Dhaka শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই শেখ হাসিনা সরকারের গণহত্যার স্বীকৃতি ভারতকে দিতে হবে: মাহফুজ আলম

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৫৭:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ২০৭ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার যে গণহত্যা চালিয়েছে, তার স্বীকৃতি ভারতকে দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

মাহফুজ আলম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে গণহত্যা হয়েছে, তার স্বীকৃতি ভারতকে দিতে হবে। এখানে যত ধরনের নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চটুকু করব। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে অব্যশই তাদের গণমাধ্যমের ভূমিকা, যখন তাদের বলার সুযোগ হয়েছে বলেছি। তাদের বিষয়গুলো দেখার অনুরোধ করেছি। অপপ্রচার দুই দেশের বন্ধুত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। আমরা আশা করি তাদের সুমতি হবে। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের দায়িত্ব হচ্ছে সত্যটা তুলে ধরার। সত্যিটাকে জয়ী করতে হবে। আমাদের গণঅভ্যুত্থান আমাদের রক্ষা করতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইন দেখবে কে অপরাধী। সেখানে ধর্ম, বর্ণ, জাত দেখা হবে না।

মাহফুজ আলম বলেন, ভারতীয় আগ্রাসনের চেয়েও বড় বিষয় হলো আমরা নিজেদের শক্তি কতটুকু বৃদ্ধি করতে পারলাম। আমাদের নিজেদের ভেতরে সংহতি আছে, কতটুকু প্রস্তুতি আছে। আগ্রাসনের কথা শুনতেই পারি। অনেক ধরনের আগ্রাসন অনেক দেশই করতে পারে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে শক্তি বৃদ্ধি করব, শক্তিশালী হব। এটাই দৃষ্টিভঙ্গি।

দেশবিরোধী অপপ্রচার রোধে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সরকার কাজ করবে জানিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও কৌশলের বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা করেছি। আশা করছি দ্রুত কিছু ফলপ্রসূ পদক্ষেপ দেখতে পাবেন। বিশেষ করে প্রেস উইং এ কাজটা করছে দীর্ঘদিন ধরে। আমরা মনে করি দেশের জনগণ ও গণমাধ্যম সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিপ্লব করে যাচ্ছে। এটা পুরো দুনিয়ায় তুলে ধরতে পারব।

তিনি বলেন, যেকোন নিপীড়নের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব, ষড়যন্ত্র রুখতে আমরা প্রো-অ্যাক্টিভ কাজ করব, জাতীয় ঐক্যের দিকে এগোব।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার যেকোনো মূল্যে, যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখতে প্রোঅ্যাক্টিভ কাজ করবে, কোনো ধরনের রিঅ্যাকশানার কাজ সরকার করবে। হঠকারী কাজ এ সরকার আশ্রয় ও প্রশ্রয় দেবে না। বরং আমার জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির দিকে এগোব।

তিনি বলেন, দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে বৃহৎ পরিসরে আবার সংলাপে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মাহফুজ আলম বলেন, আজকের সব ধর্মীয় নেতাদের বক্তব্য প্রধান উপদেষ্টা শুনেছেন। এর মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশের পক্ষে ও বিপক্ষে যেসব শক্তি রয়েছে তাদের একটা বার্তা সরকার দিতে চেয়েছে। সেটা হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ সম্প্রদায়গত দিক থেকে একটা পয়েন্টে আছ, এক জায়গায় মিলিত হয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের সংহতির শক্তি বৃদ্ধি করব। বাইরের যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন, আমরা যদি এ দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িকভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকি। আরও অন্যান্য ক্ষেত্র বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে বাইরে যতই অপপ্রচার চুলুক, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এটাই প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন।

মাহফুজ আলম বলেন, এখানে হিন্দুসহ অন্য সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কোনো নিপীড়ন হয়ে থাকলে.. আমরা বলি না যে নিপীড়ন হয় না, অলআউট বলটা অসত্য। কিন্তু যদি হয়ে থাকলে সেটার বিপরীতে সরকারের ব্যবস্থা আপনারা প্রচার করবেন।

সুনামগঞ্জের ঘটনায় সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে মাহফুজ আলম সেটা গণমাধ্যমে প্রচার করার অনুরোধ করেন।

তিনি বলেন, তাহলে তারা ট্রাস্ট (বিশ্বাস) পাবেন। এ দেশটা তাদের, সকল নাগরিকের। প্রধান উপদেষ্টা শেষমেশ বলেছেন, সম্প্রীতি দরকার। সেটার সঙ্গে ভয় যাতে জড়িয়ে না যায়। বরং নাগরিকেরা নির্ভয়ে চলাফেরা করতে পারে, সবার মধ্যে মেলবন্ধন খুব স্বাভাবিকভাবে হয়। শুধু আমরা ঠেকায় পড়ছি তাই হিন্দু, বৌদ্ধদের ডাকতেছি, তা যেন না হয়। এটা স্যারের ও সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি। বরং সহজ ঐক্য ও সম্প্রীতি বজায় থাকে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী যে পথে রওনা দিয়েছে… এ পথে যাতে অনেক দূর যেতে পারি।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, বাংলাদেশের সকল দল, মত, পথ ও ধর্মের মানুষ একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে দাঁড় করাতে পারি। এ জন্য ধর্মীয় নেতাদের সমর্থন চেয়েছি। তারা অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন। আমরা আশা করি বাংলাদেশ যে গতিতে এগোচ্ছে এবং বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্য হচ্ছে, এটা ভবিষ্যতে অনেক দূরে এগিয়ে যাবে।

সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে গণমাধ্যমকে সঠিক তথ্য তুলে ধরার আহ্বান জানান মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, আমরা প্রেসনোট দিচ্ছি না। বরং বাংলাদেশের যেখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে সত্যতা তুলে ধরুন। আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

খানাখন্দে ভরা সুনামগঞ্জ-জামালগঞ্জ সড়ক, তিন উপজেলার যাত্রীদের দুর্ভোগ

জুলাই শেখ হাসিনা সরকারের গণহত্যার স্বীকৃতি ভারতকে দিতে হবে: মাহফুজ আলম

প্রকাশের সময় : ০৯:৫৭:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার যে গণহত্যা চালিয়েছে, তার স্বীকৃতি ভারতকে দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

মাহফুজ আলম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে গণহত্যা হয়েছে, তার স্বীকৃতি ভারতকে দিতে হবে। এখানে যত ধরনের নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চটুকু করব। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে অব্যশই তাদের গণমাধ্যমের ভূমিকা, যখন তাদের বলার সুযোগ হয়েছে বলেছি। তাদের বিষয়গুলো দেখার অনুরোধ করেছি। অপপ্রচার দুই দেশের বন্ধুত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। আমরা আশা করি তাদের সুমতি হবে। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের দায়িত্ব হচ্ছে সত্যটা তুলে ধরার। সত্যিটাকে জয়ী করতে হবে। আমাদের গণঅভ্যুত্থান আমাদের রক্ষা করতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইন দেখবে কে অপরাধী। সেখানে ধর্ম, বর্ণ, জাত দেখা হবে না।

মাহফুজ আলম বলেন, ভারতীয় আগ্রাসনের চেয়েও বড় বিষয় হলো আমরা নিজেদের শক্তি কতটুকু বৃদ্ধি করতে পারলাম। আমাদের নিজেদের ভেতরে সংহতি আছে, কতটুকু প্রস্তুতি আছে। আগ্রাসনের কথা শুনতেই পারি। অনেক ধরনের আগ্রাসন অনেক দেশই করতে পারে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে শক্তি বৃদ্ধি করব, শক্তিশালী হব। এটাই দৃষ্টিভঙ্গি।

দেশবিরোধী অপপ্রচার রোধে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সরকার কাজ করবে জানিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও কৌশলের বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা করেছি। আশা করছি দ্রুত কিছু ফলপ্রসূ পদক্ষেপ দেখতে পাবেন। বিশেষ করে প্রেস উইং এ কাজটা করছে দীর্ঘদিন ধরে। আমরা মনে করি দেশের জনগণ ও গণমাধ্যম সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিপ্লব করে যাচ্ছে। এটা পুরো দুনিয়ায় তুলে ধরতে পারব।

তিনি বলেন, যেকোন নিপীড়নের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব, ষড়যন্ত্র রুখতে আমরা প্রো-অ্যাক্টিভ কাজ করব, জাতীয় ঐক্যের দিকে এগোব।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার যেকোনো মূল্যে, যেকোনো ষড়যন্ত্র রুখতে প্রোঅ্যাক্টিভ কাজ করবে, কোনো ধরনের রিঅ্যাকশানার কাজ সরকার করবে। হঠকারী কাজ এ সরকার আশ্রয় ও প্রশ্রয় দেবে না। বরং আমার জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির দিকে এগোব।

তিনি বলেন, দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে বৃহৎ পরিসরে আবার সংলাপে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মাহফুজ আলম বলেন, আজকের সব ধর্মীয় নেতাদের বক্তব্য প্রধান উপদেষ্টা শুনেছেন। এর মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশের পক্ষে ও বিপক্ষে যেসব শক্তি রয়েছে তাদের একটা বার্তা সরকার দিতে চেয়েছে। সেটা হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ সম্প্রদায়গত দিক থেকে একটা পয়েন্টে আছ, এক জায়গায় মিলিত হয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের সংহতির শক্তি বৃদ্ধি করব। বাইরের যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন, আমরা যদি এ দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িকভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকি। আরও অন্যান্য ক্ষেত্র বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকি তাহলে বাইরে যতই অপপ্রচার চুলুক, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এটাই প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন।

মাহফুজ আলম বলেন, এখানে হিন্দুসহ অন্য সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কোনো নিপীড়ন হয়ে থাকলে.. আমরা বলি না যে নিপীড়ন হয় না, অলআউট বলটা অসত্য। কিন্তু যদি হয়ে থাকলে সেটার বিপরীতে সরকারের ব্যবস্থা আপনারা প্রচার করবেন।

সুনামগঞ্জের ঘটনায় সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে মাহফুজ আলম সেটা গণমাধ্যমে প্রচার করার অনুরোধ করেন।

তিনি বলেন, তাহলে তারা ট্রাস্ট (বিশ্বাস) পাবেন। এ দেশটা তাদের, সকল নাগরিকের। প্রধান উপদেষ্টা শেষমেশ বলেছেন, সম্প্রীতি দরকার। সেটার সঙ্গে ভয় যাতে জড়িয়ে না যায়। বরং নাগরিকেরা নির্ভয়ে চলাফেরা করতে পারে, সবার মধ্যে মেলবন্ধন খুব স্বাভাবিকভাবে হয়। শুধু আমরা ঠেকায় পড়ছি তাই হিন্দু, বৌদ্ধদের ডাকতেছি, তা যেন না হয়। এটা স্যারের ও সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি। বরং সহজ ঐক্য ও সম্প্রীতি বজায় থাকে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী যে পথে রওনা দিয়েছে… এ পথে যাতে অনেক দূর যেতে পারি।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, বাংলাদেশের সকল দল, মত, পথ ও ধর্মের মানুষ একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে দাঁড় করাতে পারি। এ জন্য ধর্মীয় নেতাদের সমর্থন চেয়েছি। তারা অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন। আমরা আশা করি বাংলাদেশ যে গতিতে এগোচ্ছে এবং বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্য হচ্ছে, এটা ভবিষ্যতে অনেক দূরে এগিয়ে যাবে।

সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে গণমাধ্যমকে সঠিক তথ্য তুলে ধরার আহ্বান জানান মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, আমরা প্রেসনোট দিচ্ছি না। বরং বাংলাদেশের যেখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে সত্যতা তুলে ধরুন। আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।