নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দুর্নীতির বিষয়ে সরকার নির্বিকার নয়, প্রধানমন্ত্রীর কাছে সব খবর আছে। দুর্নীতিবাজরা বিচারের আওতায় আসছে।
শুক্রবার (৩১ মে) আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্নীতি যে কেউ করে বসতে পারে। এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু সে বিষয়ে সরকার নির্বিকার কিনা এটাই দেখার বিষয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সব খবর আছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার নির্বিকার নয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সব খবর আছে। প্রধানমন্ত্রী অফিসের কিছু লোককেও শাস্তি দিয়েছেন। খালেদা জিয়ার আমলে তারা কি কাউকে শাস্তি দিয়েছিল? তখন প্রধানমন্ত্রীর অফিস ছিল দুর্নীতি আখড়া।
তিনি বলেন, বিএনপির আমলে হাওয়া ভবনের নির্দেশে চলতো সারাদেশের দুর্নীতি। তারা কি তাদের লুটপাটের আমলে কাউকে শাস্তি দিয়েছে?
নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের নামে কারফিউ গণতন্ত্র চালু করেছে। ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি তারা এক প্রহসনমূলক নির্বাচন করেছে। আমরা সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রেখে নির্বাচন করেছি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা বিএনপি তামাশায় পরিণত করেছে, তাদের মুখে গণতন্ত্রের বুলি ভূতের মুখে রাম নাম।
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দেশত্যাগ ও গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাকে গ্রেপ্তার করা হবে কি না বিষয়টি আদালত দেখবে। এছাড়া তার বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে আমরা অবগত নই। তার বিরুদ্ধে যে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়েও আমরা অবগত নই।
আজিজ-বেনজিরের দায় আওয়ামী লীগ এড়াতে পারে না— বিএনপির এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্র পড়েছেন? মির্জা ফখরুল কত বছর থাকতে পারেন? আগামী বছর, এই ডিসেম্বরের পরের ডিসেম্বরে আমার টার্ম শেষ। সম্মেলন হবে যথাসময়ে। মির্জা ফখরুল কত বছর ধরে তার গঠনতন্ত্রকে লঙ্ঘন করে বিএনপির মহাসচিব? একটা দল, তারা নিজেদের ঘরেই গণতন্ত্রের চর্চা করে না। তারা দেশে গণতন্ত্র কীভাবে প্রতিষ্ঠা করবে?
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুলের কি বৈধ অধিকার রয়েছে? তার গঠনতন্ত্র সে লঙ্ঘন করেছে। সম্মেলন ছাড়া মহাসচিব, কত বছর! সেটা আগে জিজ্ঞেস করেন।
বেনজির আহমেদকে গ্রেপ্তার করা উচিত কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটার তো প্রক্রিয়া আছে। সে প্রক্রিয়ায় দুদক তদন্ত করছে। মামলার পর আদালত ঠিক করবে, কখন গ্রেপ্তার করবে, জেলে পাঠাবে। এটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, আমরা যা আছি, আমরাই। আমরা আমাদের গণতন্ত্র নিয়ে আছি। পৃথিবীর অনেক দেশের চাইতে আমাদের গণতন্ত্র ঘরেও ভালো, বাইরেও ভালো।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলা গণতন্ত্রের প্রবক্তাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকে গণতন্ত্রের জন্য কঙ্গো, হাইতি, রোয়ান্ডা কে জবাবদিহি করতে হয় না, প্রশ্ন করে না। আমরা নির্বাচন নিয়মিত করে আসছি। পার্ফেক্ট ডেমোক্রেসি কোথাও নাই। তবে পার্ফেক্ট হওয়ার কাছাকাছি। এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক, এটা আমরা প্রমাণ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আজকে গণতন্ত্রের জন্য কঙ্গো, হাইতি, রুয়ান্ডাকে জবাবদিহি করতে হয় না, প্রশ্ন করে না। আমরা নির্বাচন নিয়মিত করে আসছি। পার্ফেক্ট ডেমোক্রেসি কোথাও নাই। তবে পার্ফেক্ট হওয়ার কাছাকাছি। এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক, এটা আমরা প্রমাণ করেছি।’
তিনি আরো বলেন, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের নির্বাচনসহ বিশ্বের ৬৪টি দেশে নির্বাচন হচ্ছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে নভেম্বরে, জুলাইতে যুক্তরাজ্যেতে, ভারতে নির্বাচন শেষ প্রায়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পৃথিবীতে যারা নিজেদের কে গণতন্ত্র মানবাধিকারের প্রবক্তা বলে দাবি করেন, রাফায় একটা অফেনসিভে ৪৫ জন নর-নারী শিশু একদিনের মেরে ফেলা হয়েছে। সারা দুনিয়া এমন কি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কনডেম করলো। সেখানে যদি মানবতার প্রবক্তাদের থেকে নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, রাফায় এখনো রেডলাইন অতিক্রম করেনি। তাহলে মানবাধিকার কোথায়?
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনিসুল ইসলাম প্রমুখ।