বিনোদন ডেস্ক :
শোবিজ দুনিয়ার এক জনপ্রিয় নাম মনোয়ার হোসেন ডিপজল। যিনি খল অভিনেতা থেকে শুরু করে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করে জিতে নিয়েছেন কোটি দর্শকের হৃদয়। সেসব দর্শকেরই একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের মীরহাটি এলাকার ফার্নিচার ব্যবসায়ী দুলাল মিয়া।
ডিপজলকে ভালোবেসে ‘মামা’ বলে ডাকেন দুলাল। ডিপজলের প্রতি ভালোবাসা থেকে ২৫ লাখ টাকা খরচ করে ৩ বছর ৮ মাস ধরে নিজ হাতে তৈরি করেছেন বিশাল এক রাজকীয় খাট। এই খাট দেখতে প্রতিদিনই অসংখ্য উৎসুক মানুষ আসছেন। দুলালের ইচ্ছে চলচ্চিত্র অভিনেতা ডিপজল এই খাট উপহার হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসে গ্রহণ করবেন।
২০০৮ সালে ডিপজল অভিনীত ‘দাদীমা’ সিনেমা দেখার মাধ্যমে এই অভিনেতার প্রতি ভালোবাসা জাগে তার দুলালের হৃদয়ে। এরপর থেকেই নিয়মিত ডিপজলের সিনেমা দেখা শুরু করেন তিনি। একসময় নিজের অজান্তেই ডিপজলের একজন ভক্ত হয়ে যান মীরহাটি এলাকার আবদুর সাত্তার মিয়ার ছেলে এই দুলাল। সেই ভালোবাসা থেকে ডিপজলের জন্য বানালেন ২৫ লাখ টাকার নান্দনিক কারুকার্য খচিত এক রাজকীয় খাট। ডিপজলের এই ভক্তের খাট তৈরির খবর ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক মানুষ তার দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন।
জানা যায়, ডিপজলকে ভালোবাসে তাকে উপহার দিতে ৩ বছর ৮ মাসে নিজ হাতে সুনিপুণ কৌশলে তৈরি করেছেন এই বিশাল খাট। খাটটির দৈর্ঘ্য সাড়ে ৮ ফুট এবং প্রস্থ সাড়ে ৬ ফুট। এটি তৈরি করতে আসল আকাশী কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া নকশায় ব্যবহার করতে হয়েছে ৩৮৭টি গোলাপ ফুলের ডিজাইন ও বিভিন্ন অংশ সংযোগ করতে ব্যবহার হয় ৮০টি নাট। প্রতিদিনই অসংখ্য উৎসুক মানুষ আসছেন দুলালের তৈরি করা খাট দেখার জন্য। দুলালের ইচ্ছা চলচ্চিত্র অভিনেতা ডিপজল এ খাট উপহার হিসেবে গ্রহণ করবেন।
এ বিষয়ে ফার্নিচার ব্যবসায়ী দুলাল জানান, অভিনেতা ডিপজলের সঙ্গে সরাসরি কোনোদিন কথা না হলেও তার প্রতি ভালোবাসা থেকে ডিপজলকে মামা নামে ডাকেন।
তিনি বলেন, ডিপজল মামার প্রতি ভালোবাসার কারণে উনাকে নিজের হাতে বানিয়ে ভিন্ন কিছু উপহার দেয়ার ইচ্ছা হয়। তাই ধীরে ধীরে দীর্ঘ ৩ বছর ৮ মাসে তাজমহলের ডিজাইনে খাট তৈরি করেছি। আমি যেহেতু বেশির ভাগ সময়ে ব্যবসার কারণে দোকানে থাকি, খাটটি চোখের সামনে যেন থাকে তাই আমার দোকানেই রেখেছি। যদি ডিপজল মামা আমার বানানো এই ক্ষুদ্র উপহারটি গ্রহণ করেন এবং দেখা করা সুযোগ করে দেন তাহলে জীবন ধন্য হয়ে যাবে। আমি সেই আশায় রয়েছি।
স্থানীয় বাসিন্দা মো আনিছ মিয়া বলেন, দুলাল আমাদের এলাকার ছোট ভাই। অভিনেতা ডিপজলকে মামা বলে ডাকেন। তার প্রতিটি সিনেমা দুলাল দেখেছেন। ডিপজলের কোনো পোস্টার পেলেই দোকানে এনে লাগাতেন। ডিপজলের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এই খাট তৈরি করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসে ডিপজল এটি গ্রহণ করলে দুলালের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।
পাপন নামের আরেক যুবক বলেন, যেকোনো জায়গায় ডিপজলের সিনেমার খবর পেলেই সেখানে চলে যেতেন দুলাল। সে ডিপজলের অন্ধ ভক্ত। কারও সঙ্গে কথা বললেও ডিপজলের শুধু প্রশংসাই করেন। আর এ খাটটি তৈরির সময় অনেকটা গোপনেই করেছেন, কাউকে সামনে যেতে দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে সবার কৌতূহল ছিল।
খাইরুল হোসেন নামের একজন খাটটি দেখতে এসে বলেন, দুলাল ডিপজলের অন্ধভক্ত। কারো সঙ্গে কথা বললেও ডিপজলের শুধু প্রশংসাই করেন। আর এই খাটটি তৈরির সময় অনেকটা গোপনেই করেছে, কাউকে সামনে যেতে দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে সবার কৌতুহল ছিল।
দুলালের বড় ভাই মোহাম্মদ হুমায়ুন বলেন, আমার ছোট ভাই দীর্ঘ তিন বছর ৮ মাসে এ খাট ডিপজলের জন্যে তৈরি করেছেন। সে খাটটি অনেক শখ করে বানিয়েছেন। এ খাটের উছিলায় যেন ডিপজলের সঙ্গে দুলালের দেখা হয় এবং খাটটি যেন তিনি উপহার হিসেবে গ্রহণ করেন।
ডিপজলের জন্য দুলাল মিয়ার এই রাজকীয় খাট তৈরির খবর ছড়িয়ে পড়তেই প্রতিদিন স্থানীয় ও আশপাশের এলাকার লোকজন ভিড় করছেন তার দোকানে। ছবি তুলছেন, খুঁটিনাটি জানতে প্রশ্ন করছেন তাকে।