Dhaka শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুদের টাকার জন্য গাজীপুরে মা-মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতন!

মা-মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতন!

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঘটেছে আমানবিক ঘটনা। সেখানে সুদে আনা ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদারের লোকজন মা- মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করেছে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তোলপাড় চলছে।

এ ঘটনায় নির্যাতিত নারী (মা) বাদী হয়ে ৮ জনকে অভিযুক্ত করে কালিয়াকৈর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তদন্তে প্রমাণ পাওয়ায় ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী সবুজকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার সিরাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৫ বছর আগে ভুক্তভোগী নারীর স্বামী মারা যান। এর পর থেকে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বন বিভাগের জমিতে বাস করে আসছেন তিনি। পোশাক কারখানায় চাকরি করে মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে আসছেন। অভাব-অনটনের মধ্যে কোনোরকমে মা-মেয়ের সংসার চলছে।

নির্যাতনের শিকার ওই নারী (মা) জানান, অভাবের মধ্যে তিনি স্থানীয় ‘জিনের বাদশা’র খপ্পরে পড়েন। মোটা অঙ্কের টাকা পেলে ওই জিনের বাদশা তার অভাব ঘোচানোর প্রতিশ্রুতি দেন। ‘জিনের বাদশা’র জন্য টাকা যোগাড় করতে তিনি স্থানীয় গফুর ড্রাইভার ও মনির হোসেনের পরিবারসহ কয়েকজনের কাছ থেকে সুদে ঋণ নেন।

ঋণের টাকা তিনি পরিশোধ করতে পারেননি। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইব্রাহীম এক মাসের সময় দেন তাদের। কিন্তু সময় শেষ হওয়ার আগেই বৃহস্পতিবার পাওনাদারেরা তাদের বাড়ি ঘেরাও করে এবং তাকে ও তার কিশোরী মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে।

পুলিশ স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় মা-মেয়েকে উদ্ধার করে। ঘটনার পর অভিযুক্তরা পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে কালিয়াকৈর থানায় ৮ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

অভিযুক্ত আব্দুল গফুর ড্রাইভার বলেন, তাদের টাকা আদায়ের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে। কাউকে মারধর বা গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়নি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।

ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইব্রাহীম সিকদার জানান, ঘটনা শুনে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি মা-মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করছে। পরে তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি দুঃখজনক।

ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে নির্যাতিত মা-মেয়েকে উদ্ধার করা হয়েছে। রাতে মামলা নেওয়া হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল পরিকল্পনাকারী সবুজকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাঁচ মামলায় চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর

সুদের টাকার জন্য গাজীপুরে মা-মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতন!

প্রকাশের সময় : ০১:১৩:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২১

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঘটেছে আমানবিক ঘটনা। সেখানে সুদে আনা ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদারের লোকজন মা- মেয়েকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করেছে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর তোলপাড় চলছে।

এ ঘটনায় নির্যাতিত নারী (মা) বাদী হয়ে ৮ জনকে অভিযুক্ত করে কালিয়াকৈর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তদন্তে প্রমাণ পাওয়ায় ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী সবুজকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার সিরাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৫ বছর আগে ভুক্তভোগী নারীর স্বামী মারা যান। এর পর থেকে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে বন বিভাগের জমিতে বাস করে আসছেন তিনি। পোশাক কারখানায় চাকরি করে মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে আসছেন। অভাব-অনটনের মধ্যে কোনোরকমে মা-মেয়ের সংসার চলছে।

নির্যাতনের শিকার ওই নারী (মা) জানান, অভাবের মধ্যে তিনি স্থানীয় ‘জিনের বাদশা’র খপ্পরে পড়েন। মোটা অঙ্কের টাকা পেলে ওই জিনের বাদশা তার অভাব ঘোচানোর প্রতিশ্রুতি দেন। ‘জিনের বাদশা’র জন্য টাকা যোগাড় করতে তিনি স্থানীয় গফুর ড্রাইভার ও মনির হোসেনের পরিবারসহ কয়েকজনের কাছ থেকে সুদে ঋণ নেন।

ঋণের টাকা তিনি পরিশোধ করতে পারেননি। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইব্রাহীম এক মাসের সময় দেন তাদের। কিন্তু সময় শেষ হওয়ার আগেই বৃহস্পতিবার পাওনাদারেরা তাদের বাড়ি ঘেরাও করে এবং তাকে ও তার কিশোরী মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে।

পুলিশ স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আহত অবস্থায় মা-মেয়েকে উদ্ধার করে। ঘটনার পর অভিযুক্তরা পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় ওই নারী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে কালিয়াকৈর থানায় ৮ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

অভিযুক্ত আব্দুল গফুর ড্রাইভার বলেন, তাদের টাকা আদায়ের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে। কাউকে মারধর বা গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়নি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।

ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইব্রাহীম সিকদার জানান, ঘটনা শুনে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি মা-মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করছে। পরে তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি দুঃখজনক।

ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে নির্যাতিত মা-মেয়েকে উদ্ধার করা হয়েছে। রাতে মামলা নেওয়া হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল পরিকল্পনাকারী সবুজকে গ্রেফতার করা হয়েছে।