নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাচিত সরকার সংস্কারের বড় গেইট উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই গেইট দিয়ে দেশকে ঠিক করতে হবে। বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, শেখ হাসিনার মতো মুক্তিযুদ্ধের আগে শেখ মুজিবও পাকিস্তানে পালিয়ে যায়।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে আগামী ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। শেখ মুজিব ১৯৭১সালে পালিয়ে ছিলেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে গ্রেফতার হওয়ার জন্য বাসায় বসে ছিলেন। সেটি আওয়ামী লীগ নেতা তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে তার বইয়ে লিখেছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ৭ নভেম্বর বিপ্লবের নায়ক সাধারণ সিপাহী ও জনতা। ৭ নভেম্বরের বিপ্লব নতুন করে বাংলাদেশকে বিনির্মাণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সেদিন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সামনে না এলে বাংলাদেশ কী হতো? এ কথা বলা যায় না। হয়তো এ দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতো। তিনি নেতৃত্ব দিয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বাকশাল গঠনের মাধ্যমে রক্ষীবাহিনী গঠন করেছিল। এই রক্ষীবাহিনী কত মানুষকে হত্যা করেছে, তার কোনো হিসাব নেই। ওই সময় জাসদের নেতাকর্মীদেরকে হত্যা করেছিল এই রক্ষীবাহিনী।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে একটা আশার আলো তৈরি করেছিলেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন, গণমাধ্যমকে মুক্ত করে দেন। গার্মেন্টসশিল্প ও বিদেশে কর্মী পাঠিয়ে রেমিট্যান্স আনার যে প্রবণতা, এর সূচনা করেছিলেন তিনি। খাল কাটা কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষিতে বিপ্লব এনেছিলেন জিয়াউর রহমান।
তিনি আরো বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ওপর থেকে চেপে এসে ক্ষমতায় বসেননি। তিনি জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে ক্ষমতায় বসে ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ফখরুল বলেন, তারা ১৫ বছর ধরে জনগণের ওপর নির্মম নির্যাতন করেছিল। এরা দেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে। আমাদের ৬০ লাখ নারী-পুরুষ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। ইলিয়াস আলীসহ ৬ শ’র বেশি নেতাকর্মীকে গুম করেছে তারা।
ছাত্র জনতার দৃঢ়তার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে সরানো গেছে বলে মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন মির্জা ফখরুল।
‘বুকে চেপে থাকা দানব সরে গেছে, কিন্তু আমাদের সজাগ ও সচেতন হতে হবে’ এমন আহ্বান জানিয়ে নেতাকর্মীদের তিনি বলেন, ‘জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারই শ্রেষ্ঠ সরকার।’
‘বিপদ শেষ হয়নি, নতুন করে বিপদ আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে’ ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির ওপর সবসময় আঘাত এসেছে। আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে। বহু চেষ্টা করে কেউ বিএনপিকে ভাঙতে পারেনি। বিএনপির সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে নারীরা।
জাতীয়বাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা। সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহাম্মেদ।