স্পোর্টস ডেস্ক :
গল টেস্টে সফরকারী নিউজিল্যান্ডকে ইনিংস ও ১৫৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের করা ৬০২ রানের বিপরীতে মাত্র ৮৮ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। নিশান পেরিসের দুর্দান্ত বোলিংয়ের তোপে ফলো অনে পড়া কিউইদের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ৩৬০ রানে। দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ তে জিতে নেয় লঙ্কানরা।
এ নিয়ে অর্ধযুগ পর ইনিংস ব্যবধানে হারলো কিউইরা। ২০১৮ সালের নভেম্বরে দুবাই টেস্টে শেষবার তারা পাকিস্তানের বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিলো।
নিউজিল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করে শ্রীলঙ্কা গড়েছে আরও এক রেকর্ড। ২০০০ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত গলে ২৬ টেস্ট জিতেছে লঙ্কানরা। যা গত ২৪ বছরের হিসাবে নির্দিষ্ট ভেন্যুতে সর্বোচ্চ টেস্ট জয়। শ্রীলঙ্কা এই সময়ে (গত ২৪ বছরে) গলে খেলেছে ৪৪ টেস্ট। দুইয়ে থাকা ইংল্যান্ড সবশেষ ২৪ বছরে লর্ডসে জিতেছে ২৫ টেস্ট। এই ভেন্যুতে এই সময়ে ইংলিশরা খেলেছে ৪৩ টেস্ট।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৯ রানে আজ চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে নিউজিল্যান্ড। ইনিংস পরাজয় এড়াতে তখনো ৩১৫ রান দূরে কিউইরা। রানের পাহাড়ে পিষ্ট নিউজিল্যান্ড চতুর্থ দিনের খেলা শুরুর অল্প সময় পরই হারায় ষষ্ঠ উইকেট। ৪৫তম ওভারের তৃতীয় বলে টম ব্লান্ডেলকে এলবিডব্লিউ করেন নিশান পেইরিস। যেখানে পেইরিস এই টেস্ট দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামেন।
৬৪ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৬০ রান করে ব্লান্ডেল যখন আউট হয়েছেন, নিউজিল্যান্ডের স্কোর হয়েছে ৪৪.৩ ওভারে ৬ উইকেটে ২১৬ রান। যেখানে ষষ্ঠ উইকেটে ব্লান্ডেল ও গ্লেন ফিলিপস গড়েন ৯৫ রানের জুটি। এই জুটিতে তাঁরা খেলেছেন ১০৫ বল। ব্লান্ডেল আউট হলেও ফিলিপস খেলতে থাকেন ওয়ানডে মেজাজে। ৬৬ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি তুলে নেন ফিলিপস। নিউজিল্যান্ডের এই ব্যাটারকে ফিরিয়ে অভিষেক টেস্টে ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন পেইরিস।
ফিলিপস ৯৯ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৮ রান করেন। নিউজিল্যান্ডের এই মিডল অর্ডার ব্যাটারের পর টিম সাউদিও দ্রুত ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন। ৬৫তম ওভারের তৃতীয় বলে কিউই অধিনায়ক সাউদিকে বোল্ড করেন প্রবাথ জয়াসুরিয়া। ফিলিপস, সাউদি দুই ব্যাটারকে হারিয়ে নিউজিল্যান্ডের স্কোর হয়ে যায় ৬৪.৩ ওভারে ৮ উইকেটে ২৯১ রান।
শ্রীলঙ্কার জয় যখন সময়ের ব্যাপার মাত্র, তখন সেটাকে আরও বেশি দীর্ঘায়িত করেন মিচেল স্যান্টনার। ৯৭ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নিয়েছেন স্যান্টনার। নিউজিল্যান্ডের এই বাঁহাতি ব্যাটারকে ফিরিয়েই সফরকারীদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছেন পেইরিস। ৮১.৪ ওভারে কিউইরা অলআউট হয়েছে ৩৬০ রানে। ১১৫ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৭ রান করেন স্যান্টনার। দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ৭৮ রান করেন ফিলিপস।
ম্যাচসেরা হয়েছেন কামিন্দু মেন্ডিস। প্রথম ইনিংসে ২৫০ বলে ১৮২ রানের রেকর্ড গড়া ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন কামিন্দু। ১৬ চার ও ৪ ছক্কা মেরেছেন লঙ্কান এই বাঁহাতি ব্যাটার। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সিরিজসেরা হয়েছেন জয়াসুরিয়া। সিরিজে সর্বোচ্চ ১৮ উইকেট নিয়েছেন লঙ্কান এই বাঁহাতি স্পিনার।
ইনিংস ও ১৫৪ রানে হেরে টেস্টে ৬ বছর ইনিংস ব্যবধানে হারল নিউজিল্যান্ড। সবশেষ তাদের সঙ্গে এমনটা হয়েছিল ২০১৮ সালে। দুবাইয়ে সেবার পাকিস্তানের কাছে কিউইরা হেরেছিল ইনিংস ও ১৬ রানে।
গলে দ্বিতীয় টেস্টে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। ৫ উইকেটে ৬০২ রানে প্রথম ইনিংসের খেলা ঘোষণা করে লঙ্কানরা। কামিন্দু মেন্ডিসের পাশাপাশি কুশল মেন্ডিসও পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। নিউজিল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়েছে ৮৮ রানে। তখন জয়াসুরিয়া ও পেইরিস নেন ৬ ও ৩ উইকেট।