নিজস্ব প্রতিবেদক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র তার আগের বার্তাই তুলে ধরেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশি একজন সাংবাদিক বাংলাদেশে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও বিরোধী কয়েকটি দলের তা প্রত্যাখান করার তথ্য তুলে ধরেন। ওই সাংবাদিক এ বিষযে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া জানতে চান।
জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ‘আগামী নির্বাচন নিয়ে আমরা যে বার্তা দিয়েছি তা এখনো একই আছে।
শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন—বাংলাদেশের জনগণ যা চায় তাই আমরা চাই।’
ম্যাথু মিলার বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করিনা। একটি দলের বিরূদ্ধে আরেকটি দলের অবস্থানকে সমর্থন করি না।’
ম্যাথু মিলার আরো বলেন, ‘আমরা চাই, সব রাজনৈতিক দল সংঘাত এড়িয়ে চলুক ও সংযম পালন করুক এবং শান্তিপূর্ণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য একসঙ্গে কাজ করুক।
রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হুমকি এবং রাষ্ট্রদূতের নিজের ও দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে ম্যাথু মিলার বলেন, ‘বিদেশে দূতাবাসগুলোতে আমাদের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকার। কূটনীতিকদের প্রতি হুমকিকে আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে নেই।’
মুশফিক তার কাছে জানতে চান যে, ক্ষমতাসীন দলের সদস্যদের কাছ থেকে অব্যাহতভাবে হত্যার হুমকি পাচ্ছেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতারা একই সুরে কথা বলছেন। তারা রাষ্ট্রদূতকে হত্যা করতে চান। এরই মধ্যে নিজের নিরাপত্তা এবং মৌলিক ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রদূত। এ বিষয়টি কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিরিয়াসলি নিচ্ছেন?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার আরও বলেন, রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বিরুদ্ধে হুমকিমূলক বক্তব্যের বিষয়ে বারবার আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের উদ্বেগ তুলে ধরেছি। তাদের আবারও স্মরণ করিয়ে দেব যে, কূটনৈতিক সম্পর্কবিষয়ক ভিয়েনা কনভেনশনের অধীনে মার্কিন কূটনৈতিক মিশন ও এর কর্মকর্তাদের সেফটি এবং সিকিউরিটি নিশ্চিত করতে বাধ্যবাধকতা আছে তাদের। আমরা আশা করব তারা এসব বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
সাংবাদিক মুশফিক তার কাছে আরও জানতে চান, বিরোধী দলগুলোর প্রতিবাদ বিক্ষোভ, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ঐকমত্যে আসার আহ্বানকে উপেক্ষা করে আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুমোদন দিয়েছে সরকার। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এটা প্রত্যাখ্যান করেছে। দমনপীড়ন অব্যাহত আছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের বিষয়ে এবং সরকারের জবাবদিহির বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কি?
জবাবে তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচনে আমরা আমাদের বার্তায় অবিচল আছি। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও আমাদের বার্তা এখনো একই। বাংলাদেশি জনগণ যা চায়, আমরাও তাই চাই। তা হলো শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। বাংলাদেশে একক কোনো রাজনৈতিক দলকে আমরা সমর্থন করি না। আমরা এক দলকে বাদ দিয়ে অন্য দলকে সমর্থন করি না। সব দলের প্রতি সংযত থাকার, সহিংসতা পরিহারের এবং একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাই, যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়।