Dhaka রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জঙ্গিবাদকে খতম করার জন্যই ইসলাম পৃথিবীতে এসেছে : জামায়াতের নায়েবে আমির

রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি : 

জঙ্গিবাদকে খতম করার জন্যই ইসলাম পৃথিবীতে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী নগরীর গেটার রোড এলাকার শাহ ডাইন কনভেনশন হলে ‘বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.) এর আদর্শ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, যারা অপপ্রচার করে ইসলামকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে, আল্লাহ দুনিয়াতে তাদের বিচার যেমন করেছেন আখেরাতেও করবেন। বিচার তাদের হতেই হবে, দুনিয়া এবং আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে তারা বাধ্য। তারা ইসলামকে বিভিন্নভাবে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু ইসলামকে তারা কলঙ্কিত করতে পারে নাই, পারবে না, বরং নিজেরাই কলঙ্কিত হয়ে বিদায় হয়েছে।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আমাদের পকেটের পয়সায় পুলিশ বেতন খাবে, অস্ত্র কিনবে, বুলেট কিনবে আবার আমাদের দেশের জনসাধারণকেই গুলি করে হত্যা করবে- এটা কি কল্পনা করা যায়? সবচেয়ে জঘন্য কাজ করে গেছেন তারা। আর আমি বলব তাকে (শেখ হাসিনা) খুনি সরকার ছাড়া বিকল্প কোনো কথায় মানাবে না।

তিনি বলেন, আজ অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে। উপদেষ্টারা সংস্কার শুরু করেছেন। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই। সংস্কার করবেন করেন। গোটা স্টাফ (পুলিশ) যদি পচে যায়, তাহলে এগুলোকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিলে কি সমাজ ঠিক হবে? বলা হচ্ছে অমুককে এখান থেকে ওখানে দিয়েছে। এই পচা লোক আপনি যেখানে দেবেন সেখানেই আবার পচাবে, নষ্ট করবে। অতএব এটা দিয়ে সমাধান, সংশোধন হবে না। বৈষম্যহীন সমাজ করা যাবে না। সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আল্লাহর ভয় যাদের আছে তাদের দিতে হবে। প্রয়োজন হলে নতুন পুলিশ, নতুন আর্মি, নতুন বিজিবি নিতে হবে। প্রশাসনের যত কাঠামো আছে সেখানে নতুন লোক, যারা আল্লাহর ভয়ে ভীত তাদের নিতে হবে। যারা ন্যায় ও ইনসাফ করতে পারবে এমন লোক না বসানো পর্যন্ত এই পচা সমাজ ভালো হবে না।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, এই বৈষম্যের ব্যাপারে আমি বলতে চাই। আন্দোলন শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালে বৈষম্যকে কেন্দ্র করে। কিন্তু বিগত বছরে যারাই ক্ষমতায় এসেছে কেউ কিন্তু বৈষম্য দূর করেনি। এই বৈষম্য চলতেই আছে। আমার কাছে মনে হয় আল্লাহ তাআলার সেই কথা- আমি সৃষ্টি করেছি জিন ও মানুষকে কেবল এ জন্য যে, তারা আমারই ইবাদত করবে। তাই আল্লাহর গোলামি যতদিন প্রতিষ্ঠা না হবে ততদিন বৈষম্য চলছে, চলতেই থাকবে। এটা কেউ বন্ধ করতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা বৈষম্যহীন সমাজ মানি। কোরআন-সুন্নাহর সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যতদিন পর্যন্ত কোরআন এবং সুন্নাহ দ্বারা এই রাষ্ট্র পরিচালিত না হবে, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হবে, ততদিন বৈষম্য চলতেই থাকবে।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) নিজেদের দলের লোক ছাড়া অন্য কাউকে চাকরিবাকরি দিতে চাইতো না। এরচেয়ে বড় বৈষম্য আর কী হতে পারে। পুলিশে মাদরাসার ছাত্রদের চাকরি দেয়নি, অন্য কোনো বিরোধীদলের লোককে দেয়নি। পুলিশ বলেন, আর্মি বলেন, বিডিআর (বিজিবি) বলেন, র‌্যাব বলেন বৈষম্য দিয়ে গোটা সমাজ নষ্ট করে রেখে গেছে।

রাজশাহী মহানগরীর আমির ড. মাওলানা কেরামত আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. এ কে এম আবদুল লতিফ। প্রধান আলোচক ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মাওলানা নাসির উদ্দিন হেলালী। প্রবন্ধকার ছিলেন রাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মাসুদ আলম। অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাসপোর্ট ও ভিসা উইং কর্মকর্তাদের সেবার মনোবৃত্তি নিয়ে কাজ করার আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

জঙ্গিবাদকে খতম করার জন্যই ইসলাম পৃথিবীতে এসেছে : জামায়াতের নায়েবে আমির

প্রকাশের সময় : ০৪:৪২:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি : 

জঙ্গিবাদকে খতম করার জন্যই ইসলাম পৃথিবীতে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজশাহী নগরীর গেটার রোড এলাকার শাহ ডাইন কনভেনশন হলে ‘বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় মহানবী (সা.) এর আদর্শ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, যারা অপপ্রচার করে ইসলামকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে, আল্লাহ দুনিয়াতে তাদের বিচার যেমন করেছেন আখেরাতেও করবেন। বিচার তাদের হতেই হবে, দুনিয়া এবং আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে তারা বাধ্য। তারা ইসলামকে বিভিন্নভাবে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু ইসলামকে তারা কলঙ্কিত করতে পারে নাই, পারবে না, বরং নিজেরাই কলঙ্কিত হয়ে বিদায় হয়েছে।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আমাদের পকেটের পয়সায় পুলিশ বেতন খাবে, অস্ত্র কিনবে, বুলেট কিনবে আবার আমাদের দেশের জনসাধারণকেই গুলি করে হত্যা করবে- এটা কি কল্পনা করা যায়? সবচেয়ে জঘন্য কাজ করে গেছেন তারা। আর আমি বলব তাকে (শেখ হাসিনা) খুনি সরকার ছাড়া বিকল্প কোনো কথায় মানাবে না।

তিনি বলেন, আজ অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে। উপদেষ্টারা সংস্কার শুরু করেছেন। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই। সংস্কার করবেন করেন। গোটা স্টাফ (পুলিশ) যদি পচে যায়, তাহলে এগুলোকে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিলে কি সমাজ ঠিক হবে? বলা হচ্ছে অমুককে এখান থেকে ওখানে দিয়েছে। এই পচা লোক আপনি যেখানে দেবেন সেখানেই আবার পচাবে, নষ্ট করবে। অতএব এটা দিয়ে সমাধান, সংশোধন হবে না। বৈষম্যহীন সমাজ করা যাবে না। সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আল্লাহর ভয় যাদের আছে তাদের দিতে হবে। প্রয়োজন হলে নতুন পুলিশ, নতুন আর্মি, নতুন বিজিবি নিতে হবে। প্রশাসনের যত কাঠামো আছে সেখানে নতুন লোক, যারা আল্লাহর ভয়ে ভীত তাদের নিতে হবে। যারা ন্যায় ও ইনসাফ করতে পারবে এমন লোক না বসানো পর্যন্ত এই পচা সমাজ ভালো হবে না।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, এই বৈষম্যের ব্যাপারে আমি বলতে চাই। আন্দোলন শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালে বৈষম্যকে কেন্দ্র করে। কিন্তু বিগত বছরে যারাই ক্ষমতায় এসেছে কেউ কিন্তু বৈষম্য দূর করেনি। এই বৈষম্য চলতেই আছে। আমার কাছে মনে হয় আল্লাহ তাআলার সেই কথা- আমি সৃষ্টি করেছি জিন ও মানুষকে কেবল এ জন্য যে, তারা আমারই ইবাদত করবে। তাই আল্লাহর গোলামি যতদিন প্রতিষ্ঠা না হবে ততদিন বৈষম্য চলছে, চলতেই থাকবে। এটা কেউ বন্ধ করতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা বৈষম্যহীন সমাজ মানি। কোরআন-সুন্নাহর সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যতদিন পর্যন্ত কোরআন এবং সুন্নাহ দ্বারা এই রাষ্ট্র পরিচালিত না হবে, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হবে, ততদিন বৈষম্য চলতেই থাকবে।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) নিজেদের দলের লোক ছাড়া অন্য কাউকে চাকরিবাকরি দিতে চাইতো না। এরচেয়ে বড় বৈষম্য আর কী হতে পারে। পুলিশে মাদরাসার ছাত্রদের চাকরি দেয়নি, অন্য কোনো বিরোধীদলের লোককে দেয়নি। পুলিশ বলেন, আর্মি বলেন, বিডিআর (বিজিবি) বলেন, র‌্যাব বলেন বৈষম্য দিয়ে গোটা সমাজ নষ্ট করে রেখে গেছে।

রাজশাহী মহানগরীর আমির ড. মাওলানা কেরামত আলীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. এ কে এম আবদুল লতিফ। প্রধান আলোচক ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মাওলানা নাসির উদ্দিন হেলালী। প্রবন্ধকার ছিলেন রাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মাসুদ আলম। অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।