Dhaka শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

১০ বছর পর মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) শুরু হচ্ছে দেশের চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি। ১৫ দিন ব্যাপি এই শুমারির তথ্য সংগ্রহের কাজ চলবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সারা দেশে ৯৫ হাজার তথ্য সংগ্রহকারি এবারের শুমারিতে তথ্য সংগ্রহ করবেন।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) অর্থনৈতিক শুমারি-২০২৪ প্রকল্প নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সম্মেলন কক্ষে এ প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শুমারির বিস্তারিত তুলে ধরেন অর্থনৈতিক শুমারি প্রকল্পের ডেপুটি প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, অর্থনৈতিক শুমারিতে ৭০টি প্রশ্ন উঠে আসবে। এবারই প্রথম ট্যাবের মাধ্যমে ক্যাপি পদ্ধতিতে শুমারির তথ্য সংগ্রহ করা হবে। ইতোমধ্যে লিস্টিংয়ের মাধ্যমে ১ কোটি ২২ লাখ ইউনিট চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখান থেকে এবং এর বাইরে থেকেও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এবার শুমারিতে প্রথমবারের মতো দেশে কতজন বিদেশি কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন, তারা কোন ধরনের প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের পদে কর্মরত আছেন এবং নারী-পুরুষ কতজন– সেসব তথ্য তুলে ধরা হবে।

আরও জানানো হয়, সারা দেশে ৯৫ হাজার তথ্য সংগ্রহকারী এবারের শুমারিতে তথ্য সংগ্রহ করবেন। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে প্রতি ১০ বছর পর এমন শুমারি করছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। ইতোমধ্যে প্রচারসহ অন্যান্য প্রস্তুতিও শেষ করা হয়েছে।

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘শুমারির কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে শেষ করার জন্য জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) ও জিও কোড সমন্বয় করে ডিজিটাল ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহে ব্যবহৃত ট্যাবলেটগুলো মোবাইল ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট (এমডিএম) সফটওয়্যার ব্যবহার করে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাঠ পর্যায় থেকে সংগৃহীত তথ্য সংরক্ষণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ডাটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেডের (বিডিসিসিএল) সমৃদ্ধ ডেটা সেন্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায় থেকে বিডিসিসিএল হয়ে বিবিএস সার্ভারে আসার আগ পর্যন্ত সংগৃহীত সব তথ্য-উপাত্ত গোপন অবস্থায় থাকবে। যার মাধ্যমে পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ অনুযায়ী একদিকে তথ্য সংগ্রহে শুমারি কর্মীদের সহযোগিতা করা, অপরদিকে এই আইন দ্বারা জনসাধারণের প্রত্যেকের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা হবে।

বিবিএস মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ও প্রবণতা সম্পর্কে সঠিক এবং আপডেটেড তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে, যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিবিএসের কর্মকর্তারা প্রতিটি ধাপে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছেন। এবারের অর্থনৈতিক শুমারির তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতিকে আরও উন্নত করার জন্য প্রচার-প্রচারণা এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম করা হচ্ছে।’

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. দিপঙ্কর রায় বলেন, ‘শুমারির তথ্য-উপাত্তের গুণগতমান নিশ্চিত করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিন ধাপে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে মাস্টার ট্রেইনারদের প্রশিক্ষণ, দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা শুমারি সমন্বয়কারী, জোনাল অফিসার ও আইটি সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ এবং তৃতীয় ধাপে গণনাকারী ও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।’

এই শুমারির মাধ্যমে দেশের সব ইউনিটকে কাভার করা হবে। অর্থনৈতিক শুমারির এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘অর্থনৈতিক শুমারিতে তথ্য দিন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে অংশ নিন’। সারা দেশে ৯০ হাজার গণনাকারি এই শুমারিতে অংশ নেবেন। ডিজিটাল শুমারিতে ১ লাখ ৪০ হাজার ট্যাব ব্যবহার করা হবে। বাংলাদেশকে ১৩টি শুমারিতে ভাগ করা হয়েছে।

দেশের সর্বপ্রথম অর্থনৈতিক শুমারি ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়, এরপর দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শুমারি ২০০১ এবং ২০০৩ সালে পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হয়, তৃতীয় অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে বাংলাদেশের চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

ব্রিফিংয়ে শুমারির বিস্তারিত তুলে ধরেন অর্থনৈতিক শুমারি প্রকল্পের ডেপুটি প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান, অর্থনৈতিক শুমারি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এস এম শাকিল আখতার। উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. হামিদুল হক, যুগ্ম সচিব ড. দীপঙ্কর রায় প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

এনসিপি থেকে পদত্যাগ, স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন তাসনিম জারা

মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি

প্রকাশের সময় : ০৩:২৭:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

১০ বছর পর মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) শুরু হচ্ছে দেশের চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি। ১৫ দিন ব্যাপি এই শুমারির তথ্য সংগ্রহের কাজ চলবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সারা দেশে ৯৫ হাজার তথ্য সংগ্রহকারি এবারের শুমারিতে তথ্য সংগ্রহ করবেন।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) অর্থনৈতিক শুমারি-২০২৪ প্রকল্প নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সম্মেলন কক্ষে এ প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় শুমারির বিস্তারিত তুলে ধরেন অর্থনৈতিক শুমারি প্রকল্পের ডেপুটি প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, অর্থনৈতিক শুমারিতে ৭০টি প্রশ্ন উঠে আসবে। এবারই প্রথম ট্যাবের মাধ্যমে ক্যাপি পদ্ধতিতে শুমারির তথ্য সংগ্রহ করা হবে। ইতোমধ্যে লিস্টিংয়ের মাধ্যমে ১ কোটি ২২ লাখ ইউনিট চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখান থেকে এবং এর বাইরে থেকেও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এবার শুমারিতে প্রথমবারের মতো দেশে কতজন বিদেশি কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন, তারা কোন ধরনের প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের পদে কর্মরত আছেন এবং নারী-পুরুষ কতজন– সেসব তথ্য তুলে ধরা হবে।

আরও জানানো হয়, সারা দেশে ৯৫ হাজার তথ্য সংগ্রহকারী এবারের শুমারিতে তথ্য সংগ্রহ করবেন। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে প্রতি ১০ বছর পর এমন শুমারি করছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। ইতোমধ্যে প্রচারসহ অন্যান্য প্রস্তুতিও শেষ করা হয়েছে।

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, ‘শুমারির কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে শেষ করার জন্য জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) ও জিও কোড সমন্বয় করে ডিজিটাল ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহে ব্যবহৃত ট্যাবলেটগুলো মোবাইল ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট (এমডিএম) সফটওয়্যার ব্যবহার করে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাঠ পর্যায় থেকে সংগৃহীত তথ্য সংরক্ষণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ডাটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেডের (বিডিসিসিএল) সমৃদ্ধ ডেটা সেন্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায় থেকে বিডিসিসিএল হয়ে বিবিএস সার্ভারে আসার আগ পর্যন্ত সংগৃহীত সব তথ্য-উপাত্ত গোপন অবস্থায় থাকবে। যার মাধ্যমে পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ অনুযায়ী একদিকে তথ্য সংগ্রহে শুমারি কর্মীদের সহযোগিতা করা, অপরদিকে এই আইন দ্বারা জনসাধারণের প্রত্যেকের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা হবে।

বিবিএস মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ও প্রবণতা সম্পর্কে সঠিক এবং আপডেটেড তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে, যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিবিএসের কর্মকর্তারা প্রতিটি ধাপে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছেন। এবারের অর্থনৈতিক শুমারির তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতিকে আরও উন্নত করার জন্য প্রচার-প্রচারণা এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম করা হচ্ছে।’

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. দিপঙ্কর রায় বলেন, ‘শুমারির তথ্য-উপাত্তের গুণগতমান নিশ্চিত করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিন ধাপে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে মাস্টার ট্রেইনারদের প্রশিক্ষণ, দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা শুমারি সমন্বয়কারী, জোনাল অফিসার ও আইটি সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ এবং তৃতীয় ধাপে গণনাকারী ও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।’

এই শুমারির মাধ্যমে দেশের সব ইউনিটকে কাভার করা হবে। অর্থনৈতিক শুমারির এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘অর্থনৈতিক শুমারিতে তথ্য দিন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে অংশ নিন’। সারা দেশে ৯০ হাজার গণনাকারি এই শুমারিতে অংশ নেবেন। ডিজিটাল শুমারিতে ১ লাখ ৪০ হাজার ট্যাব ব্যবহার করা হবে। বাংলাদেশকে ১৩টি শুমারিতে ভাগ করা হয়েছে।

দেশের সর্বপ্রথম অর্থনৈতিক শুমারি ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়, এরপর দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শুমারি ২০০১ এবং ২০০৩ সালে পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হয়, তৃতীয় অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে বাংলাদেশের চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

ব্রিফিংয়ে শুমারির বিস্তারিত তুলে ধরেন অর্থনৈতিক শুমারি প্রকল্পের ডেপুটি প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান, অর্থনৈতিক শুমারি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এস এম শাকিল আখতার। উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. হামিদুল হক, যুগ্ম সচিব ড. দীপঙ্কর রায় প্রমুখ।