নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
আওয়ামী লীগ এখন বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগ এখন বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক। আমাদের সামনে ভাবতে হবে। কিন্তু আমরা দেখেছি টকশোতে যারা আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী ছিল, পেইড কিছু বুদ্ধিজীবী তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করেছে। কিন্তু গত দুইদিনের কার্যক্রমের বুঝে যাওয়া উচিত আওয়ামীলীগ কখনো গণমানুষের দল ছিল না। আগুন সন্ত্রাস কারা করেছিল অতীতে এবং বর্তমানে কারা করেছে স্পষ্ট হয়ে গেছে গত দুইদিনের কার্যক্রমে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের সমবায় ভবনে এনসিপির কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি এ সব কথা বলেন। একইসঙ্গে এই কার্যালয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগের পতন ব্যালটের মাধ্যমে হয়নি, যে ব্যালটের মাধ্যমে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হবে। আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে রাজনৈতিক দলের পতন হয় সে দলের উপযোগিতা পুরিয়ে যায় বলেই গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়। যে রাজনৈতিক দলের নীতি আদর্শের বিরুদ্ধে যায় তখনই গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়।
তিনি বলেন, যারা ব্যালটের মাধ্যমে এই দলটিকে ফিরিয়ে আনার বৈধতা উৎপাদন করছে তারা মূলত আগুন সন্ত্রাসের পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করেছে। সে জন্য ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়াও কোনো বিপল্প নেই।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, স্বতন্ত্রভাবে সংস্কারের পক্ষে যারা জোটবদ্ধ হতে চায় প্রয়োজনে আমরা তাদেরকে সঙ্গে নিবো। সংস্কারের পক্ষে বাংলাদেশের পক্ষে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে যারা আছে তাদের সঙ্গে আমরা জোট করতে পারি।
তিনি বলেন, যারা সংস্কারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, যারা দেশের সংস্কার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্থ করেছে তাদের সঙ্গে এনসিপির জোট সম্ভব নয়। দেশের সামগ্রিক স্বার্থে আমরা এনসিপি সবসময় ছাড় দিয়ে আসছি। আমরা সংস্কারের পক্ষে জাতীয় ঐকমত্যের প্রশ্নে আমরা সবসময় ছাড় দিয়ে আসছি।
সংস্কারের বিষয়ে হাসনাত বলেন, আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরতে চাই। ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিটি দল-মতকে আমরা ধারণ করি। আবার যদি মধ্যরাতে ডিসি ভাগাভাগি হয়, পুলিশকে দাঁড় করিয়ে রেখে নির্বাচন হয়, নির্বাচন যদি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হয়, তাহলে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে না। আমরা চাই জনগণের ক্ষমতায়ন।
গণমাধ্যম বিষয়ে হাসনাত বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে একধরনের ব্যক্তি প্রোপাগান্ডা ও ফ্যাসিবাদের পক্ষে মতামত উৎপাদন করে। তারা আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার মতামত উৎপাদন করে। সাংবাদিকেরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও মিডিয়া মাফিয়ারা ব্যর্থ করতে চায়।’ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে হাসনাত বলেন, ‘প্রশাসনকে সতর্ক হতে হবে, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুসংহত যদি করতে না পারি, তাহলে কোনো সময়েই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব না।
হাসনাত আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের যে ঐতিহ্য রয়েছে, সেটা রাজনৈতিকভাবে কলুষিত করা হয়েছে। গডফাদারের রাজনীতি এসব কলুষিত করেছে। এনসিপি নারায়ণগঞ্জে ঐতিহ্য অক্ষুণ্ন রেখে জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে।
এসময় এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব ও শৃঙ্খলা কমিটির প্রধান আবদুল্লাহ আল আমিন, কেন্দ্রীয় সংগঠক শওকত আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য আহমেদুর রহমান তনু ও জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি তুহিন খানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি 





















