Dhaka শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রমজান উপলক্ষ্যে গাজায় ত্রাণ পাঠাল বাংলাদেশসহ ৯ দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

রমজান মাস উপলক্ষে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক দাতব্য সংস্থা আল আজহার জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটি হাউস নামক একটি প্রতিষ্ঠান। এই ত্রাণ সহায়তায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশসহ নয় দেশ। পবিত্র রমজান উপলক্ষে প্রায় ২ হাজার টন খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো।

গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ত্রাণের যত চালান গেছে তার মধ্যে এই চালানটি সবচেয়ে বড় বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে আল আজহার জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটি হাউস।

বাংলাদেশ ছাড়া আরও যে আটটি দেশ ত্রাণ পাঠিয়েছে সেগুলো হলো- ইন্দোনেশিয়া, ভারত, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, ফ্রান্স, চীন, কানাডা এবং জার্মানি।

এক বিবৃতিতে আল আজহার জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটি হাউস বলেছে, গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ত্রাণের যত চালান গেছে, সেসবের মধ্যে এই চালানটি বৃহত্তম। বাংলাদেশ ব্যতীত আরও যে আটটি দেশের ত্রাণ এই চালানে যুক্ত হয়েছে, দেশগুলো হলো— ইন্দোনেশিয়া, ভারত, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, ফ্রান্স, চীন, কানাডা এবং জার্মানি।

মিসরের অনলাইন সংবাদমাধ্যম আরহাম অনলাইনকে আল আজহার জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটির মুখপাত্র আবদেল-আলীম কাশতা বলেছেন, ত্রাণ পণ্যবাহী ট্রাকগুলো মিসরের উত্তর সিনাই থেকে রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ের মাধ্যমে গাজায় প্রবেশ করবে। ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে রমজান শুরুর আগ পর্যন্ত মোট ৪ হাজার টন ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা পণ্য পাঠিয়েছে আল আজহার জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটি। সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে ত্রান পাঠানো হয়েছি।

‘তবে এ পর্যন্ত সেখানে যত ত্রাণের বহর প্রবেশ করেছে, সেসবের মধ্যে এই বহরটি সবচেয়ে বড়। মোট ৮০টি দেশের অনুদানের ভিত্তিতে বহরটি সাজানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি অনুদান দিয়েছে ৯টি দেশ—ইন্দোনেশিয়া, ভারত, বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, ফ্রান্স, চীন, কানাডা এবং জার্মানি,’ আরহাম অনলাইনকে বলেন আবদেল-আলীম কাশতা।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। হামলায় ১২শ’র বেশি মানুষ নিহত হয়। জিম্মি করে নিয়ে যায় আরও ২৪২ জনকে। ওই দিন থেকে পাল্টা আক্রমণে তীব্র আক্রোশে গাজার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার দেশটি। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

জাতিসংঘের মতে, প্রায় ৮৫ শতাংশ গাজাবাসী খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র ঘাটতির মধ্যে ইসরায়েলি আক্রমণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যেখানে ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।

মাঝে গত বছর নভেম্বরে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি ছিল। যে সময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি প্রায় দুইশ ফিলিস্তিনির মুক্তির বিনিময়ে হামাস শতাধিক জিম্মিকে ছেড়ে দেয়।

বাকি জিম্মিদের মুক্তির জন্য নতুন করে যুদ্ধবিরতি চুক্তির চেষ্টা করা হলেও তাতে খুব একটা অগ্রগতি হচ্ছে না। কারণ, হামাস বলেছে, গাজা যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ এবং সেখান থেকে সব ইসরায়েলি সেনাকে প্রত্যাহার করার শর্ত মানলেই কেবল তারা নতুন যুদ্ধবিরতিতে রাজি আছে।

আর ইসরায়েল বলেছে, হামাসকে গাজা থেকে সম্পূর্ণ নির্মূল না করা পর্যন্ত তারা যুদ্ধ অব্যাহত রাখবে। ইসরায়েল তাদের এ প্রতিজ্ঞায় অনড় রয়েছে এবং গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৩১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৩ হাজারের মতো। নিহতদের মধ্যে সাড়ে ১২ হাজারই শিশু।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রমজান উপলক্ষ্যে গাজায় ত্রাণ পাঠাল বাংলাদেশসহ ৯ দেশ

প্রকাশের সময় : ০৩:২৯:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

রমজান মাস উপলক্ষে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক দাতব্য সংস্থা আল আজহার জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটি হাউস নামক একটি প্রতিষ্ঠান। এই ত্রাণ সহায়তায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশসহ নয় দেশ। পবিত্র রমজান উপলক্ষে প্রায় ২ হাজার টন খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো।

গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ত্রাণের যত চালান গেছে তার মধ্যে এই চালানটি সবচেয়ে বড় বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে আল আজহার জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটি হাউস।

বাংলাদেশ ছাড়া আরও যে আটটি দেশ ত্রাণ পাঠিয়েছে সেগুলো হলো- ইন্দোনেশিয়া, ভারত, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, ফ্রান্স, চীন, কানাডা এবং জার্মানি।

এক বিবৃতিতে আল আজহার জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটি হাউস বলেছে, গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ত্রাণের যত চালান গেছে, সেসবের মধ্যে এই চালানটি বৃহত্তম। বাংলাদেশ ব্যতীত আরও যে আটটি দেশের ত্রাণ এই চালানে যুক্ত হয়েছে, দেশগুলো হলো— ইন্দোনেশিয়া, ভারত, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, ফ্রান্স, চীন, কানাডা এবং জার্মানি।

মিসরের অনলাইন সংবাদমাধ্যম আরহাম অনলাইনকে আল আজহার জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটির মুখপাত্র আবদেল-আলীম কাশতা বলেছেন, ত্রাণ পণ্যবাহী ট্রাকগুলো মিসরের উত্তর সিনাই থেকে রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ের মাধ্যমে গাজায় প্রবেশ করবে। ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে রমজান শুরুর আগ পর্যন্ত মোট ৪ হাজার টন ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা পণ্য পাঠিয়েছে আল আজহার জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটি। সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে ত্রান পাঠানো হয়েছি।

‘তবে এ পর্যন্ত সেখানে যত ত্রাণের বহর প্রবেশ করেছে, সেসবের মধ্যে এই বহরটি সবচেয়ে বড়। মোট ৮০টি দেশের অনুদানের ভিত্তিতে বহরটি সাজানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি অনুদান দিয়েছে ৯টি দেশ—ইন্দোনেশিয়া, ভারত, বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, ফ্রান্স, চীন, কানাডা এবং জার্মানি,’ আরহাম অনলাইনকে বলেন আবদেল-আলীম কাশতা।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। হামলায় ১২শ’র বেশি মানুষ নিহত হয়। জিম্মি করে নিয়ে যায় আরও ২৪২ জনকে। ওই দিন থেকে পাল্টা আক্রমণে তীব্র আক্রোশে গাজার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার দেশটি। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

জাতিসংঘের মতে, প্রায় ৮৫ শতাংশ গাজাবাসী খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র ঘাটতির মধ্যে ইসরায়েলি আক্রমণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যেখানে ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।

মাঝে গত বছর নভেম্বরে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি ছিল। যে সময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি প্রায় দুইশ ফিলিস্তিনির মুক্তির বিনিময়ে হামাস শতাধিক জিম্মিকে ছেড়ে দেয়।

বাকি জিম্মিদের মুক্তির জন্য নতুন করে যুদ্ধবিরতি চুক্তির চেষ্টা করা হলেও তাতে খুব একটা অগ্রগতি হচ্ছে না। কারণ, হামাস বলেছে, গাজা যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ এবং সেখান থেকে সব ইসরায়েলি সেনাকে প্রত্যাহার করার শর্ত মানলেই কেবল তারা নতুন যুদ্ধবিরতিতে রাজি আছে।

আর ইসরায়েল বলেছে, হামাসকে গাজা থেকে সম্পূর্ণ নির্মূল না করা পর্যন্ত তারা যুদ্ধ অব্যাহত রাখবে। ইসরায়েল তাদের এ প্রতিজ্ঞায় অনড় রয়েছে এবং গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৩১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৩ হাজারের মতো। নিহতদের মধ্যে সাড়ে ১২ হাজারই শিশু।