চট্টগ্রাম বন্দরের পাশেই রেলের সিজিপিওয়াই কারখানা। যেখান থেকে প্রতিদিন ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় পণ্যবাহী ট্রেন গুলো। কন্টেইনার পরিবহনের জন্য ট্রেন আছে চারটি। আর তেল ও খাদ্য দ্রব্য পরিবহনের জন্য আরও ছয়টিসহ দশটি ট্রেন চলার সক্ষমতা থাকলেও প্রতিদিন চলে তিন থেকে চারটি। সেগুলোও অনেক সময় পণ্য সংকটে ছাড়তে বিলম্ব হয়।
হিসাব বলছে, ট্রেনে পণ্য পরিবহন যেমন নিরাপদ, তেমনি জ্বালানি সাশ্রয়ীও। চল্লিশ ফুটের একটি কন্টেইনার বন্দর থেকে লরিতে ঢাকা পর্যন্ত যেতে প্রায় ১০০ লিটার তেল খরচ হয়। অথচ রেলে যেতে লাগে মাত্র ৩০ লিটার। কিন্তু এরপরও বাড়ছে না রেলে পণ্য পরিবহন।
চট্টগ্রাম রেলওয়ের সিজিপিওয়াই প্রধান ইয়ার্ড মাস্টার মো.আব্দুল মালেক বলেন, একটা সোনার বাংলা পণ্য পরিবহন সার্ভিসে যা আয় হয় আমার ৫টা কন্টেইনারেরও সেই আয় হয় না। লোকবল যদি দ্রুত না নেয়া হয়, পরিবহন সেক্টর মুখ থুবড়ে পরবে। রেলের আয় বাড়ানো সম্ভব হবে না।
প্রতিটি ট্রেনে ৩২টি পর্যন্ত ওয়াগন যুক্ত করা যায়। যার এক একটি বগি চল্লিশ ফুটের একটি কন্টেইনার বহন করতে সক্ষম।
রেলের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো.জাহাঙ্গির হোসেনও বলছেন, তাদের যে সক্ষমতা আছে তা পুরোপুরি ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম-ঢাকা আইসিডি থেকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা অর্থাৎ ট্রাক আমাদের নেই,তাই বাইরের ট্রাক দিয়ে এসব কাজ করতে হয়।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা চাইলে সড়কপথে যখন-তখন পণ্য আনা-নেয়া করতে পারেন। যা রেলপথে সম্ভব হয়না। তাই সীমাবদ্ধতা দূর করার তাগিদ তাদের।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম প্রেসিডেন্ট এস এম আবু তৈয়্যব বলেন, “বিভিন্ন যায়গায় যদি আইসিডি তৈরি করা হত তবে কাজ সহজ হয়ে যেত।বাংলাদেশ রেলওয়ে যদি এই ব্যবস্থা দ্রুত করতে পারে তবে ব্যবসায়ীরা উৎসাহিত হবে।”
বিশ্লেষকদের মতে, জ্বালানি সংকট সব সময়ই ভোগাবে। তাই রেলপথে পণ্য পরিবহনে জোর দেয়া উচিত বলে মত তাদের।
অর্থনীতি বিশ্লেষক ড. মো. সেলিম উদ্দিন জানান, পরিসংখ্যান করে দেখা উচিত কম জ্বালানি ব্যবহার করে কোন কোন জায়গায় অধিক সুবিধা পাওয়া যায়।সেটা হতে পারে পরিবেশ বা অর্থনৈতিক দিক।
২০২০-২১ অর্থ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রেলযোগে পণ্য পরিবহন হয়েছে ৪৪ হাজার ৯২৯ কন্টেইনার। আর ২০২১-২২ অর্থ বছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫১ হাজার একশ কন্টেইনারে।