আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের রাজধানী খার্তুমের দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন ৫ শিশুসহ অন্তত ১৭ জন বেসামরিক নাগরিক। শনিবার (১৭ জুন) এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হামলায় খার্তুমের ঘনবসতিপূর্ণ ইয়ারমুক এলাকার ২৫টি বাড়িও ধ্বংস হয়ে গেছে।
সুদান সেনাবাহিনীর একজন শীর্ষ জেনারেল দেশটির আধা-সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) বিরুদ্ধে হামলা বাড়ানোর হুমকি দেওয়ার একদিন পরই এই হামলার ঘটনা ঘটল বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
আরএসএফ জানিয়েছে, খার্তুমের মেয়ো, ইয়ারমুক এবং ম্যান্ডেলা এলাকায় বেসামরিক লোকদের লক্ষ্য করে সাম্প্রতিক এই হামলাটি চালানো হয়েছে। অবশ্য সেনাবাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সুদানে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে চলছে তীব্র লড়াই। প্রায় দুই মাস ধরে সুদানের পশ্চিম অংশ সংঘর্ষে উত্তাল। সেনাবাহিনী ও আরএসএফের এই লড়াইয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বহু বেসামরিক মানুষ। এতে দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। রাজধানী খার্তুম, কর্দোফান ও দারফুর অঞ্চলের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়।
গত শনিবার উভয়পক্ষ ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। স্থানীয় সময় রোববার সকাল ৬টা থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে বলে সৌদি ও মার্কিন মধ্যস্থতাকারীরা জানিয়েছে। যদিও অতীতে এই ধরনের যুদ্ধবিরতি খুব কমই মেনে চলা হয়েছে।
সুদানে ক্ষমতা নিয়ে ভয়াবহ এই সংঘাতে নিহত মানুষের সুনির্দিষ্ট সংখ্যা পাওয়া কঠিন। তবে গোলাগুলিতে অনেক বেসামরিক নাগরিকসহ ১ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, প্রায় ২২ লাখ মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়েছে। এছাড়া আরও প্রায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
যুদ্ধ থেকে মানুষকে পালাতে দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে, তবে এগুলো কোনো পক্ষই সঠিকভাবে মানেনি। সম্প্রতি মায়ো, ইয়ারমুক ও ম্যান্ডেলা এলাকার বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে আরএসএফ। তবে সেনাবাহিনী এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
শত্রুতা শুরু হওয়ার পর থেকে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশী দেশ চাদে পালিয়ে গেছে। সেখানকার চিকিৎসক ও হাসপাতালগুলো অত্যধিক চাপে পড়েছে এবং সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। এই সহিংসতা সুদানের পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুই দশক ধরে চলা সংঘাতকে আবার সামনে এনেছে। সূত্র : বিবিসি।