ে এ প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল। এরা এ প্রজন্মকে ধ্বংসের জন্য যত রকমের অপকৌশল আছে, ষড়যন্ত্র আছে সবকিছু তারা এবং ভারত একসঙ্গে মিলে করেছে।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ও লক্ষ্মীপুর জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাঈন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ, লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আহমেদ ফেরদৌস মানিক, সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সালেহ উদ্দিন, জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আবদুর রব শামীম, মহসিন কবির স্বপন ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম প্রমুখ।