স্পোর্টস ডেস্ক :
ছেলেদের সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে দারুণ সূচনা করেছে বাংলাদেশ দল। নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে পূর্ণ তিন পয়েন্ট আদায় করেছে লাল-সবুজের প্রতিদিধিরা। এই প্রতিযোগিতার বর্তমান রানার্সআপ বাংলাদেশ। লঙ্কানদের বিপক্ষে তাই ফেভারিট ছিল মারুফুল হকের দল। তাদের হারিয়েই প্রতিযোগিতার সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) নেপালের ললিতপুরের আনফা কমপ্লেক্সে শ্রীলঙ্কাকে ২-০ ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ। খেলার দুই অর্ধে হয়েছে দুটি গোল। প্রথমে মিরাজুল ইসলাম দলকে এগিয়ে দেন। ম্যাচের শেষ দিকে ব্যবধান বাড়ান পিয়াস আহমেদ নোভা।
এবার শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ অংশ নিচ্ছে দেশের অভিজ্ঞ কোচ মারুফুল হকের নেতৃত্বে। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ একচেটিয়া প্রাধান্য নিয়ে খেলেই সহজ জয় তুলে নিয়েছে। তবে এ জয়টা হতে পারবো আরো বড়। বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেছে।
একটি করে জয়ে ৩ পয়েন্ট স্বাগতিক নেপাল ও বাংলাদেশের। আগামী বৃহস্পতিবার ‘এ’ গ্রুপের সেরা হওয়ার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে দুই দল। টানা দুই হারে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ঘণ্টা বাজল শ্রীলঙ্কার।
প্রথম মিনিটেই আক্রমণ শাণিয়েছিল বাংলাদেশ, কিন্তু বক্সে তালগোল পাকিয়ে আসাদুল মোল্লা পারেননি সুযোগ কাজে লাগাতে। তবে কাঙ্ক্ষিত গোলের জন্য বাংলাদেশের অপেক্ষা দীর্ঘ হয়নি। সপ্তদশ মিনিটে নেপালের এক খেলোয়াড়ের কাছ থেকে বল কেড়ে নেন রাব্বী হোসেন রাহুল। তার আড়াআড়ি ক্রস গোলমুখ থেকে টোকায় জালে জড়িয়ে দেন মিরাজুল।
এই গোলের উদযাপনে ছিল ভিন্নতা। মিরাজুলের জার্সির নিচে শর্টসের বুকে লেখা ছিল ছাত্র আন্দোলনে প্রাণ হারানোদের স্মৃতিচারণমূলক বার্তা। সেখানে লেখা, মুগ্ধ এবং আবু সাঈদ এর স্মরণে, মনে রেখ যুদ্ধ করে, রক্ত দিয়ে দেশ পেয়েছি?
২৯তম মিনিটে রাহুলের ফ্রি কিকে শুরুতে দুখু মিয়া হেড করতে না পারলেও পরে বল ঘুরে ফিরে আসে তার পায়ে, কিন্তু এ দফায়ও স্লাইড করে বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ব্যবধান দ্বিগুণের সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল, কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও মিরাজুল পারেননি জালে বল জড়াতে।
৭৪তম মিনিটে সতীর্থের লং পাস ধরে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন রাজু আহমেদ জিসান, কিন্তু আগুয়ান গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে চিপ করার চেষ্টায় দেরি করে ফেলেন তিনি। ৮৫তম মিনিটে পিয়াস আহমেদ নোভা লক্ষ্যভেদ করলে সেরা চারে খেলা নিশ্চিত হয়ে যায় গতবারের রানার্সআপ বাংলাদেশের।
ম্যাচ শেষ হওয়ার কিছু সময় আগে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বাংলাদেশ। পিয়াস নোভার গোলে ২-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
এ জয়ে গ্রুপ থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশের। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা হেরেছে নিজেদের দুটি ম্যাচেই। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পরের ম্যাচ স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে। সে ম্যাচেই নির্ধারিত হবে গ্রুপের সেরা দল। এ ম্যাচ ড্র করলেই বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে।
সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেলেও এখন গ্রুপ সেরা হওয়া নিয়ে ভাবতে হচ্ছে প্রধান কোচ মারুফুল হককে। ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় জানালেন, স্বাগতিক নেপালের মুখোমুখি হওয়ার আগে ফিটনেস ও রক্ষণে উন্নতি করতে হবে তার দলকে। আমাদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা অনেক ভালো খেলেছে। প্রথম ম্যাচের তুলনায় এ ম্যাচে তারা ভিন্ন রকম খেলেছে। তারা অনেক আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ করেছে এবং গোল করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হতে পারেনি। এই দলটাকে গুছিয়ে নেওয়ার জন্য আমি মাত্র দুই সপ্তাহ সময় পেয়েছিলাম। ফিটনেস, ট্যাকটিক্যাল কাজগুলো করার চ্যালেঞ্জ আমার জন্য ছিল, এখনও আমাদের উন্নতির জায়গা আছে, বিশেষ করে ফিটনেস ও রক্ষণের দিক থেকে। তবে এটা প্রথম ম্যাচ, আমি আশা করি, ছেলেরা উন্নতি করবে। (পরের ম্যাচের প্রতিপক্ষ) নেপাল শক্তিশালী দল, এটা তাদের ঘরের মাঠ, সবকিছুই তাদের পরিচিত, তারা কঠিন প্রতিপক্ষ।