Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যশোরে প্রবাসীকে গুলি করে হত্যা

যশোর জেলা প্রতিনিধি :

যশোরে মাথায় গুলি করে মেহের আলী (৪৫) নামের এক প্রবাসীকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাত ১১ টার দিকে সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের বাদিয়াটোলা পশ্চিম পাড়া গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহত মেহের আলী বাদিয়াটোলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের আব্দুল মালেক মণ্ডলের ছেলে। তিনি গত ২৬ জুলাই কুয়েত থেকে দেশে ফিরেছেন। ওই দেশের হাদিয়া নামক স্থানে একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন তিনি। বিদেশে যাওয়ার আগে মেহের আলী স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পরিবারের স্বজনের দাবি, চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক কোন্দলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

নিহতের স্বজনেরা জানান, গত দুই দিন ধরে নিহত মেহের আলী যশোর বাহাদুরপুর এলাকার আনোয়ার হোসেন নামের তাঁর এক খালুশ্বশুরের বাড়িতে ছিলেন। ঘটনার দিন শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে মেহের তাঁর বাড়িতে ফেরেন। এদিন রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে বাড়ির কলাপসিবল গেটে তালা মারতে আসেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা গেটের সামনে এসেই মাথায় গুলি করে পালিয়ে যান। গুলির শব্দ শুনেই স্বজনেরা দ্রুত উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আনলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাত দেড়টার দিকে হাসপাতালের মর্গের সামনে আহাজারি করতে দেখা গেছে নিহতের ছোট ভাই আবু আব্দুল্লাহকে। তিনি বলেন, ‘অনেক বছর ধরে মেহের আলীসহ তিন ভাই বিদেশে থাকি। বিদেশ যাওয়ার আগে ভাই বিএনপির রাজনীতি করত। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা মিথ্যা মামলা দিয়ে বিভিন্ন সময়ে জেল খাটিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ভাইয়ের কাছে নেতা-কর্মীরা চাঁদাও দাবি করত। কিন্তু ভাই দিতে চাইত না। তাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল। এর মধ্যে দীর্ঘদিন পর গত ২৬ জুলাই আমার ভাই দেশে ফিরেছে। আমি ফিরেছি মাসখানেক আগে।’

আবু আব্দুল্লাহ আরও বলেন, ‘গত সোমবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে এই দলের নেতাদের সঙ্গে ভাইয়ের কথা-কাটাকাটি হওয়ার কথা শুনেছি। এসব রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছি। এই হত্যা পূর্বপরিকল্পিত। কেননা, আমার ভাইয়ের বাড়ির চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। তবে যারা মেরেছে, তারা আগে থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা কেটে দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যাকারীরা বাড়ির গেটের সামনে লুকিয়ে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল।’

আহাজারি করতে করতে আবু আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমার ভাইয়ের পাঁচ বছর ও দেড় বছর বয়সী দুই শিশুসন্তান রয়েছে। তাদের কী হবে, তারা যে বাবা হারিয়েছে। তারা কারে বাবা বলে ডাকবে? আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। আমার ভাইরে কেন মারল?’

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক খন্দকার রেজয়ান উদ দারাইম জানান, গুলিবিদ্ধ মেহের আলীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনেন স্বজনেরা। তাঁর মাথার পেছনের দিকে ডান সাইটে গুলি লেগেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

যশোর কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কী কারণে হত্যা করা হয়েছে, সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। পুলিশ তদন্ত করছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। অভিযান চলছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

যশোরে প্রবাসীকে গুলি করে হত্যা

প্রকাশের সময় : ১২:০৭:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৪

যশোর জেলা প্রতিনিধি :

যশোরে মাথায় গুলি করে মেহের আলী (৪৫) নামের এক প্রবাসীকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাত ১১ টার দিকে সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের বাদিয়াটোলা পশ্চিম পাড়া গ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহত মেহের আলী বাদিয়াটোলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের আব্দুল মালেক মণ্ডলের ছেলে। তিনি গত ২৬ জুলাই কুয়েত থেকে দেশে ফিরেছেন। ওই দেশের হাদিয়া নামক স্থানে একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন তিনি। বিদেশে যাওয়ার আগে মেহের আলী স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পরিবারের স্বজনের দাবি, চাঁদাবাজি ও রাজনৈতিক কোন্দলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

নিহতের স্বজনেরা জানান, গত দুই দিন ধরে নিহত মেহের আলী যশোর বাহাদুরপুর এলাকার আনোয়ার হোসেন নামের তাঁর এক খালুশ্বশুরের বাড়িতে ছিলেন। ঘটনার দিন শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে মেহের তাঁর বাড়িতে ফেরেন। এদিন রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে বাড়ির কলাপসিবল গেটে তালা মারতে আসেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা গেটের সামনে এসেই মাথায় গুলি করে পালিয়ে যান। গুলির শব্দ শুনেই স্বজনেরা দ্রুত উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আনলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাত দেড়টার দিকে হাসপাতালের মর্গের সামনে আহাজারি করতে দেখা গেছে নিহতের ছোট ভাই আবু আব্দুল্লাহকে। তিনি বলেন, ‘অনেক বছর ধরে মেহের আলীসহ তিন ভাই বিদেশে থাকি। বিদেশ যাওয়ার আগে ভাই বিএনপির রাজনীতি করত। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা মিথ্যা মামলা দিয়ে বিভিন্ন সময়ে জেল খাটিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ভাইয়ের কাছে নেতা-কর্মীরা চাঁদাও দাবি করত। কিন্তু ভাই দিতে চাইত না। তাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল। এর মধ্যে দীর্ঘদিন পর গত ২৬ জুলাই আমার ভাই দেশে ফিরেছে। আমি ফিরেছি মাসখানেক আগে।’

আবু আব্দুল্লাহ আরও বলেন, ‘গত সোমবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে এই দলের নেতাদের সঙ্গে ভাইয়ের কথা-কাটাকাটি হওয়ার কথা শুনেছি। এসব রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছি। এই হত্যা পূর্বপরিকল্পিত। কেননা, আমার ভাইয়ের বাড়ির চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। তবে যারা মেরেছে, তারা আগে থেকে সিসিটিভি ক্যামেরা কেটে দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যাকারীরা বাড়ির গেটের সামনে লুকিয়ে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল।’

আহাজারি করতে করতে আবু আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমার ভাইয়ের পাঁচ বছর ও দেড় বছর বয়সী দুই শিশুসন্তান রয়েছে। তাদের কী হবে, তারা যে বাবা হারিয়েছে। তারা কারে বাবা বলে ডাকবে? আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। আমার ভাইরে কেন মারল?’

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক খন্দকার রেজয়ান উদ দারাইম জানান, গুলিবিদ্ধ মেহের আলীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনেন স্বজনেরা। তাঁর মাথার পেছনের দিকে ডান সাইটে গুলি লেগেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

যশোর কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কী কারণে হত্যা করা হয়েছে, সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। পুলিশ তদন্ত করছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। অভিযান চলছে।