Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীকে হারিয়ে জিতলেন মমতা

  • যোগাযোগ ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০১:৩০:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মে ২০২১
  • ১৮৯ জন দেখেছেন

ফাইল ছবি

নন্দীগ্রামে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি ফুটল তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মুখেই। তৃণমূলের এক সময়ের ‘হেভিওয়েট’ নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ১ হাজার ২০১ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে জয়ী হলেন তিনি।

২০১১ সালে নন্দীগ্রামের মাটিই একসুতোয় বেঁধে দিয়েছিল মমতা বন্দোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীকে। সেবারের বিধানসভা নির্বাচনে মমতার অনতম্য গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।

একসময়ের কংগ্রেস নেতা শুভেন্দু অধিকারী ২০১১ এবং ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ঘাসফুল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। মমতার সরকারে পরিবহন ও পরিবেশ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি লোকসভায় তৃণমূলের প্রতিনিধিত্ব করার অভিজ্ঞতাও আছে শুভেন্দু অধিকারীর।

কিন্তু এই চিত্র বদলে যায় ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে। যে মাটি তাদের কাছাকাছি টেনেছিল, সময়ের ব্যবধানে সেখানেই একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠেন তারা দু’জন।

রোববার সকালে ভোট গণনা শুরুর পর অনেকক্ষণ শুভেন্দুই এগিয়ে ছিলেন। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে মমতার ব্যবধান ৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

এরপর থেকে শুরু হয় দুই প্রার্থীর ‘সাপ-লুডু’ খেলা। একাদশ রাউন্ডের শেষে দেখা যায় মমতা ৩ হাজার ৩২৭ ভোটে এগিয়ে গেছেন। পরের রাউন্ডেই পিছিয়ে যান সাড়ে ৪ হাজার ভোটে।

১৬ রাউন্ড গণনার শেষে মাত্র ৬ ভোটে এগিয়ে যান শুভেন্দু। ফল নির্ধারিত হয় সপ্তদশ, অর্থাৎ শেষ রাউন্ডের গণনায়। সেখানেই বারোশ’ ভোটের ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেন তৃণমূল সভানেত্রী।

গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর লাগাতার মমতা ও তার ভাতিজা তৃণমূলের কেন্দ্রীয় নেতা অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যান তিনি। এক পর্যায়ে শুভেন্দু অধিকারীর পথ অনুসরণ করে বিজেপিতে যোগ দেন তার বাবা ও তৃণমূলের সাবেক বিধায়ক শিশির অধিকারীও।

সে তুলনায় তৃণমূল অনেক স্তিমিত ছিল। তবে শুভেন্দু ও তার বাবা শিশির অধিকারীর সঙ্গে সম্পর্কের শেষ পেরেক ঠোকেন মমতা বন্দোপাধ্যায়ই। বিধানসভা নির্বাচনে নিজের আসন ভবানীপুর ছেড়ে দিয়ে নন্দীগ্রামে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেন তিনি।

তার পরই বিধানসভা দখলের লড়াইয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির যাবতীয় সমীকরণ উল্টে যায়। ১০ মার্চ আনুষ্ঠাানিক ভাবে নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন মমতা। ওই দিনই নন্দীগ্রামে আক্রান্ত হন মমতা। পায়ে আঘাত পান এবং এরপর তা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে।
দু’দিন পর ১২ মার্চ নন্দীগ্রাম থেকে বিজেপির হয়ে মনোনয়ন জমা দেন শুভেন্দু। মমতাকে হারানোর চ্যালেঞ্জ জানান তিনি। তার পর থেকে বিজেপি-র হেভিওয়েট নেতারা শুভেন্দুর হয়ে সেখানে সভা করে এসেছেন।

সেই তুলনায় নন্দীগ্রামে তৃণমূলের সভা ছিল মমতাসর্বস্বই। তবে সেখানে জেতা নিয়ে শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন মমতা। রোববার যখন ইভিএমের ভোট গণনা শুরু হলো, তখন প্রথম দিকে পদ্মশিবির এগিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত নন্দীগ্রামে তৃণমূলের পক্ষে ভোটের পাল্লা ভারী হবে, এমনটাই ছিলো তার ধারণা।

ব্যাটলগ্রাউন্ড নন্দীগ্রামে তুমুল লড়াই হলেও পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ আসনেই এমনটা দেখা যায়নি। একচেটিয়া জিতে মমতার দলই যে হ্যাটট্রিক তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে তা এখন অনেকটাই স্পষ্ট।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীকে হারিয়ে জিতলেন মমতা

প্রকাশের সময় : ০১:৩০:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মে ২০২১

নন্দীগ্রামে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি ফুটল তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের মুখেই। তৃণমূলের এক সময়ের ‘হেভিওয়েট’ নেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ১ হাজার ২০১ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে জয়ী হলেন তিনি।

২০১১ সালে নন্দীগ্রামের মাটিই একসুতোয় বেঁধে দিয়েছিল মমতা বন্দোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীকে। সেবারের বিধানসভা নির্বাচনে মমতার অনতম্য গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।

একসময়ের কংগ্রেস নেতা শুভেন্দু অধিকারী ২০১১ এবং ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ঘাসফুল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। মমতার সরকারে পরিবহন ও পরিবেশ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি লোকসভায় তৃণমূলের প্রতিনিধিত্ব করার অভিজ্ঞতাও আছে শুভেন্দু অধিকারীর।

কিন্তু এই চিত্র বদলে যায় ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে। যে মাটি তাদের কাছাকাছি টেনেছিল, সময়ের ব্যবধানে সেখানেই একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠেন তারা দু’জন।

রোববার সকালে ভোট গণনা শুরুর পর অনেকক্ষণ শুভেন্দুই এগিয়ে ছিলেন। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে মমতার ব্যবধান ৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

এরপর থেকে শুরু হয় দুই প্রার্থীর ‘সাপ-লুডু’ খেলা। একাদশ রাউন্ডের শেষে দেখা যায় মমতা ৩ হাজার ৩২৭ ভোটে এগিয়ে গেছেন। পরের রাউন্ডেই পিছিয়ে যান সাড়ে ৪ হাজার ভোটে।

১৬ রাউন্ড গণনার শেষে মাত্র ৬ ভোটে এগিয়ে যান শুভেন্দু। ফল নির্ধারিত হয় সপ্তদশ, অর্থাৎ শেষ রাউন্ডের গণনায়। সেখানেই বারোশ’ ভোটের ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেন তৃণমূল সভানেত্রী।

গত ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর লাগাতার মমতা ও তার ভাতিজা তৃণমূলের কেন্দ্রীয় নেতা অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যান তিনি। এক পর্যায়ে শুভেন্দু অধিকারীর পথ অনুসরণ করে বিজেপিতে যোগ দেন তার বাবা ও তৃণমূলের সাবেক বিধায়ক শিশির অধিকারীও।

সে তুলনায় তৃণমূল অনেক স্তিমিত ছিল। তবে শুভেন্দু ও তার বাবা শিশির অধিকারীর সঙ্গে সম্পর্কের শেষ পেরেক ঠোকেন মমতা বন্দোপাধ্যায়ই। বিধানসভা নির্বাচনে নিজের আসন ভবানীপুর ছেড়ে দিয়ে নন্দীগ্রামে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেন তিনি।

তার পরই বিধানসভা দখলের লড়াইয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির যাবতীয় সমীকরণ উল্টে যায়। ১০ মার্চ আনুষ্ঠাানিক ভাবে নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন মমতা। ওই দিনই নন্দীগ্রামে আক্রান্ত হন মমতা। পায়ে আঘাত পান এবং এরপর তা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে।
দু’দিন পর ১২ মার্চ নন্দীগ্রাম থেকে বিজেপির হয়ে মনোনয়ন জমা দেন শুভেন্দু। মমতাকে হারানোর চ্যালেঞ্জ জানান তিনি। তার পর থেকে বিজেপি-র হেভিওয়েট নেতারা শুভেন্দুর হয়ে সেখানে সভা করে এসেছেন।

সেই তুলনায় নন্দীগ্রামে তৃণমূলের সভা ছিল মমতাসর্বস্বই। তবে সেখানে জেতা নিয়ে শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন মমতা। রোববার যখন ইভিএমের ভোট গণনা শুরু হলো, তখন প্রথম দিকে পদ্মশিবির এগিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত নন্দীগ্রামে তৃণমূলের পক্ষে ভোটের পাল্লা ভারী হবে, এমনটাই ছিলো তার ধারণা।

ব্যাটলগ্রাউন্ড নন্দীগ্রামে তুমুল লড়াই হলেও পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ আসনেই এমনটা দেখা যায়নি। একচেটিয়া জিতে মমতার দলই যে হ্যাটট্রিক তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে তা এখন অনেকটাই স্পষ্ট।