Dhaka সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সব চোর-চোট্টা-খুনি ডাকাত মিলে আওয়ামী লীগের দল : মান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সব চোর-চোট্টা-খুনি ডাকাত মিলে আওয়ামী লীগের দল বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

শনিবার (২৫ মে) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, পত্রিকায় দেখলাম, আওয়ামী লীগ তিনটা কারণে অস্বস্তিতে আছে। আজিজ, বেনজীর এবং একজন এমপির কারণে। তিনি (আনোয়ারুল আজীম আনার) এমপি নাকি? জনগণ ভোট দিয়েছে? দেয় নাই। সেই এমপি যার নামে রেড এলার্ট ছিল। যার নামে খুনের মামলা ছিল, যার নামে ধর্ষণ-লুট সব ধরনের মামলা ছিল এবং সেই এমপি নিজেই বলেছিলেন, আমি প্রথমবার যখন এমপি হয়েছি তখন কয়েকটা মামলা উঠে গেছে। তার পরে ধীরে ধীরে এবার এমপি হবার পর আমার নামে সব মামলা উঠে গেছে। সব চোর-চোট্টা-খুনি ডাকাত মিলে আওয়ামী লীগের দল।’

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকার সবখানে দুর্বল। জনগণ বলেছিল- পাঁচ বছর টিকে থাকারৃ আমি বলি, পাঁচ বছর টেকার কোনো কারণ নাই। এবার যদি সবাই এক সঙ্গে রাস্তায় নামি, তাহলে সরকারের ঘণ্টা বেজে যাবে। মানুষ তৈরি, ওই রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে। সব পেশার মানুষ জেগে গেছে। আগামীতে আরও বড় সুসংবাদ পাবেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ কষ্টে আছে, এই সরকার সমস্যার মধ্যে আছে। আমি দেশের কোনো অংশ কারও কাছে বন্ধক দিয়ে, বিক্রি করে ক্ষমতায় থাকতে চাই না। আগে যেরকম বলেছিলে, ওরা আমার কাছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ চেয়েছিল আমি দেই নাই। কারা? বলেছিল, মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র নাকি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ চায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, সেন্ট মার্টিন কেন, আমরা বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও চাইনি। তারপর আর সেই কথা বলেনি।’

তিনি আরো বলেন, এক সাদা চামড়ার লোক নাকি তাকে (শেখ হাসিনা) প্রস্তাব দিয়েছেন ওই রাইখাইনদের একটা অংশ নিয়ে আর পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে নতুন একটা খ্রিস্টান রাজ্য গড়ে তুলতে হবে। আমি প্রথম বলতে চাই, আমার দেশের মাটি নিয়ে কেউ আরেকটা রাষ্ট্র করতে চায়, এরকম কথা যেই বলুক আমরা তার বিরুদ্ধে আছি। কিন্তু কে বলেছে? শেখ হাসিনা তিনবার নাকি চারবারের প্রধানমন্ত্রী। তথাকথিত চারবারের প্রধানমন্ত্রী কত বড় দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি করেছেন।

‘তার কাছে প্রস্তাবটা কে দিয়েছে? এক সাদা চামড়া বললে তো হবে না। চামড়া সাদা তো বৃটিশদেরও, ইউরোপিয়ানদের, কানাডিয়ানদের, জাপানিজদের আর যদি কারো ধাবলকুষ্ঠ হয় তাহলে পুরোটাই সাদা। কোন সাদা চামড়ার লোক আপনাকে এই প্রস্তাব দিয়েছে, সেটা বলতে হবে’— বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, উনি সেটা বলতে পারবেন না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, কোন মানুষ, কোন সরকার, কোন দেশ আপনার কাছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চায়। কাহিনী বানিয়ে মনে করবেন কান্না-কাটি করব আর আপনার দুঃখে বোধহয় সবার মন গলে যাবে আর আপনাকে বলবে, আপনিই থাকেন— আমরা সেই বান্দা নই।

মান্না বলেন, সরকার সমস্যায় আছে। তার তৈরি সেনা বাহিনী প্রধানের নামে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কি কারণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে? সরাসরি বলেছে দুর্নীতির কারণে। দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যবসা পাইয়ে দিয়েছে নিজের ভাইদের, দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের ভাই খুনের আসামি তাকে জেল থেকে মুক্ত করে দিয়েছে। আমার মনে প্রশ্ন হয়, ওই যে, খুনের আসামিকে জেল থেকে মুক্ত করে দিল, ওটা শুধু জেনারেল আজিজ বলেছেন তাই হয়েছে, প্রেসিডেন্টের সই করতে হয়নি, যিনি তখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন তাকে তার প্রধানমন্ত্রী রিকোয়েস্ট করে বলেন নাই, তাকে ছেড়ে দেন।

অতএব স্যাংশন যদি ঠিক মতো হয়, তাহলে শুধু সেনা প্রধান খাবেন না, তৎকালীন রাষ্ট্রপতিও খাবেন, এখনকার এবং তখনকার যে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও স্যাংশন খাবেন। অপেক্ষা করেন, আমেরিকার স্যাংশন দিতে হবে না, আমরাই আপনাকে স্যাংশন দেব। সেই পথ তৈরি হচ্ছে, সেই পথে মানুষ এখন যাচ্ছে’— বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না।

সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ভাবতে পারেন একটা লোক কত ধরনের দুর্নীতি করেছে। একজনকে র‌্যাব প্রধান বানিয়েছিলেন, তারপরে পুলিশ প্রধান, তারপরে তার নামে পুরো বাহিনীরই বদনাম হয়েছে, র‌্যাব স্যাংশন খেয়েছে, এখন আবার তার নামে আমেরিকা নয়, বিদেশ নয়, দেশের মধ্য থেকে তদন্ত হচ্ছে। সব একাউন্ট জব্দ, বন্ধ এবং তার যত সম্পত্তি আছে সব কিছু বাজেয়াপ্ত।’

মান্না বলেন, ‘আমার জানতে ইচ্ছা করে বেনজীর আহমেদের কত টাকা আছে ব্যাংকে? এই যে এত দিন পরে তার ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করলেন। কেন এত দিন সময় দিলেন? মানে মাল যা কামিয়েছে সেইগুলো বাইরে ট্রান্সফার করে দেওয়ার জন্য? পত্রিকায় দেখলাম বেনজীর ও তার পরিবারের সম্পত্তির পরিমান ৩৪২ বিঘা। তার ব্যাংকে কত টাকা ছিল সেটা তাদের জানবার কথা। আমি দাবি করছি তাও জানান, আমি দাবি করছি কেন এত দিন পরে তার নামে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হল? ওই কোর্টকে জিজ্ঞাসা করেন, দুদক যখন তদন্ত করতে চেয়েছিল তখন হাইকোর্ট কেন তদন্ত বন্ধ করেছিল, কার নির্দেশে?’

জাতীয়তাবাদী মোটর চালক দলের সভাপতি সেলিম রেজা বাবুর সভাপতিত্বে এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, বিএনপির সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি আ ন ম খলিলুর রহমান, ভিপি ইব্রাহিম, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আজমল হোসেন পাইলট প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সব চোর-চোট্টা-খুনি ডাকাত মিলে আওয়ামী লীগের দল : মান্না

প্রকাশের সময় : ০৮:২৭:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সব চোর-চোট্টা-খুনি ডাকাত মিলে আওয়ামী লীগের দল বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

শনিবার (২৫ মে) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, পত্রিকায় দেখলাম, আওয়ামী লীগ তিনটা কারণে অস্বস্তিতে আছে। আজিজ, বেনজীর এবং একজন এমপির কারণে। তিনি (আনোয়ারুল আজীম আনার) এমপি নাকি? জনগণ ভোট দিয়েছে? দেয় নাই। সেই এমপি যার নামে রেড এলার্ট ছিল। যার নামে খুনের মামলা ছিল, যার নামে ধর্ষণ-লুট সব ধরনের মামলা ছিল এবং সেই এমপি নিজেই বলেছিলেন, আমি প্রথমবার যখন এমপি হয়েছি তখন কয়েকটা মামলা উঠে গেছে। তার পরে ধীরে ধীরে এবার এমপি হবার পর আমার নামে সব মামলা উঠে গেছে। সব চোর-চোট্টা-খুনি ডাকাত মিলে আওয়ামী লীগের দল।’

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকার সবখানে দুর্বল। জনগণ বলেছিল- পাঁচ বছর টিকে থাকারৃ আমি বলি, পাঁচ বছর টেকার কোনো কারণ নাই। এবার যদি সবাই এক সঙ্গে রাস্তায় নামি, তাহলে সরকারের ঘণ্টা বেজে যাবে। মানুষ তৈরি, ওই রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে। সব পেশার মানুষ জেগে গেছে। আগামীতে আরও বড় সুসংবাদ পাবেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ কষ্টে আছে, এই সরকার সমস্যার মধ্যে আছে। আমি দেশের কোনো অংশ কারও কাছে বন্ধক দিয়ে, বিক্রি করে ক্ষমতায় থাকতে চাই না। আগে যেরকম বলেছিলে, ওরা আমার কাছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ চেয়েছিল আমি দেই নাই। কারা? বলেছিল, মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র নাকি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ চায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, সেন্ট মার্টিন কেন, আমরা বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও চাইনি। তারপর আর সেই কথা বলেনি।’

তিনি আরো বলেন, এক সাদা চামড়ার লোক নাকি তাকে (শেখ হাসিনা) প্রস্তাব দিয়েছেন ওই রাইখাইনদের একটা অংশ নিয়ে আর পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে নতুন একটা খ্রিস্টান রাজ্য গড়ে তুলতে হবে। আমি প্রথম বলতে চাই, আমার দেশের মাটি নিয়ে কেউ আরেকটা রাষ্ট্র করতে চায়, এরকম কথা যেই বলুক আমরা তার বিরুদ্ধে আছি। কিন্তু কে বলেছে? শেখ হাসিনা তিনবার নাকি চারবারের প্রধানমন্ত্রী। তথাকথিত চারবারের প্রধানমন্ত্রী কত বড় দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি করেছেন।

‘তার কাছে প্রস্তাবটা কে দিয়েছে? এক সাদা চামড়া বললে তো হবে না। চামড়া সাদা তো বৃটিশদেরও, ইউরোপিয়ানদের, কানাডিয়ানদের, জাপানিজদের আর যদি কারো ধাবলকুষ্ঠ হয় তাহলে পুরোটাই সাদা। কোন সাদা চামড়ার লোক আপনাকে এই প্রস্তাব দিয়েছে, সেটা বলতে হবে’— বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, উনি সেটা বলতে পারবেন না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই, কোন মানুষ, কোন সরকার, কোন দেশ আপনার কাছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চায়। কাহিনী বানিয়ে মনে করবেন কান্না-কাটি করব আর আপনার দুঃখে বোধহয় সবার মন গলে যাবে আর আপনাকে বলবে, আপনিই থাকেন— আমরা সেই বান্দা নই।

মান্না বলেন, সরকার সমস্যায় আছে। তার তৈরি সেনা বাহিনী প্রধানের নামে আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কি কারণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে? সরাসরি বলেছে দুর্নীতির কারণে। দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যবসা পাইয়ে দিয়েছে নিজের ভাইদের, দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের ভাই খুনের আসামি তাকে জেল থেকে মুক্ত করে দিয়েছে। আমার মনে প্রশ্ন হয়, ওই যে, খুনের আসামিকে জেল থেকে মুক্ত করে দিল, ওটা শুধু জেনারেল আজিজ বলেছেন তাই হয়েছে, প্রেসিডেন্টের সই করতে হয়নি, যিনি তখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন তাকে তার প্রধানমন্ত্রী রিকোয়েস্ট করে বলেন নাই, তাকে ছেড়ে দেন।

অতএব স্যাংশন যদি ঠিক মতো হয়, তাহলে শুধু সেনা প্রধান খাবেন না, তৎকালীন রাষ্ট্রপতিও খাবেন, এখনকার এবং তখনকার যে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন সেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও স্যাংশন খাবেন। অপেক্ষা করেন, আমেরিকার স্যাংশন দিতে হবে না, আমরাই আপনাকে স্যাংশন দেব। সেই পথ তৈরি হচ্ছে, সেই পথে মানুষ এখন যাচ্ছে’— বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না।

সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ভাবতে পারেন একটা লোক কত ধরনের দুর্নীতি করেছে। একজনকে র‌্যাব প্রধান বানিয়েছিলেন, তারপরে পুলিশ প্রধান, তারপরে তার নামে পুরো বাহিনীরই বদনাম হয়েছে, র‌্যাব স্যাংশন খেয়েছে, এখন আবার তার নামে আমেরিকা নয়, বিদেশ নয়, দেশের মধ্য থেকে তদন্ত হচ্ছে। সব একাউন্ট জব্দ, বন্ধ এবং তার যত সম্পত্তি আছে সব কিছু বাজেয়াপ্ত।’

মান্না বলেন, ‘আমার জানতে ইচ্ছা করে বেনজীর আহমেদের কত টাকা আছে ব্যাংকে? এই যে এত দিন পরে তার ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করলেন। কেন এত দিন সময় দিলেন? মানে মাল যা কামিয়েছে সেইগুলো বাইরে ট্রান্সফার করে দেওয়ার জন্য? পত্রিকায় দেখলাম বেনজীর ও তার পরিবারের সম্পত্তির পরিমান ৩৪২ বিঘা। তার ব্যাংকে কত টাকা ছিল সেটা তাদের জানবার কথা। আমি দাবি করছি তাও জানান, আমি দাবি করছি কেন এত দিন পরে তার নামে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হল? ওই কোর্টকে জিজ্ঞাসা করেন, দুদক যখন তদন্ত করতে চেয়েছিল তখন হাইকোর্ট কেন তদন্ত বন্ধ করেছিল, কার নির্দেশে?’

জাতীয়তাবাদী মোটর চালক দলের সভাপতি সেলিম রেজা বাবুর সভাপতিত্বে এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, বিএনপির সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি আ ন ম খলিলুর রহমান, ভিপি ইব্রাহিম, ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি আজমল হোসেন পাইলট প্রমুখ।