Dhaka বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে নিতে হবে : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কিছু বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। বিশেষ করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অর্থবহ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে নিতে হবে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বিএনপির প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যগণ জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, আজকের বৈঠকে আমরা আহ্বান করে আসছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখন থেকে কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) সরকারের ভূমিকা পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে, প্রশাসনকে পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষ করতে হবে। যারা চিহ্নিত ফ্যাসিস্টের দোসর এখনও আছে তাদের সরিয়ে নিরপেক্ষ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা আজকে প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে এসেছিলাম কতগুলো রাজনৈতিক কনসার্ন নিয়ে কথা বলার জন্য। বিশেষ করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই জাতীয় সংসদ অনুষ্ঠানকে অর্থবহ, নিরপেক্ষ, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য এই মুহূর্ত থেকে যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখন কেয়ারটেকার গভার্নমেন্টের আদলে নিতে হবে।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, কেয়ারটেকার গভার্নমেন্ট বলতে আমরা যা বোঝাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকায় তাদেরকে যেতে হবে। সেজন্য প্রথমেই যে বিষয়টির প্রয়োজন হবে, তা হচ্ছে, প্রশাসনকে জনগণের কাছে পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষ করে তৈরি করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সেক্রেটারিয়েটে যারা এখনো আছেন, যাদেরকে চিহ্নিত ফ্যাসিস্টদের দোসর বলা হয়, তাদেরকে সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য আমরা বলেছি। আমরা বলেছি যে জেলা প্রশাসন, বিশেষ করে সেখানেও একইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং আমরা কিছু কিছু কথা বলে এসেছি, যেগুলো আমরা মনে করি যে তারা এখনো সেই ফ্যাস্টিস সরকারের স্বার্থ পূরণ করছে। সেজন্য তাদেরকে অপসারণের কথা আমরা বলেছি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যে সমস্ত পদে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হবে, বা যাদেরকে পদোন্নতি দেওয়া হবে, সেই ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে এসেছি। পাশাপাশি আমরা বলে এসেছি যে বিচার বিভাগে, বিশেষ করে হায়ার জুডিশিয়ারিতে এখনো যে সমস্ত ফ্যাসিস্টদের দোসর আছেন, তাদেরকে সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ বিচারকদের নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও এটা জুডিশিয়ারির ব্যাপার, তারপরেও প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু সবকিছুর দায়িত্বে আছেন, তার কাছে আমরা আমাদের সেই কনসার্নগুলো জানিয়ে এসেছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার কথাও আমরা বলেছি। সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় লোক থেকে থাকেন, তাকে অপসারণ করার জন্য আমরা দাবি জানিয়ে এসেছি, এটাই ছিল প্রধান মূল কথা।

এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে কোনো উপদেষ্টার কথা বলা হয়েছে কি না-জানতে চাইলে কিছু বলেননি ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে সচিবালয়ে এখনো যারা আছেন, যারা চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট, তাদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য আমরা বলেছি। আমরা বলেছি, প্রশাসনেও জেলা প্রশাসনে বিশেষ করে, সেখানেও একইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

পুলিশে নিয়োগের বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলে জানান ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু কথা বলে এসেছি, যেগুলো আমরা মনে করেছি, তারা এখনো পুরনো সরকারের স্বার্থ পূরণ করছে। তাদের অপসারণের কথা আমরা বলে এসেছি। আমরা সেইসঙ্গে পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ করে যেসমস্ত নতুন করে আবার নিয়োগ দেওয়া হবে অথবা পদোন্নতি দেওয়া হবে, সেক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আমরা বলেছি।’

বিচার বিভাগে নিরপেক্ষ বিচারক নিয়োগের কথা বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘আমরা বলে এসেছি, বিচার বিভাগে বিশেষ করে উচ্চ আদালতে এখনো যেসমস্ত ফ্যাসিস্টের দোসর আছে, তাদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ বিচারকদের নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও এটা বিচার বিভাগের বিষয়, এরপরেও প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু সবকিছুর দায়িত্বে আছেন, তার কাছে আমাদের কথাটা জানিয়ে এসেছি।’

এর আগে সন্ধ্যা ৬টার পর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপির প্রতিনিধি দল। বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন- দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে নিতে হবে : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৮:৩২:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কিছু বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে। বিশেষ করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অর্থবহ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে নিতে হবে।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বিএনপির প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যগণ জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, আজকের বৈঠকে আমরা আহ্বান করে আসছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখন থেকে কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) সরকারের ভূমিকা পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে, প্রশাসনকে পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষ করতে হবে। যারা চিহ্নিত ফ্যাসিস্টের দোসর এখনও আছে তাদের সরিয়ে নিরপেক্ষ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা আজকে প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে এসেছিলাম কতগুলো রাজনৈতিক কনসার্ন নিয়ে কথা বলার জন্য। বিশেষ করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই জাতীয় সংসদ অনুষ্ঠানকে অর্থবহ, নিরপেক্ষ, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য এই মুহূর্ত থেকে যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখন কেয়ারটেকার গভার্নমেন্টের আদলে নিতে হবে।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, কেয়ারটেকার গভার্নমেন্ট বলতে আমরা যা বোঝাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকায় তাদেরকে যেতে হবে। সেজন্য প্রথমেই যে বিষয়টির প্রয়োজন হবে, তা হচ্ছে, প্রশাসনকে জনগণের কাছে পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষ করে তৈরি করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সেক্রেটারিয়েটে যারা এখনো আছেন, যাদেরকে চিহ্নিত ফ্যাসিস্টদের দোসর বলা হয়, তাদেরকে সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য আমরা বলেছি। আমরা বলেছি যে জেলা প্রশাসন, বিশেষ করে সেখানেও একইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং আমরা কিছু কিছু কথা বলে এসেছি, যেগুলো আমরা মনে করি যে তারা এখনো সেই ফ্যাস্টিস সরকারের স্বার্থ পূরণ করছে। সেজন্য তাদেরকে অপসারণের কথা আমরা বলেছি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যে সমস্ত পদে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হবে, বা যাদেরকে পদোন্নতি দেওয়া হবে, সেই ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে এসেছি। পাশাপাশি আমরা বলে এসেছি যে বিচার বিভাগে, বিশেষ করে হায়ার জুডিশিয়ারিতে এখনো যে সমস্ত ফ্যাসিস্টদের দোসর আছেন, তাদেরকে সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ বিচারকদের নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও এটা জুডিশিয়ারির ব্যাপার, তারপরেও প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু সবকিছুর দায়িত্বে আছেন, তার কাছে আমরা আমাদের সেই কনসার্নগুলো জানিয়ে এসেছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার কথাও আমরা বলেছি। সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় লোক থেকে থাকেন, তাকে অপসারণ করার জন্য আমরা দাবি জানিয়ে এসেছি, এটাই ছিল প্রধান মূল কথা।

এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে কোনো উপদেষ্টার কথা বলা হয়েছে কি না-জানতে চাইলে কিছু বলেননি ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে সচিবালয়ে এখনো যারা আছেন, যারা চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট, তাদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য আমরা বলেছি। আমরা বলেছি, প্রশাসনেও জেলা প্রশাসনে বিশেষ করে, সেখানেও একইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

পুলিশে নিয়োগের বিষয়েও প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে বলে জানান ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু কথা বলে এসেছি, যেগুলো আমরা মনে করেছি, তারা এখনো পুরনো সরকারের স্বার্থ পূরণ করছে। তাদের অপসারণের কথা আমরা বলে এসেছি। আমরা সেইসঙ্গে পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ করে যেসমস্ত নতুন করে আবার নিয়োগ দেওয়া হবে অথবা পদোন্নতি দেওয়া হবে, সেক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আমরা বলেছি।’

বিচার বিভাগে নিরপেক্ষ বিচারক নিয়োগের কথা বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘আমরা বলে এসেছি, বিচার বিভাগে বিশেষ করে উচ্চ আদালতে এখনো যেসমস্ত ফ্যাসিস্টের দোসর আছে, তাদের সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ বিচারকদের নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও এটা বিচার বিভাগের বিষয়, এরপরেও প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু সবকিছুর দায়িত্বে আছেন, তার কাছে আমাদের কথাটা জানিয়ে এসেছি।’

এর আগে সন্ধ্যা ৬টার পর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিএনপির প্রতিনিধি দল। বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন- দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ।