Dhaka শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কেরানীগঞ্জে মাদ্রাসা ভবনে বিস্ফোরণ, ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি :

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন।

বিস্ফোরণে মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের ভাষ্য।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকার উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার একতলা ভবনে এ বিস্ফোরণ ঘটে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসনাবাদ এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, ‘গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। তখন দৌড়ে গিয়ে দেখি, মাদ্রাসার পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের চারপাশের দেয়াল উড়ে গেছে। বিস্ফোরণে একতলা ভবনের দুটি কক্ষের দেয়াল সম্পূর্ণ ধসে পড়ে এবং ছাদ ও বিমে ফাটল দেখা দেয়। পাশের আরও দুটি কক্ষেও ফাটল ধরেছে।’

ওই বাসিন্দা আরও বলেন, মাদ্রাসাটিতে ৩০ থেকে ৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।

এ ঘটনায় মাদ্রাসার পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তানের মধ্যে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হন। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

ভবনের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন পরিবারসহ তিন বছর ধরে বসবাস করে আসছিলেন।

পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’

বাড়ির মালিক পারভীন বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন মাদরাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তার শ্যালক আলামিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদরাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন এবং তিনি মাঝে মাঝে মাদরাসায় আসতেন এবং আমি নিয়মিত খোঁজ-খবর নিতাম। কিন্তু মাদরাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে। পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, ঘটনাস্থলে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করেছে। সেখান থেকে ককটেল, দাহ্য পদার্থ ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটনে ক্রাইম সিন ইউনিট ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

এনসিপি থেকে পদত্যাগ, স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন তাসনিম জারা

কেরানীগঞ্জে মাদ্রাসা ভবনে বিস্ফোরণ, ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

প্রকাশের সময় : ০৭:০১:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি :

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন।

বিস্ফোরণে মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে গেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের ভাষ্য।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকার উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার একতলা ভবনে এ বিস্ফোরণ ঘটে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসনাবাদ এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, ‘গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। তখন দৌড়ে গিয়ে দেখি, মাদ্রাসার পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের চারপাশের দেয়াল উড়ে গেছে। বিস্ফোরণে একতলা ভবনের দুটি কক্ষের দেয়াল সম্পূর্ণ ধসে পড়ে এবং ছাদ ও বিমে ফাটল দেখা দেয়। পাশের আরও দুটি কক্ষেও ফাটল ধরেছে।’

ওই বাসিন্দা আরও বলেন, মাদ্রাসাটিতে ৩০ থেকে ৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।

এ ঘটনায় মাদ্রাসার পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তানের মধ্যে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হন। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

ভবনের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন পরিবারসহ তিন বছর ধরে বসবাস করে আসছিলেন।

পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’

বাড়ির মালিক পারভীন বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন মাদরাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তার শ্যালক আলামিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদরাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন এবং তিনি মাঝে মাঝে মাদরাসায় আসতেন এবং আমি নিয়মিত খোঁজ-খবর নিতাম। কিন্তু মাদরাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে। পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, ঘটনাস্থলে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করেছে। সেখান থেকে ককটেল, দাহ্য পদার্থ ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটনে ক্রাইম সিন ইউনিট ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করছে।