বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৭:৩৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
দেশের যত অপরাধ তার সবই করে বিএনপি : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে যত অপরাধ হয়, তার সবই করে বিএনপি। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ওপরে যে পরিমাণ অত্যাচার করা হয়েছিল, সে তুলনায় এখন তাদের বিরুদ্ধে কিছুই করা হচ্ছে না।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গণভবনে সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা রাজনৈতিক হয়নি। তারা অপরাধ করেছে, তাই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে (বিএনপি) সব জায়গায় কান্নাকাটি করে বলছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা। তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে মামলাগুলো কিসের মামলা? অগ্নিসন্ত্রাস, অস্ত্রপাচার, গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা। তারা অপরাধ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেটাই তো বাস্তবতা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ৩ হাজার ৮০০ গাড়ি পুড়িয়েছে। বাস, লঞ্চ, রেল পুড়িয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না তো কী হবে? ওদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা তো পলিটিক্যাল মামলা না, প্রত্যেকটা মামলা হচ্ছে অগ্নিসন্ত্রাসের মামলা। তারা মানুষ হত্যা করেছে আগুন দিয়ে, ২৮ অক্টোবর যে ঘটনা তারা ঘটালো নির্বাচন ঠেকাতে যেয়ে, রেলে আগুন দিয়ে মা-শিশুকে পুড়িয়ে মেরেছে। যারা এগুলো করলো তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না তো তাদেরকে মানুষ পূজা করবে?

এসব মামলা দ্রুত শেষ করে শাস্তি দিয়ে দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ প্রধান।

আওয়ামী লীগ প্রতিশোধপরায়ণ না দেখে বিএনপি এখনো কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাদের ভাগ্য ভালো আমরা ক্ষমতায় আছি, আমরা তাদের মতো প্রতিশোধপরায়ণ না দেখে তারা এখনো কথা বলার সুযোগ পায়। তারা সারাদিন কথা বলে মাইক লাগিয়ে, তারপরও বলবে কথা বলার সুযোগ পায় না।

বিরোধী দলে থাকার সময়ের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ অফিসে তো আমরা ঢুকতেই পারতাম না। কীভাবে তারা অত্যাচার করেছে আমাদের ওপর, আমরা তো তার কিছুই করি নাই। আমরা প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত থাকিনি। আমরা আমাদের সব শক্তি-মেধা কাজে লাগিয়েছি দেশের উন্নয়নে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে।

সারাদেশের জেলের সব অপরাধীই বিএনপির কিনা এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, তারা (বিএনপি) যেভাবে বলছে ৬০ লাখ লোক তাদের গ্রেপ্তার, ৬০ লাখ তো ধারণক্ষমতাও নাই জেলে। তারপরও যতটুকু ধারণ ক্ষমতা আছে সবই বিএনপির লোক, এটাই তো তারা বলতে চাচ্ছে। তার মানে বাংলাদেশে যত অপরাধ সব অপরাধ করে বিএনপি।

বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচারের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে তারা চিৎকার করে তাদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। কী অত্যাচার হচ্ছে তাদের ওপর? জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর থেকে আওয়ামী লীগের ওপর অত্যাচারের যে স্টিম রোলার চালিয়েছিল, যেভাবে হত্যা করেছিল, খালেদা জিয়া আসার পরে ২০০১ এর নির্বাচনের পর কোনো আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ঘরে থাকতে পারেনি। ধরে নিয়ে যেভাবে অত্যাচার করেছে এবং আমাদের কতগুলো নেতাকে মেরে ফেলে দিল, আহসানউল্লাহ মাস্টার থেকে শুরু করে আমাদের বহু নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। …ওরা শুধু আওয়ামী লীগ না, ওরা মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে।

বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি কখনোই চায়নি এ দেশ খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হোক। তারা চেয়েছে অন্য দেশ থেকে ভিক্ষা করে দেশ চালাতে।

খাদ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় সরকার কৃষকদের জন্য নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গবেষণার প্রতি গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি কৃষকদের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার ফলেই এ দেশের কৃষি সমৃদ্ধ হয়েছে। একসময় যারা নুন ভাতের কথা বা ডাল ভাতের কথা চিন্তা করতে পারত না, এখন তারা মাছ-মাংস ডিমের কথাও চিন্তা করে। ফলে যারা সরকারের সমালোচনা করেন তাদের সেগুলো মাথায় রেখে উন্নয়ন হয়েছে কিনা তা বিবেচনা করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় বীজ উৎপাদন বিএডিসিসহ নানা গবেষণা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই কৃষি গবেষণায় জোর দেয়। বীজ, মাছ, ধান, সবজিসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন বাড়িয়ে বিদেশি নির্ভরতা কমিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ সরকার। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছে।

সরকারের উন্নয়ন নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন তাদের সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেছেন, ‘এক সময় যারা নুন-ভাতের কথা বা ডাল-ভাতের কথা চিন্তা করতে পারত না, এখন তারা মাছ-মাংস-ডিমের কথাও চিন্তা করে। ফলে যারা সরকারের সমালোচনা করেন, তাদের সেগুলো মাথায় রেখে উন্নয়ন হয়েছে কি-না তা বিবেচনা করতে হবে।

কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানিনির্ভরতা কমানোর পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার দেখানো পথে সমবায় কৃষি নিশ্চিত করা হলে দেশে কখনো খাদ্যের অভাব হবে না।

সরকার বছরে ২৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার দেখানো পথে সমবায় কৃষি নিশ্চিত করা হলে দেশে কখনও খাদ্যের অভাব হবে না।

সরকারপ্রধান বলেন, অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি হয়েছে বলেই দেশের মানুষ এখন ডাল-ভাত নয়, বরং মাছ-মাংসের দাম নিয়ে চিন্তা করে। যারা সমালোচনা করছেন তাদের এই বিষয়টিও মাথায় রাখা উচিত।

তিনি বলেন, ’৭৫ পরবর্তী সময়ে যারা ছিল, তাদের মূল আগ্রহ ছিল ব্যবসা করা।

শেখ হাসিনা বলেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। নিজেদের খাদ্য নিজেরাই উৎপাদন করবো। উদ্বৃত্ত থাকলে অন্যকে সাহায্য করবো।

আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। কৃষকের অধিকার রক্ষায় ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নেতাকর্মীসহ সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ বিভাগের আরো সংবাদ

আবহাওয়া