Dhaka বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রয়োজনে তিস্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যাবে সরকার : পরিবেশ ও পানি উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

তিস্তাসহ অভিন্ন নদীতে নিজেদের অধিকারের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে সরকার কথা বলবে বলে জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ ও পানি উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, তিস্তা পাড়ের মানুষের মতামত নিয়ে এ বিষয়ে কাজ শুরু করা হবে। প্রয়োজনে তিস্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যাবে সরকার।

বুধবার (২১ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে নিজের দেশের মানুষের কথা চিন্তা করছেন, তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আমরাও আমাদের মানুষের কথা ভেবে পরবর্তী সিদ্ধান্তে যাবো। ভারতের সঙ্গে বন্ধুপ্রতীম সম্পর্ক বজায় রেখে প্রয়োজনে তিস্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে যাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

সেপ্টেম্বর থেকে পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আপনি যে দোকানে যান সে দোকান থেকে পলিথিন ব্যাগ কিনে আনেন। আমি আপনিও বলি না পলিথিন ব্যাগ দিচ্ছেন কেন, এটা তো নিষিদ্ধ। আমরাও তো হাতে করে নিয়ে আসি। মার্কেটগুলোতে গিয়ে পলিথিন ব্যাগগুলো প্রথমে আমরা বলব ১৫ থেকে ২০ দিন তারপর আমরা অভিযানে যাব। এগুলো আপাতত সিদ্ধান্ত।

কবে থেকে অভিযান শুরু হবে- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি তারিখ নির্ধারিত হয়নি। কারণ এর সঙ্গে আরো কয়েকটি সংস্থা সম্পৃক্ত। এখন সবাই একটা আন্দোলনের মুডে আছে। সবাই সবার দাবি পেশ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ওইদিকে ব্যস্ত আছে। তবে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আপনারা কার্যক্রমের শুরু দেখতে পারবেন।

বায়ু দূষণ একদিনে সমাধান হবে না জানিয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, কিন্তু এই শীতের আগে যেন বায়ু দূষণের কয়েকটি উৎসকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, সেজন্য বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা করছি। নির্মাণ কাজ আর অনুমোদন দেওয়া হবে না, যদি তারা বায়ুদূষণ প্রশমনের পরিকল্পনা ও টাকা যদি না দেখায়। সেগুলো মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা কথা বলতে পারি।

তিনি আরও বলেন, এখানে মেগা পরিকল্পনা চলছে কিন্তু বায়ুদূষণের ব্যবস্থা নেই, সেই জায়গাটা আমরা ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব। কনস্ট্রাকশন হবে, কিন্তু বায়ুদূষণ করে কনস্ট্রাকশন হতে পারবে না। স্বল্প ব্যয়েই এটি করা সম্ভব।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক ইস্যুতে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়কে এবং পরিবেশ অধিদপ্তরকে কিছু কিছু প্রকল্প সহায়তা দিচ্ছে। সেগুলো নিয়ে আলোচনা হলো। তাদের প্রত্যাশাটা কি, এবং এই প্রত্যাশাটা আমরা যত তাড়াতাড়ি পূরণ করতে পারব ততো তাদের পক্ষে সম্ভব হবে এই অন্তর্র্বতী সরকারকে আমাদের এই প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে বাজেট সহায়তা দেওয়ার। আমরা বলেছি বাংলাদেশে আইনকানুন, নীতি ভালো আছে। এগুলোকে আরো ভালো করা যায়। কিন্তু সক্ষমতা না বাড়ালে এগুলোর বাস্তবায়নের জন্য তাহলে দূরত্বটা বেড়ে যাবে। মানুষের প্রত্যাশার জায়গাটা পূরণ হবে না। আইনকানুন, নীতি আমরা আরও সময়োপযোগী করব, আরও শক্ত করব।

কিন্তু একই সঙ্গে আমাদের কাজে নেমে যেতে হবে। যেমন মানুষকে আমাদের দেখাতে হবে দূষণকারী কয়জন শাস্তি পাচ্ছে, ময়লা আবর্জনা নদীর পাড় থেকে সরছে, কিছু কিছু নদী পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। নতুন করে তাদের (বিশ্বব্যাংক) কাছে নতুন করে প্লাস্টিক, পলিথিন, শব্দ দূষণ ও কয়েকটা নদীতে দূষণ নিয়ে কথা বলেছি, বলেন পরিবেশ উপদেষ্টা।

বিশ্বব্যাংক কী ধরনের সহায়তা দেবে -এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরকে সবচেয়ে দূষিত নদী ও দূষণকারীদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। সেগুলো যখন আমরা পাব তখন একটি মনিটরিং প্ল্যান করে ফেলতে পারব। ফলে বিস্তারিত রূপরেখা তৈরি হয়নি। তবে একটি রূপরেখা তো আছেই, সেখানে নতুন নতুন কম্পোনেন্ট যদি যুক্ত করতে পারি সেটি নিয়ে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছে সর্বাত্মক সহায়তা করার চেষ্টা করবেন।
অবৈধ ইটভাটা বন্ধের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, যাদের লাইসেন্স নেই বা ছাড়পত্র নেই সেগুলো বন্ধ করে দেব। তারা বায়ুদূষণ করুক বা উন্নয়নের প্রয়োজন হোক বা না হোক তাদেরকে তো বন্ধ করতে হবে, তাদের তো কোনো অনুমোদন নেই। আশাপাশের দেশেও মাটি দিয়ে পোড়ানো ইট নেই। ব্লক ইট প্রস্তুতের যে উপাদানগুলো লাগে সেগুলো আমদানির বিষয় আছে। অবৈধ ইটভাটার ক্ষেত্রে কোনো সহানুভূতি দেখাবো না। সেগুলো বন্ধ হলে উন্নয়নে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করি না।

তিনি বলেন, আমরা নীতিগত একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখন থেকে আমারা আর কোনো নতুন ইটভাটার লাইসেন্স দেব না। তারপরের কাজে যেগুলো অবৈধ সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, তাপরের কাজ হচ্ছে সরকারে কি পরিমাণ ইট লাগে সেগুলোর বিকল্প কি হতে পারে সেটি বের করা। যারা ব্লক ইটে যেতে চান তাদের কীভাবে প্রণোদনা দেওয়া যায় সেটি দেখা হবে।

তিনি আরও বলেন, অবৈধ ইটভাটাগুলোর ক্ষেত্রে আমরা ইটভাটার মৌসুম আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইছি না। তার আগেই এগুলো আমরা বন্ধ করতে পারি কিনা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নেপালে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা নিরাপদে আছেন : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রয়োজনে তিস্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যাবে সরকার : পরিবেশ ও পানি উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৪:১৩:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

তিস্তাসহ অভিন্ন নদীতে নিজেদের অধিকারের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে সরকার কথা বলবে বলে জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ ও পানি উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, তিস্তা পাড়ের মানুষের মতামত নিয়ে এ বিষয়ে কাজ শুরু করা হবে। প্রয়োজনে তিস্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যাবে সরকার।

বুধবার (২১ আগস্ট) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে নিজের দেশের মানুষের কথা চিন্তা করছেন, তিস্তা প্রকল্প নিয়ে আমরাও আমাদের মানুষের কথা ভেবে পরবর্তী সিদ্ধান্তে যাবো। ভারতের সঙ্গে বন্ধুপ্রতীম সম্পর্ক বজায় রেখে প্রয়োজনে তিস্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে যাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

সেপ্টেম্বর থেকে পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আপনি যে দোকানে যান সে দোকান থেকে পলিথিন ব্যাগ কিনে আনেন। আমি আপনিও বলি না পলিথিন ব্যাগ দিচ্ছেন কেন, এটা তো নিষিদ্ধ। আমরাও তো হাতে করে নিয়ে আসি। মার্কেটগুলোতে গিয়ে পলিথিন ব্যাগগুলো প্রথমে আমরা বলব ১৫ থেকে ২০ দিন তারপর আমরা অভিযানে যাব। এগুলো আপাতত সিদ্ধান্ত।

কবে থেকে অভিযান শুরু হবে- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি তারিখ নির্ধারিত হয়নি। কারণ এর সঙ্গে আরো কয়েকটি সংস্থা সম্পৃক্ত। এখন সবাই একটা আন্দোলনের মুডে আছে। সবাই সবার দাবি পেশ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ওইদিকে ব্যস্ত আছে। তবে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আপনারা কার্যক্রমের শুরু দেখতে পারবেন।

বায়ু দূষণ একদিনে সমাধান হবে না জানিয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, কিন্তু এই শীতের আগে যেন বায়ু দূষণের কয়েকটি উৎসকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, সেজন্য বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা করছি। নির্মাণ কাজ আর অনুমোদন দেওয়া হবে না, যদি তারা বায়ুদূষণ প্রশমনের পরিকল্পনা ও টাকা যদি না দেখায়। সেগুলো মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা কথা বলতে পারি।

তিনি আরও বলেন, এখানে মেগা পরিকল্পনা চলছে কিন্তু বায়ুদূষণের ব্যবস্থা নেই, সেই জায়গাটা আমরা ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করব। কনস্ট্রাকশন হবে, কিন্তু বায়ুদূষণ করে কনস্ট্রাকশন হতে পারবে না। স্বল্প ব্যয়েই এটি করা সম্ভব।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক ইস্যুতে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়কে এবং পরিবেশ অধিদপ্তরকে কিছু কিছু প্রকল্প সহায়তা দিচ্ছে। সেগুলো নিয়ে আলোচনা হলো। তাদের প্রত্যাশাটা কি, এবং এই প্রত্যাশাটা আমরা যত তাড়াতাড়ি পূরণ করতে পারব ততো তাদের পক্ষে সম্ভব হবে এই অন্তর্র্বতী সরকারকে আমাদের এই প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে বাজেট সহায়তা দেওয়ার। আমরা বলেছি বাংলাদেশে আইনকানুন, নীতি ভালো আছে। এগুলোকে আরো ভালো করা যায়। কিন্তু সক্ষমতা না বাড়ালে এগুলোর বাস্তবায়নের জন্য তাহলে দূরত্বটা বেড়ে যাবে। মানুষের প্রত্যাশার জায়গাটা পূরণ হবে না। আইনকানুন, নীতি আমরা আরও সময়োপযোগী করব, আরও শক্ত করব।

কিন্তু একই সঙ্গে আমাদের কাজে নেমে যেতে হবে। যেমন মানুষকে আমাদের দেখাতে হবে দূষণকারী কয়জন শাস্তি পাচ্ছে, ময়লা আবর্জনা নদীর পাড় থেকে সরছে, কিছু কিছু নদী পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। নতুন করে তাদের (বিশ্বব্যাংক) কাছে নতুন করে প্লাস্টিক, পলিথিন, শব্দ দূষণ ও কয়েকটা নদীতে দূষণ নিয়ে কথা বলেছি, বলেন পরিবেশ উপদেষ্টা।

বিশ্বব্যাংক কী ধরনের সহায়তা দেবে -এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরকে সবচেয়ে দূষিত নদী ও দূষণকারীদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। সেগুলো যখন আমরা পাব তখন একটি মনিটরিং প্ল্যান করে ফেলতে পারব। ফলে বিস্তারিত রূপরেখা তৈরি হয়নি। তবে একটি রূপরেখা তো আছেই, সেখানে নতুন নতুন কম্পোনেন্ট যদি যুক্ত করতে পারি সেটি নিয়ে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছে সর্বাত্মক সহায়তা করার চেষ্টা করবেন।
অবৈধ ইটভাটা বন্ধের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, যাদের লাইসেন্স নেই বা ছাড়পত্র নেই সেগুলো বন্ধ করে দেব। তারা বায়ুদূষণ করুক বা উন্নয়নের প্রয়োজন হোক বা না হোক তাদেরকে তো বন্ধ করতে হবে, তাদের তো কোনো অনুমোদন নেই। আশাপাশের দেশেও মাটি দিয়ে পোড়ানো ইট নেই। ব্লক ইট প্রস্তুতের যে উপাদানগুলো লাগে সেগুলো আমদানির বিষয় আছে। অবৈধ ইটভাটার ক্ষেত্রে কোনো সহানুভূতি দেখাবো না। সেগুলো বন্ধ হলে উন্নয়নে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করি না।

তিনি বলেন, আমরা নীতিগত একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখন থেকে আমারা আর কোনো নতুন ইটভাটার লাইসেন্স দেব না। তারপরের কাজে যেগুলো অবৈধ সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, তাপরের কাজ হচ্ছে সরকারে কি পরিমাণ ইট লাগে সেগুলোর বিকল্প কি হতে পারে সেটি বের করা। যারা ব্লক ইটে যেতে চান তাদের কীভাবে প্রণোদনা দেওয়া যায় সেটি দেখা হবে।

তিনি আরও বলেন, অবৈধ ইটভাটাগুলোর ক্ষেত্রে আমরা ইটভাটার মৌসুম আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইছি না। তার আগেই এগুলো আমরা বন্ধ করতে পারি কিনা।