Dhaka মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে ট্রাম্পের ভয়াবহ মিথ্যাচার

  • যোগাযোগ ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০২:১২:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ নভেম্বর ২০২০
  • ২১৩ জন দেখেছেন

ভাষণ দিচ্ছেন ট্রাম্প

নির্বাচনের পর বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) প্রথমবারের মতো হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভাষণে নির্বাচন, ভোট গণনা নিয়ে অব্যাহতভাবে মিথ্যাচার করায় প্রেসিডেন্টের ভাষণ সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় বেশ কয়েকটি মার্কিন গণমাধ্যম।

১৭ মিনিটের ভাষণে উস্কানিমূলক বক্তব্য এবং ভিত্তিহীন অভিযোগের বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন তিনি। জোর দাবি জানান, নির্বাচন ছিনতাইয়ের জন্য ডেমোক্র্যাটরা ভোট কারচুপির আশ্রয় নিয়েছে। জবাবে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন টুইট বার্তায় বলেন, আমাদের গণতন্ত্র কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। এখনও না; কখনই না। যুক্তরাষ্ট্র অনেক যুদ্ধে লড়ে এ পর্যন্ত এসেছে। আমাদের অনেক ত্যাগ করতে হয়েছে। গণতন্ত্রের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।

ব্যাটলগ্রাউন্ড পেনসিলভেনিয়া এবং জর্জিয়া বাইডেনের সঙ্গে ভোটের ব্যবধান কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এদিন ভাষণ নিয়ে হাজির হন ট্রাম্প। ভোট গণনার ধীরগতিকে কারচুপি হিসেবে আখ্যা দেন তিনি। এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে মার্কিন জাতিকে উস্কে দেয়ার চেষ্টা করেন ট্রাম্প। বক্তব্যে ভিত্তিহীন কথা বলা শুরুর পরপরই সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় মার্কিন গণমাধ্যম এমএসএনবিসি।

গণমাধ্যমটির উপস্থাপক ব্রেইন উইলিয়াম বলেন, আজ আমরা আরেকটি বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। এটা শুধু প্রেসিডেন্টকে প্রত্যাখ্যান করা নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে শুধরে দেয়ার জন্য এটা করা হয়েছে।

এনবিসি এবং এবিসি’ও ট্রাম্পের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। সম্প্রচার বন্ধের পর এবিসি’র হোয়াইট হাউস প্রতিনিধি জনাথন কার্ল বলেন, ভোট কারচুপির কোনো প্রমাণ নেই। তিনি বলেন, হতাশা থেকে ট্রাম্প এসব কথা বলছেন। ভোট গণনায় সময় লাগছে। ভোট গণনা সময়সাপেক্ষ একটি বিষয়। এবার বেশি লাগছে। এটা খুবই স্বাভাবিক। করোনাভাইরাসের কারণে সরাসরি হাজির হয়ে এবং পোস্টালে বহু ভোটার অগ্রিম ভোট দিয়েছেন।

আরও পড়ুন : নিশ্চিত জয়ের কাছাকাছি জো বাইডেন

সিএনএন তাদের সম্প্রচার অব্যাহত রেখেছিল। সম্প্রচারের সময় তাদের পর্দায় লেখা ছিল, কোনো প্রমাণ ছাড়াই ট্রাম্প বলছেন, তিনি প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। সম্প্রচার শেষ হওয়ার পর উপস্থাপক জ্যাক ট্যাপারের চোখেমুখে ছিল বিরক্তি। তিনি বলেন, মার্কিনদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক রাত এটি। প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে তাদের শুনতে হয়েছে ‘নির্বাচন চুরি’ চেষ্টার মিথ্যা, ভিত্তিহীন অভিযোগ।

একের পর এক মিথ্যা বলা হয়েছে। যা অত্যন্ত নিন্দাজনক। ফক্স নিউজ চ্যানেলের উপস্থাপক বিল বেনেট এবং বায়রন ইয়র্ক বলেছেন, অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলেননি। তার মানে এ নয় যে সেখানে কিছু হয়নি। প্রেসিডেন্ট এবং আইনজীবীদের উচিৎ ছিল তথ্যপ্রমাণ হাজির করা।

ফক্স নিউজের হোয়াইট হাউস প্রতিনিধি জন রবার্টস বলেন, শেষ দিন এসে প্রেসিডেন্ট এসব কি বললেন! সব ভোট প্রায় গণনা হয়ে গেছে। নির্বাচন তো তার ইচ্ছে মতো চলবে না। হোয়াইট হাউসে থেকে যাওয়ার জন্য ভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন তিনি। সিবিএস নিউজের জন ডিকারসন বলেন, ট্রাম্পের বক্তব্য মিথ্যা আবৃত্তির মতো মনে হয়েছে।

ব্যাটলগ্রাউন্ড নেভাদা, জর্জিয়া, পেনসিলভেনিয়া, নর্থ ক্যারোলিনায় ভোট গণনা চলছে। সবার চোখ এখন ব্যাটলগ্রাউন্ডের দিকে। ভোটে কারচুপি হচ্ছে ট্রাম্পের এমন অভিযোগের জবাবে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেন। এসময় ট্রাম্পের সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রের সামনে জড়ো হয়েছে ভোট গণনা বন্ধের দাবি জানান।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে ট্রাম্পের ভয়াবহ মিথ্যাচার

প্রকাশের সময় : ০২:১২:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ নভেম্বর ২০২০

নির্বাচনের পর বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) প্রথমবারের মতো হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভাষণে নির্বাচন, ভোট গণনা নিয়ে অব্যাহতভাবে মিথ্যাচার করায় প্রেসিডেন্টের ভাষণ সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় বেশ কয়েকটি মার্কিন গণমাধ্যম।

১৭ মিনিটের ভাষণে উস্কানিমূলক বক্তব্য এবং ভিত্তিহীন অভিযোগের বন্যা বইয়ে দিয়েছিলেন তিনি। জোর দাবি জানান, নির্বাচন ছিনতাইয়ের জন্য ডেমোক্র্যাটরা ভোট কারচুপির আশ্রয় নিয়েছে। জবাবে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন টুইট বার্তায় বলেন, আমাদের গণতন্ত্র কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। এখনও না; কখনই না। যুক্তরাষ্ট্র অনেক যুদ্ধে লড়ে এ পর্যন্ত এসেছে। আমাদের অনেক ত্যাগ করতে হয়েছে। গণতন্ত্রের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।

ব্যাটলগ্রাউন্ড পেনসিলভেনিয়া এবং জর্জিয়া বাইডেনের সঙ্গে ভোটের ব্যবধান কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে এদিন ভাষণ নিয়ে হাজির হন ট্রাম্প। ভোট গণনার ধীরগতিকে কারচুপি হিসেবে আখ্যা দেন তিনি। এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে মার্কিন জাতিকে উস্কে দেয়ার চেষ্টা করেন ট্রাম্প। বক্তব্যে ভিত্তিহীন কথা বলা শুরুর পরপরই সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় মার্কিন গণমাধ্যম এমএসএনবিসি।

গণমাধ্যমটির উপস্থাপক ব্রেইন উইলিয়াম বলেন, আজ আমরা আরেকটি বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। এটা শুধু প্রেসিডেন্টকে প্রত্যাখ্যান করা নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে শুধরে দেয়ার জন্য এটা করা হয়েছে।

এনবিসি এবং এবিসি’ও ট্রাম্পের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। সম্প্রচার বন্ধের পর এবিসি’র হোয়াইট হাউস প্রতিনিধি জনাথন কার্ল বলেন, ভোট কারচুপির কোনো প্রমাণ নেই। তিনি বলেন, হতাশা থেকে ট্রাম্প এসব কথা বলছেন। ভোট গণনায় সময় লাগছে। ভোট গণনা সময়সাপেক্ষ একটি বিষয়। এবার বেশি লাগছে। এটা খুবই স্বাভাবিক। করোনাভাইরাসের কারণে সরাসরি হাজির হয়ে এবং পোস্টালে বহু ভোটার অগ্রিম ভোট দিয়েছেন।

আরও পড়ুন : নিশ্চিত জয়ের কাছাকাছি জো বাইডেন

সিএনএন তাদের সম্প্রচার অব্যাহত রেখেছিল। সম্প্রচারের সময় তাদের পর্দায় লেখা ছিল, কোনো প্রমাণ ছাড়াই ট্রাম্প বলছেন, তিনি প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। সম্প্রচার শেষ হওয়ার পর উপস্থাপক জ্যাক ট্যাপারের চোখেমুখে ছিল বিরক্তি। তিনি বলেন, মার্কিনদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক রাত এটি। প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে তাদের শুনতে হয়েছে ‘নির্বাচন চুরি’ চেষ্টার মিথ্যা, ভিত্তিহীন অভিযোগ।

একের পর এক মিথ্যা বলা হয়েছে। যা অত্যন্ত নিন্দাজনক। ফক্স নিউজ চ্যানেলের উপস্থাপক বিল বেনেট এবং বায়রন ইয়র্ক বলেছেন, অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলেননি। তার মানে এ নয় যে সেখানে কিছু হয়নি। প্রেসিডেন্ট এবং আইনজীবীদের উচিৎ ছিল তথ্যপ্রমাণ হাজির করা।

ফক্স নিউজের হোয়াইট হাউস প্রতিনিধি জন রবার্টস বলেন, শেষ দিন এসে প্রেসিডেন্ট এসব কি বললেন! সব ভোট প্রায় গণনা হয়ে গেছে। নির্বাচন তো তার ইচ্ছে মতো চলবে না। হোয়াইট হাউসে থেকে যাওয়ার জন্য ভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছেন তিনি। সিবিএস নিউজের জন ডিকারসন বলেন, ট্রাম্পের বক্তব্য মিথ্যা আবৃত্তির মতো মনে হয়েছে।

ব্যাটলগ্রাউন্ড নেভাদা, জর্জিয়া, পেনসিলভেনিয়া, নর্থ ক্যারোলিনায় ভোট গণনা চলছে। সবার চোখ এখন ব্যাটলগ্রাউন্ডের দিকে। ভোটে কারচুপি হচ্ছে ট্রাম্পের এমন অভিযোগের জবাবে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেন। এসময় ট্রাম্পের সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রের সামনে জড়ো হয়েছে ভোট গণনা বন্ধের দাবি জানান।