বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

ম্যানসিটির শিরোপা স্বপ্ন ভেঙে সেমিতে রিয়াল

স্পোর্টস ডেস্ক
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
ম্যানসিটির শিরোপা স্বপ্ন ভেঙে সেমিতে রিয়াল

স্পোর্টস ডেস্ক : 

সবার মধ্যমণি অ্যান্তোনি রুডিগার। তাকে ঘিরেই উচ্ছ্বাস, উৎসব। টাইব্রেকার শেষে এমন চিত্রনাট্যই মঞ্চস্থ হলো ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে। এমনটা তো হবেই। রুডিগার যে রিয়াল মাদ্রিদের জয়ের নায়ক। এ জার্মান সেন্টারব্যাকই স্প্যানিশ জায়ান্টদের পৌঁছে দিয়েছেন চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র করার পর টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে জয়লাভ করে রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথম লেগে ৩-৩ ড্রয়ের ফলে ৪-৪ ব্যবধানের কারণে ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ায়।

অথচ রিয়ালের নায়ক নয়, খলনায়ক হতে পারতেন রুডিগার। তার ভুলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে সমতায় ফিরেছিল সিটি। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে গোলের সুবর্ণ সুযোগও মিস করেছিলেন। নিজের সেই ভুলের প্রায়শ্চিত্তই যেন করলেন রুডিগার টাইব্রেকারে এসে। শেষ শট জালে জড়িয়ে প্রিয় দল রিয়ালকে উপহার দিলেন সেমির টিকিট। একটি রেকর্ড করল রিয়াল। ১৭তম বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ চারে নিজেদের নাম লিখল তারা।

রোমাঞ্চকর এ জয়ে রিয়াল শুধু চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ চারের টিকিটই কাটেনি, ইউরোপের সেরাদের আসরে একই সঙ্গে একটি শোধও তুলল টুর্নামেন্টের ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা। গত মৌসুমে এ সিটিই সেমিফাইনাল থেকে রিয়ালকে ছিটকে দিয়েছিল। আর এবার কোচ কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের বিদায় করে পুরোনো হিসাবটা মেটাল শেষ আটেই।

রিয়ালের বিপক্ষে ঘরের মাঠের এই ম্যাচে সিটি কতোটা আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে তা বোঝা যায় পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই। ৬৮ শতাংশ সময় বল নিয়ন্ত্রণে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে ৩৩টী শট নিয়েছেন ডি ব্রুইনা-ফোডেনরা যার ৯টিই ছিল লক্ষ্যে। পুরো ম্যাচে সিটি কর্ণার পেয়েছে মোট ১৮টি যেখানে রিয়াল পেয়েছে কেবল ১টি সেটিও ম্যাচের ১০৬ মিনিটের সময়ে।

প্রতিপক্ষের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদের শুরুটা হয়েছে দারুণ। এগিয়ে যেতে খুব বেশি সময় নেয়নি স্প্যানিশ ক্লাবটি। ম্যাচের দ্বাদশ মিনিটেই রদ্রিগোর গোলে এগিয়ে যায় তারা। ডান দিক থেকে আক্রমণে গিয়ে ভালভার্দেকে খুঁজে নেন বেলিংহ্যাম। উরুগুয়ে মিডফিল্ডার থেকে বল নিয়ে রদ্রিগোকে বাড়ান ভিনিসিয়ুস। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের প্রথম শট এদারসন ঠেকিয়ে দিলেও ফিরতি শটে জাল খুঁজে নেন।

গোল হজম করে সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে সিটি। ১৯তম মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পায় তারা। ডি ব্রুইনার জোরালো শট ঠেকিয়ে দেন লুনিন। ফিরতি বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে হেড নেন হালান্ড, যেটি গোলবারে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি শটে বল বাইরে পাঠিয়ে দেন বের্নান্দো সিলভা। ২৪তম মিনিটে ব্যবধান বাড়াতে পারত রিয়াল। তবে ভিনিসিয়ুসের দেওয়া দারুণ পাস ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি ভালভার্দে।

২৮তম মিনিটে ডি ব্রুইনা নৈপুণ্যে আরও এক দারুণ সুযোগ পায় সিটি। তবে তার দেওয়া ক্রস ঠিকঠাক হেড নিতে পারেননি হালান্ড। ফলে সহজেই বল নিয়ন্ত্রণে নেন লুনিন। ৩২তম মিনিটে আরও একটি সুযোগ পায় স্বাগতিকরা। তবে গ্রিলিসের নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন দানি কারভাহাল।

বিরতির পর আক্রমণ আরও বাড়ায় ম্যান সিটি। তার সুফলও পায় তারা। তবে অপেক্ষা করতে হয় লম্বা সময়। ৭৬তম মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনার গোলে সমতায় ফিরে ইংলিশ ক্লাবটি। বদলি হয়ে নামা দোকু বল টেনে নিয়ে শট নিলে সেটি ঠেকিয়ে দেন রুডিগার। কিন্তু বক্সে থাকা ডি ব্রুইনা ফিরতি বল লুনিনের মাথার ওপর দিয়ে জালে পাঠান। পরবর্তীতে আরও কয়েকটি আক্রমণ করে তারা। তবে নির্ধারিত সময়ে গোল না হলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

৯৯তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত ম্যান সিটি। তবে সিলভার দেওয়া ক্রস ফোডেনের পায়ে লেগে লুনিনের কাছে চলে যায়। অতিরিক্ত সময়ের যোগ করা সময়ে রুডিগারের বুলেট গতির ভলি উপর দিয়ে উড়ে যায়। অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ তৈরি করে সিটি। ডান দিক থেকে আক্রমণে গিয়ে বল টেনে নিয়ে বক্স থেকে শট নেন আলভারেস। যদিও লুনিন সেটি সহজেই ঠেকিয়ে দেন। পরে আর কোনো গোল না হলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।

টান টান উত্তেজনার টাইব্রেকারে আলভারেস শুরুতেই স্পট কিকে সফল হন। কিন্তু রিয়ালের প্রথম পেনাল্টি মিস করেন মদ্রিচ। সিটির পরের পেনাল্টি নিতে গিয়ে লুনিনের হাতে বল তুলে দেন সিলভা। তবে রিয়ালের হয়ে এবার সফল কিক নেন বেলিংহ্যাম। তৃতীয় পেনাল্টিতে সিটির কোভাচিচের স্পট কিক ঠেকিয়ে দেন লুনিন। আর রিয়ালের হয়ে গোল করেন লুকাস ভাসকেস। পরবর্তীতে সিটির ফিল ফোডেন ও এদেরসন গোল পায়। আর রিয়ালের নাচো ও রুডিগারের পেনাল্টি মিস না হলে আনন্দে ভাসে ক্লাবটি।

একই রাতের আরেক কোয়ার্টার ফাইনালে ঘরের মাঠে আর্সেনালকে ১-০ ব্যবধানে হারায় বায়ার্ন। প্রথম লেগে ২-২ ড্রয়ের ফলে ৩-২ ব্যবধানের অগ্রগামিতায় সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে জার্মান ক্লাবটি। ফিরতি লেগে তাদের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন জশুয়া কিমিচ।

ম্যানসিটির এই হারের পর চ্যাম্পিয়নস লিগে আর কোনও ইংলিশ ক্লাব থাকলো না। একই দিনে আর্সেনাল বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে রিয়াল খেলবে বায়ার্নকে। আরেক সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে ডর্টমুন্ড ও পিএসজি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া