নিজস্ব প্রতিবেদক :
এতো উন্নয়নের পরও সড়ক-মহাসড়কে যানজট ও দুর্ঘটনা কেন, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়কে পরিবহনে যদি শৃঙ্খলা না আসে, তাহলে নিরাপদ সড়কের স্বপ্ন দেখে কী লাভ? এতো রাস্তা, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পদ্মা সেতু, টানেল করা হচ্ছে কিন্তু যানজট বা দুর্ঘটনা কমছে না। সবাই তো আমাকে বলে।
বুধবার (১৫ মে) সকালে রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ভবনে সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম সভায় তিনি এ কথা বলেন। ১৯৮৩ সালের আইনে ৪২ বার সভা হলেও ২০১৭ সালের আইনের পর এটিই হলো প্রথম সভা।
তিনি বলেন, ঈদের আগে সড়কে মানুষের মৃত্যু হয়। শুধু জনপ্রতিনিধি হিসেবে নয়, একজন মানুষ হিসেবেও বিষয়টি কষ্টদায়ক। সড়ককে নিরাপদ করতে সব চেষ্টা করা হবে, এমনটাও জানান তিনি।
সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়ে কাদের বলেন, প্রতিবছর বলা হয় আগের বছর থেকে কম হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনা। কিন্তু টিমওয়ার্ক কোথায়? রেজাল্ট না পেলে কথা শুনতে হয় আমার। বিআরটিএর চেয়ারম্যানকে তো কথা শুনতে হয় না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে কোথাও হেলমেট ছাড়া কোনো মোটরসাইকেলে তেল দেয়া হবে না। মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীদের হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক করে নির্দেশনা জারি করতে যাচ্ছে সরকার।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা সিটিতে মোটরসাইকেল অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করেছি। এখানে মোটামুটি সবাই হেলমেট পরে। কিন্তু ঢাকার বাইরেও একটা পলিসি নেয়া দরকার। আমরা যে পলিসিটা নিয়েছি, তা মফস্বলেও চালু করেন। ডিসি-এসপিদের বলেন যে, ওইসব জায়গাতেও কাউকে তেল দেয়া হবে না, যদি হেলমেট না থাকে। পুরো বাংলাদেশে এ নিয়ম জারি করতে হবে।
তিনি বলেন, আজ সিদ্ধান্তই নিলাম। শুধু ঢাকা শহর করলে হবে না। পুরো বাংলাদেশ করতে হবে। নো হেলমেট নো ফুয়েল এই নীতিতে আমরা যাব। এই সিদ্ধান্তই আজ নিলাম।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে যে ধরনের লক্কর-ঝক্কর ও রংচটা গাড়ি চলে তা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে দেখা যায় না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শহরে আধুনিক গণপরিবহন চলাচল করে। কিন্তু ঢাকায় লক্কর-ঝক্কার ও রংচটা গাড়ি চলে। এগুলো দেখতেও তো খারাপ লাগে। এর চেয়ে ঢাকার বাইরে মফস্বল এলাকাগুলোতে উন্নতমানের গণপরিবহন চলে।
বিআরটিএ’র উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই লক্কর-ঝক্কর বাসগুলোর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। যদিও এখন ডাম্পিং করতে গেলে দেখা যায় ওই ধরনের গাড়ি আর রাস্তা বের হবে না। তখন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
ঈদের আগের চেয়ে ঈদের পরে সড়ক দুর্ঘটনা বেশি এবং মর্মান্তিক কিছু দুর্ঘটনা ঘটে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা মানুষ হিসেবে আমাকে কষ্ট দেয়। একটা মন্ত্রণালয়ে এতদিন দায়িত্ব পালন করার পরও সড়ক দুর্ঘটনা কমছে না। অথচ নিয়ম তো এমন হওয়া উচিত ছিল, এই বছরের ঈদে যে যানজট এবং দুর্ঘটনা ঘটবে, আগামী বছর তা আরও কমবে। কিন্তু সেখানে দুর্ঘটনা বাড়ছে। তাহলে আমরা কী কাজ করছি? আমাদের টিম ওয়ার্কের কী সফলতা আছে? এমন প্রশ্ন করেন তিনি।
সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, সড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান প্রমুখ।
নিজস্ব প্রতিবেদক 



















