Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লায় আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

কুমিল্লার মেঘনায় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিজাম সরকার নামে এক সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে মেঘনা উপজেলার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের ফরাজিকান্দি ও নলচরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম নিজাম সরকার (৪০)। তিনি চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তার বাড়ি মেঘনা উপজেলার নলচর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মৃত আক্কাস মেম্বার। তিনি বালুর ব্যবসা করতেন। তিনি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এবং চারিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবিরের ছোটভাই।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। তাঁরা হলেন আনিস সরকার (১৮), টিটু সরকার (২৮), সুমন (২৫), দেলোয়ার (২৮), ইব্রাহিম (৩০), রমজান (৩৫), শাকিল (২২), খালেদ হাসান (১৯), হানিফ (৪৫) ও ওয়াসিম (৩৫)। আহতরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় জেলা পরিষদের সদস্য কাইয়ূম ভূইয়ার অনুসারী এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবিরের অনুসারীদের সঙ্গে দলীয় কোন্দল দীর্ঘদিনের। গত রোববার থেকে বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। সোমবার সকালে চারিভাঙ্গা এলাকায় বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মুখোমুখি সংঘর্ষ বাঁধে। এতে শর্টগানের গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হন বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নিজাম সরকারকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে সেটি একটি দুর্গম এলাকা। সেখানে যেতে হলে অনেক সময় লাগে। তবুও খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার, ওসিসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের অভিযান চালানো হচ্ছে।

নিহত নিজামের স্ত্রী সালমা আক্তার ও ভাই সানাউল্লাহ সরকারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকালে চালিভাঙ্গায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। খবর শুনে বাড়ি থেকে ঘটনাস্থলে যান নিজাম। সেখানে প্রতিপক্ষের হাতে টেঁটাবিদ্ধ হন। নিজামসহ আহত সবাইকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক নিজামকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত নিজামের বন্ধু সিরাজুল ইসলাম জানান, মেঘনা উপজেলা পরিষদের সদস্য কাউয়ুম ও চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষ বাধে। নিহত নিজাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের পক্ষের লোক।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, কুমিল্লার মেঘনা থেকে অনেকেই টেঁটাবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে নিজাম নামে একজন মারা গেছেন। আহতদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

কুমিল্লায় আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০

প্রকাশের সময় : ০২:১১:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি : 

কুমিল্লার মেঘনায় আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে নিজাম সরকার নামে এক সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে মেঘনা উপজেলার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের ফরাজিকান্দি ও নলচরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির নাম নিজাম সরকার (৪০)। তিনি চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তার বাড়ি মেঘনা উপজেলার নলচর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মৃত আক্কাস মেম্বার। তিনি বালুর ব্যবসা করতেন। তিনি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এবং চারিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবিরের ছোটভাই।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। তাঁরা হলেন আনিস সরকার (১৮), টিটু সরকার (২৮), সুমন (২৫), দেলোয়ার (২৮), ইব্রাহিম (৩০), রমজান (৩৫), শাকিল (২২), খালেদ হাসান (১৯), হানিফ (৪৫) ও ওয়াসিম (৩৫)। আহতরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় জেলা পরিষদের সদস্য কাইয়ূম ভূইয়ার অনুসারী এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবিরের অনুসারীদের সঙ্গে দলীয় কোন্দল দীর্ঘদিনের। গত রোববার থেকে বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। সোমবার সকালে চারিভাঙ্গা এলাকায় বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মুখোমুখি সংঘর্ষ বাঁধে। এতে শর্টগানের গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হন বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নিজাম সরকারকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে সেটি একটি দুর্গম এলাকা। সেখানে যেতে হলে অনেক সময় লাগে। তবুও খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার, ওসিসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের অভিযান চালানো হচ্ছে।

নিহত নিজামের স্ত্রী সালমা আক্তার ও ভাই সানাউল্লাহ সরকারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকালে চালিভাঙ্গায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। খবর শুনে বাড়ি থেকে ঘটনাস্থলে যান নিজাম। সেখানে প্রতিপক্ষের হাতে টেঁটাবিদ্ধ হন। নিজামসহ আহত সবাইকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এলে চিকিৎসক নিজামকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত নিজামের বন্ধু সিরাজুল ইসলাম জানান, মেঘনা উপজেলা পরিষদের সদস্য কাউয়ুম ও চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষ বাধে। নিহত নিজাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের পক্ষের লোক।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, কুমিল্লার মেঘনা থেকে অনেকেই টেঁটাবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে নিজাম নামে একজন মারা গেছেন। আহতদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।