Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ফায়ার সেফটি ছিল না : ফায়ার সার্ভিস 

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০১:১৬:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ১৮৯ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস এন্ড ম্যানটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে কোনো ফায়ার সেফটি ছিল না। আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে মার্কেটের নিরাপত্তা রক্ষীদেরও খুঁজে পাননি। একপর্যায়ে তালা ও গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। ফুটপাত ও সড়কে দোকান থাকায় এবং মানুষের ভিড়ের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়েছে। এখানে পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নেই।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে কৃষি মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণের পর সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।

তাজুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে কোনো ফায়ার সেফটি ছিল না। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিংয়ের কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। ফুটপাত ও সড়কে দোকান থাকা ও মানুষের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়েছে। এখানে পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল না। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট আগুনের খবর পেয়ে ৯ মিনিটের মাথায় আমরা এখানে চলে আসি। রাত তিনটা ৫২ থেকে আমরা এখানে আগুন নির্বাপণের চেষ্টা করি। সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছি। ১৭টি ইউনিটে ১৫০ জন ফায়ার ফাইটার কাজ করেছেন। ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী-নৌবাহিনীর সদস্যরাও সহযোগিতা করেছেন।

তিনি বলেন, এই মার্কেটে কোনো সেফটি প্ল্যান নেই। বার বার মার্কেটটিতে নোটিশ দেয়া হয়েছে এবং বিভিন্নভাবে গণসংযোগ করা হয়েছে। সচেতনতার প্রোগ্রাম যেভাবে আমরা করেছি সেভাবে তারা সাড়া দেয়নি। এই মার্কেটটা কিছুটা বঙ্গবাজার মতো। এখানে ভেতরে অনেক সাবওয়ে হয়েছিল ছোট ছোট কিন্তু ভেতরে যত রাস্তা এবং বাইরের যে ছোট ছোট রাস্তা, পুরোটাই বিভিন্ন মালামালে দিয়ে গাদাগাদি করে রাস্তাটা বন্ধ করা ছিল। পুরো মার্কেট টাইট কলাপসিবল গেট দিয়ে আটকানো ছিল।

তিনি আরো বলেন, এখানকার নাইট গার্ড যারা ছিলেন তারা বাইরে ছিলেন। তাদের খুঁজেই পাওয়া যায়নি তেমন একটা। ভেতরে ফায়ার ফাইটারদের প্রবেশ করতে বেগ পেতে হয়েছে। তালা ভেঙে এবং কলাপসিবল গেট ভেঙে ভেতরে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি।

তাজুল ইসলাম বলেন, এ মার্কেটের বাইরেও বিভিন্নভাবে রাস্তাগুলো দখল করা ছিল। দোকানের সামনে ছোটখাটো দোকান আমাদের কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলোর জন্য আমাদেরকে বেগ পেতে হয়। আমরা আসার পরই আগুনের মাত্রা অনেক বেশি দেখেছি। একটা পর্যায়ে মার্কেটের প্রায় চার ভাগের তিনভাগ সম্পূর্ণ আগুন ধরে যায় এবং আমরা চেষ্টা করি এই মার্কেটের ভেতরে যেন আগুন আবদ্ধ থাকে। ফায়ার ফাইটাররা সর্বাত্মক চেষ্টা করে আগুন একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ রাখতে পেরেছেন।

এখন আগুন নির্বাপণের চেষ্টা চলছে। আগুনটা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে তবে নির্বাপণে কিছুটা সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সময় মার্কেটের প্রতিনিধিদের ডেকে আলোচনা করেছি। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিং ওনাদেরকেই করতে হবে। এই মার্কেটে প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিং-এর কোনো ইক্যুইপমেন্টই ছিল না। কোনো ধরনের পানির সোর্স ছিল না। আমরা সব থেকে বেশি বেগ পেয়েছি পানির সোর্স না থাকার কারণে। এখানে বিভিন্ন ভবনে পানির সোর্স রয়েছে কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়।

খুব দ্রুত আমাদের পানি শেষ হয়ে যায়। আমরা বিশেষ পানিবাহিত গাড়ি এনে এবং অন্যান্য বাহিনীর সহায়তায় আমরা এই কার্যক্রম চালিয়ে যাই।

আগুন নেভানোর এত সময় লাগার আরো বড় কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগুন নেভানোর আরেকটি বড় কারণ ছিল মানুষের ভিড়। তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের পুলিশ বিজিবি তারা খুবই হিমশিম খেয়েছে। এই ভিড়ের কারণে আমাদের এত সময় লেগেছে। যদিও মানুষ চেষ্টা করতে চায় আমাদের সহযোগিতা করার জন্য কিন্তু আদৌ এটা আমাদের অনেক সময় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

তিনি বলেন, আগুনের সূত্রপাত আমরা তদন্ত করে দেখার চেষ্টা করব জানার জন্য। তবে যতটুকু বুঝেছি মুদির দোকানের যেই অংশটি ছিল ওই অংশ থেকে আগুনের সূত্রপাত। আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যারা ছিল তাদের দু-একজন কিছুটা আহত হয়েছে। এর বাইরে বড় ধরনের হতাহতের তথ্য নেই।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগে বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ৩টা ৪৩ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট।

ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর অগ্নিনির্বাপণ সাহায্যকারী দল।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে ফায়ার সেফটি ছিল না : ফায়ার সার্ভিস 

প্রকাশের সময় : ০১:১৬:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস এন্ড ম্যানটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে কোনো ফায়ার সেফটি ছিল না। আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে মার্কেটের নিরাপত্তা রক্ষীদেরও খুঁজে পাননি। একপর্যায়ে তালা ও গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। ফুটপাত ও সড়কে দোকান থাকায় এবং মানুষের ভিড়ের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়েছে। এখানে পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নেই।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে কৃষি মার্কেটের আগুন নিয়ন্ত্রণের পর সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।

তাজুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে কোনো ফায়ার সেফটি ছিল না। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিংয়ের কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। ফুটপাত ও সড়কে দোকান থাকা ও মানুষের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়েছে। এখানে পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল না। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট আগুনের খবর পেয়ে ৯ মিনিটের মাথায় আমরা এখানে চলে আসি। রাত তিনটা ৫২ থেকে আমরা এখানে আগুন নির্বাপণের চেষ্টা করি। সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছি। ১৭টি ইউনিটে ১৫০ জন ফায়ার ফাইটার কাজ করেছেন। ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী-নৌবাহিনীর সদস্যরাও সহযোগিতা করেছেন।

তিনি বলেন, এই মার্কেটে কোনো সেফটি প্ল্যান নেই। বার বার মার্কেটটিতে নোটিশ দেয়া হয়েছে এবং বিভিন্নভাবে গণসংযোগ করা হয়েছে। সচেতনতার প্রোগ্রাম যেভাবে আমরা করেছি সেভাবে তারা সাড়া দেয়নি। এই মার্কেটটা কিছুটা বঙ্গবাজার মতো। এখানে ভেতরে অনেক সাবওয়ে হয়েছিল ছোট ছোট কিন্তু ভেতরে যত রাস্তা এবং বাইরের যে ছোট ছোট রাস্তা, পুরোটাই বিভিন্ন মালামালে দিয়ে গাদাগাদি করে রাস্তাটা বন্ধ করা ছিল। পুরো মার্কেট টাইট কলাপসিবল গেট দিয়ে আটকানো ছিল।

তিনি আরো বলেন, এখানকার নাইট গার্ড যারা ছিলেন তারা বাইরে ছিলেন। তাদের খুঁজেই পাওয়া যায়নি তেমন একটা। ভেতরে ফায়ার ফাইটারদের প্রবেশ করতে বেগ পেতে হয়েছে। তালা ভেঙে এবং কলাপসিবল গেট ভেঙে ভেতরে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি।

তাজুল ইসলাম বলেন, এ মার্কেটের বাইরেও বিভিন্নভাবে রাস্তাগুলো দখল করা ছিল। দোকানের সামনে ছোটখাটো দোকান আমাদের কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলোর জন্য আমাদেরকে বেগ পেতে হয়। আমরা আসার পরই আগুনের মাত্রা অনেক বেশি দেখেছি। একটা পর্যায়ে মার্কেটের প্রায় চার ভাগের তিনভাগ সম্পূর্ণ আগুন ধরে যায় এবং আমরা চেষ্টা করি এই মার্কেটের ভেতরে যেন আগুন আবদ্ধ থাকে। ফায়ার ফাইটাররা সর্বাত্মক চেষ্টা করে আগুন একটা জায়গায় সীমাবদ্ধ রাখতে পেরেছেন।

এখন আগুন নির্বাপণের চেষ্টা চলছে। আগুনটা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে তবে নির্বাপণে কিছুটা সময় লাগবে বলেও জানান তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সময় মার্কেটের প্রতিনিধিদের ডেকে আলোচনা করেছি। প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিং ওনাদেরকেই করতে হবে। এই মার্কেটে প্রাথমিক ফায়ার ফাইটিং-এর কোনো ইক্যুইপমেন্টই ছিল না। কোনো ধরনের পানির সোর্স ছিল না। আমরা সব থেকে বেশি বেগ পেয়েছি পানির সোর্স না থাকার কারণে। এখানে বিভিন্ন ভবনে পানির সোর্স রয়েছে কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়।

খুব দ্রুত আমাদের পানি শেষ হয়ে যায়। আমরা বিশেষ পানিবাহিত গাড়ি এনে এবং অন্যান্য বাহিনীর সহায়তায় আমরা এই কার্যক্রম চালিয়ে যাই।

আগুন নেভানোর এত সময় লাগার আরো বড় কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগুন নেভানোর আরেকটি বড় কারণ ছিল মানুষের ভিড়। তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের পুলিশ বিজিবি তারা খুবই হিমশিম খেয়েছে। এই ভিড়ের কারণে আমাদের এত সময় লেগেছে। যদিও মানুষ চেষ্টা করতে চায় আমাদের সহযোগিতা করার জন্য কিন্তু আদৌ এটা আমাদের অনেক সময় সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

তিনি বলেন, আগুনের সূত্রপাত আমরা তদন্ত করে দেখার চেষ্টা করব জানার জন্য। তবে যতটুকু বুঝেছি মুদির দোকানের যেই অংশটি ছিল ওই অংশ থেকে আগুনের সূত্রপাত। আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যারা ছিল তাদের দু-একজন কিছুটা আহত হয়েছে। এর বাইরে বড় ধরনের হতাহতের তথ্য নেই।

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগে বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ৩টা ৪৩ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট।

ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর অগ্নিনির্বাপণ সাহায্যকারী দল।