Dhaka বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আসামি ধরতে গিয়ে নারীর মাথায় পিস্তল ঠেকালেন ডিবি কর্মকর্তা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার থলিয়ারায় আসামি ধরতে গিয়ে বাড়ির নারী ও শিশুদের মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিরুদ্ধে। এসংক্রান্ত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারীর মাথায় পিস্তল তাক করেছেন ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তা।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, থলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদি প্রবাসী নুরুল আলম নুরুর বিরুদ্ধে মাসখানেক আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় একটি মামলা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয় নুরু সৌদি থেকে আরেকজনের স্বর্ণ এনে পুরোটা বুঝিয়ে দেননি। পরে মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়।

এরপর শুক্রবার বিকালে নুরুল আলম বাড়িতে থাকার খবর পেয়ে ডিবি পুলিশের একটি দল ছদ্মবেশে সেখানে অভিযান চালায়।

এ সময় আসামি ধরার কথা বলে তারা বাড়িতে উপস্থিত নারীসহ অন্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করেন। একপর্যায়ে ডিবির এক কর্মকর্তাকে পিস্তল তাক করতে দেখা যায়। পরে আসামিকে না পেয়ে ডিবি পুলিশের সদস্যরা সেখান থেকে চলে আসেন।

ঘটনার সময় উপস্থিত নুরুল আলমের ভাই সারোয়ার আলম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগে জানান, সাদা পোশাকে যাওয়া লোকজন বাড়িতে ঢুকেই তার ভাইকে খোঁজ করতে থাকেন। তার ভাই বাড়িতে নেই বলার পরও তারা বিষয়টি মানতে চাননি। এ সময় পুলিশ সদস্যরা নুরুল আলমের স্ত্রী বন্যা বেগমসহ কয়েকজনকে মারধর করেন।

নিশাত নামে নয় বছরের এক শিশুর ওপরও চড়াও হন তারা। এ সময় বাড়ির লোকেরা মোবাইল ফোনে ঘটনার কিছু ভিডিওচিত্র ধারণ করার পর ডিবি সদস্যরা ভিডিওগুলো কেটে দিয়ে যান।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে স্বর্ণসংক্রান্ত বিষয়ে মামলা হয়েছে। স্বর্ণটি আমার ভাই আনেনি। অন্যের মাধ্যমে আমার ভাইয়ের কাছে দেওয়া হয় বলছে তারা। আমার ভাইকে ধরতে হলে কেন আমাদের বাড়িতে এভাবে হামলা করতে হবে? বিষয়টি আমরা থানা পুলিশকে জানিয়েছি। আদালতে এ নিয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। পুলিশ পিস্তল তাক করার পাশাপাশি গুলিও করেছে। গুলির খোসাও আমাদের কাছে আছে। তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে খোসা কার?

এদিকে ডিবি পুলিশের এসআই রেজাউল করিম বলেন, বাদীপক্ষ বিষয়টি আমাদের জানালে প্রথমে পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মোফাজ্জল আলী একজন কনস্টেবলকে নিয়ে সেখানে যান। কিছুক্ষণ পর আমি যাই। দূর থেকেই ওই বাড়িতে হট্টগোলের আওয়াজ পাই। আমি যাওয়ার পর বাড়ির লোকেরা খারাপ আচরণ শুরু করেন। এ সময় আসামিকে পালিয়ে যেতে তারা সাহায্য করেন। এ নিয়ে দুপক্ষে ধস্তাধস্তি হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার হাতে পিস্তল ছিল। তবে কারও দিকে তাক করিনি। কাউকে মারধর করা হয়নি। গুলির ঘটনা ঘটেনি। আমাদের টার্গেট যেহেতু আসামি ধরা, সেহেতু সেই লক্ষ্যেই আমরা এগোচ্ছি। যে কারণে তখন আমরা অ্যাকশনে যাইনি।

তিনি আরও বলেন, মামলার তদন্তভার আমাদের হাতে। মূল আসামির বিরুদ্ধে প্রায় ৪৬০ গ্রাম স্বর্ণ আত্মসাতের অভিযোগ আছে। মামলা হওয়ার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে। বাদী এসে বাড়িতে আসামির অবস্থানের কথা জানালে সেখানে অভিযান চালানো হয়।

জানতে চাইলে ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসাইন জানান, আসামি ধরতে গিয়ে ওই বাড়িতে সমস্যা হয়। তবে গুলি কিংবা পিস্তল তাক করার মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আসামি ধরতে গিয়ে নারীর মাথায় পিস্তল ঠেকালেন ডিবি কর্মকর্তা

প্রকাশের সময় : ০৩:৩১:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার থলিয়ারায় আসামি ধরতে গিয়ে বাড়ির নারী ও শিশুদের মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিরুদ্ধে। এসংক্রান্ত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারীর মাথায় পিস্তল তাক করেছেন ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তা।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, থলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদি প্রবাসী নুরুল আলম নুরুর বিরুদ্ধে মাসখানেক আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় একটি মামলা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয় নুরু সৌদি থেকে আরেকজনের স্বর্ণ এনে পুরোটা বুঝিয়ে দেননি। পরে মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়।

এরপর শুক্রবার বিকালে নুরুল আলম বাড়িতে থাকার খবর পেয়ে ডিবি পুলিশের একটি দল ছদ্মবেশে সেখানে অভিযান চালায়।

এ সময় আসামি ধরার কথা বলে তারা বাড়িতে উপস্থিত নারীসহ অন্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করেন। একপর্যায়ে ডিবির এক কর্মকর্তাকে পিস্তল তাক করতে দেখা যায়। পরে আসামিকে না পেয়ে ডিবি পুলিশের সদস্যরা সেখান থেকে চলে আসেন।

ঘটনার সময় উপস্থিত নুরুল আলমের ভাই সারোয়ার আলম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগে জানান, সাদা পোশাকে যাওয়া লোকজন বাড়িতে ঢুকেই তার ভাইকে খোঁজ করতে থাকেন। তার ভাই বাড়িতে নেই বলার পরও তারা বিষয়টি মানতে চাননি। এ সময় পুলিশ সদস্যরা নুরুল আলমের স্ত্রী বন্যা বেগমসহ কয়েকজনকে মারধর করেন।

নিশাত নামে নয় বছরের এক শিশুর ওপরও চড়াও হন তারা। এ সময় বাড়ির লোকেরা মোবাইল ফোনে ঘটনার কিছু ভিডিওচিত্র ধারণ করার পর ডিবি সদস্যরা ভিডিওগুলো কেটে দিয়ে যান।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে স্বর্ণসংক্রান্ত বিষয়ে মামলা হয়েছে। স্বর্ণটি আমার ভাই আনেনি। অন্যের মাধ্যমে আমার ভাইয়ের কাছে দেওয়া হয় বলছে তারা। আমার ভাইকে ধরতে হলে কেন আমাদের বাড়িতে এভাবে হামলা করতে হবে? বিষয়টি আমরা থানা পুলিশকে জানিয়েছি। আদালতে এ নিয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। পুলিশ পিস্তল তাক করার পাশাপাশি গুলিও করেছে। গুলির খোসাও আমাদের কাছে আছে। তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে খোসা কার?

এদিকে ডিবি পুলিশের এসআই রেজাউল করিম বলেন, বাদীপক্ষ বিষয়টি আমাদের জানালে প্রথমে পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মোফাজ্জল আলী একজন কনস্টেবলকে নিয়ে সেখানে যান। কিছুক্ষণ পর আমি যাই। দূর থেকেই ওই বাড়িতে হট্টগোলের আওয়াজ পাই। আমি যাওয়ার পর বাড়ির লোকেরা খারাপ আচরণ শুরু করেন। এ সময় আসামিকে পালিয়ে যেতে তারা সাহায্য করেন। এ নিয়ে দুপক্ষে ধস্তাধস্তি হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার হাতে পিস্তল ছিল। তবে কারও দিকে তাক করিনি। কাউকে মারধর করা হয়নি। গুলির ঘটনা ঘটেনি। আমাদের টার্গেট যেহেতু আসামি ধরা, সেহেতু সেই লক্ষ্যেই আমরা এগোচ্ছি। যে কারণে তখন আমরা অ্যাকশনে যাইনি।

তিনি আরও বলেন, মামলার তদন্তভার আমাদের হাতে। মূল আসামির বিরুদ্ধে প্রায় ৪৬০ গ্রাম স্বর্ণ আত্মসাতের অভিযোগ আছে। মামলা হওয়ার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে। বাদী এসে বাড়িতে আসামির অবস্থানের কথা জানালে সেখানে অভিযান চালানো হয়।

জানতে চাইলে ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসাইন জানান, আসামি ধরতে গিয়ে ওই বাড়িতে সমস্যা হয়। তবে গুলি কিংবা পিস্তল তাক করার মতো কোনও ঘটনা ঘটেনি।