Dhaka বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিদেশি পর্যবেক্ষক বিষয়ে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে খসড়া চূড়ান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যেসব বিদেশি পর্যবেক্ষক পর্যবেক্ষণে আসতে চায়, তাদের জন্য সহায়ক হবে এমন পর্যবেক্ষক নীতিমালা করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেপ্টেম্বরে প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এই নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করতে চায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

বুধবার (২৩ আগস্ট) বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে দীর্ঘ দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এই তথ্য দেন।

ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা নিয়ে আজকে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। আমাদের আরও সভা করতে হবে। আজকে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এনবিআর, তথ্য মন্ত্রণালয়সহ সভা করেছি। আজকের সভায় কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। আমাদের বর্তমান যে নীতিমালাটি আছে সেটি পর্যালোচনা করেছি। কোন কোন পয়েন্ট যুগোপযোগী করা প্রয়োজন তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আগামী সপ্তাহে আমরা আবারও বসব। আরও দু-একটি সভা করে আমরা খসড়া চূড়ান্ত করে কমিশনে উপস্থাপন করব। কমিশন অনুমোদন দিলেই সেটি চূড়ান্ত হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে অশোক কুমার বলেন, আমরা নীতিমালাটি এমনভাবে করছি যাতে, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য সহায়ক হয়, ব্যবহার বান্ধব হয়।

আরেক প্রশ্নের জবাবে ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম সাপ্তাহে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য এ খসড়া নীতিমালা সম্পন্ন করতে পারব।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইইউ প্রতিনিধিরা কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে পর্যবেক্ষকদের কিছু যন্ত্রপাতি আনা এবং ট্যাক্স সংক্রান্ত বিষয়ে সুপারিশ করেছে। এছাড়া বিদ্যমান বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা হালনাগাদসহ তাদের সুবিধার্থে নীতিমালায় কী যুক্ত করা যায় সে লক্ষ্যে আজ বুধবার নির্বাচন ভবনে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডাকায় মিলিত হয়েছিল পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, আইন, তথ্য ও সম্প্রচার এবং এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা।

এদিকে, আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ইইউর ‘যত খুশি নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক’ পাঠানোকে স্বাগত জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইসি বলছে, সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদনগুলো এলে সুবিধা হয়। কারণ, আরও কিছু ফরমালিটিজ রয়েছে। এখানে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্সের বিষয় রয়েছে। নিরপেক্ষ অবজারভার পাঠালে, যত সংখ্যক ইচ্ছে পাঠাতে পারে। এতে কমিশনের কোনো আপত্তি নেই।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন জানান, আসন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিদেশি পর্যবেক্ষককে অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জারিকৃত নির্বাচন পর্যবেক্ষণসংক্রান্ত নীতিমালা অনুসরণ করা হবে।

২০১৮ ও ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ ও দশম সংসদ নির্বাচনে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। সেই দুটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছিল তারা।

একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে ৮১টি দেশি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠানের ২৫ হাজার ৯০০ জন প্রতিনিধি। এছাড়া, ৩৮ জন (ফেমবোসা, এএইএ, ওআইসি ও কমনওয়েলথ থেকে আমন্ত্রিত) বিদেশি পর্যবেক্ষক, বিভিন্ন বিদেশি মিশনের ৬৪ জন কর্মকর্তা, দূতাবাস ও বিদেশি সংস্থায় কর্মরত ৬১ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।

দশম সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশ না নেওয়ায় পর্যবেক্ষকও কম ছিল। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ওই নির্বাচনে মাত্র ৪ জন বিদেশি এবং স্থানীয় ৩৫টি সংস্থার ৮ হাজার ৮৭৪ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।

২০০৮ সালে ৫৯৩ জন বিদেশি এবং ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন দেশি, ২০০১ সালে ২২৫ জন বিদেশি এবং ২ লাখ ১৮ হাজার জন দেশি, ১৯৯৬ সালে প্রায় ৪০ হাজার দেশি এবং ২৬৫ জন বিদেশি, ১৯৯১ সালে ৩০ হাজার দেশি এবং ৫৯ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।

চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে চায় ইসি। নভেম্বরে তফসিল ঘোষণার আভাসও রয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নগদে নতুন বিনিয়োগকারী খুঁজতে সপ্তাহ খানেকের মধ্য বিজ্ঞপ্তি : গভর্নর

বিদেশি পর্যবেক্ষক বিষয়ে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে খসড়া চূড়ান্ত

প্রকাশের সময় : ০২:২২:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যেসব বিদেশি পর্যবেক্ষক পর্যবেক্ষণে আসতে চায়, তাদের জন্য সহায়ক হবে এমন পর্যবেক্ষক নীতিমালা করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেপ্টেম্বরে প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এই নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করতে চায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

বুধবার (২৩ আগস্ট) বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে দীর্ঘ দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ এই তথ্য দেন।

ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা নিয়ে আজকে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। আমাদের আরও সভা করতে হবে। আজকে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এনবিআর, তথ্য মন্ত্রণালয়সহ সভা করেছি। আজকের সভায় কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। আমাদের বর্তমান যে নীতিমালাটি আছে সেটি পর্যালোচনা করেছি। কোন কোন পয়েন্ট যুগোপযোগী করা প্রয়োজন তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আগামী সপ্তাহে আমরা আবারও বসব। আরও দু-একটি সভা করে আমরা খসড়া চূড়ান্ত করে কমিশনে উপস্থাপন করব। কমিশন অনুমোদন দিলেই সেটি চূড়ান্ত হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে অশোক কুমার বলেন, আমরা নীতিমালাটি এমনভাবে করছি যাতে, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য সহায়ক হয়, ব্যবহার বান্ধব হয়।

আরেক প্রশ্নের জবাবে ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম সাপ্তাহে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য এ খসড়া নীতিমালা সম্পন্ন করতে পারব।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইইউ প্রতিনিধিরা কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে পর্যবেক্ষকদের কিছু যন্ত্রপাতি আনা এবং ট্যাক্স সংক্রান্ত বিষয়ে সুপারিশ করেছে। এছাড়া বিদ্যমান বিদেশি পর্যবেক্ষক নীতিমালা হালনাগাদসহ তাদের সুবিধার্থে নীতিমালায় কী যুক্ত করা যায় সে লক্ষ্যে আজ বুধবার নির্বাচন ভবনে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডাকায় মিলিত হয়েছিল পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, আইন, তথ্য ও সম্প্রচার এবং এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা।

এদিকে, আগামী নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ইইউর ‘যত খুশি নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষক’ পাঠানোকে স্বাগত জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইসি বলছে, সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদনগুলো এলে সুবিধা হয়। কারণ, আরও কিছু ফরমালিটিজ রয়েছে। এখানে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ক্লিয়ারেন্সের বিষয় রয়েছে। নিরপেক্ষ অবজারভার পাঠালে, যত সংখ্যক ইচ্ছে পাঠাতে পারে। এতে কমিশনের কোনো আপত্তি নেই।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন জানান, আসন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিদেশি পর্যবেক্ষককে অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জারিকৃত নির্বাচন পর্যবেক্ষণসংক্রান্ত নীতিমালা অনুসরণ করা হবে।

২০১৮ ও ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ ও দশম সংসদ নির্বাচনে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। সেই দুটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছিল তারা।

একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে ৮১টি দেশি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠানের ২৫ হাজার ৯০০ জন প্রতিনিধি। এছাড়া, ৩৮ জন (ফেমবোসা, এএইএ, ওআইসি ও কমনওয়েলথ থেকে আমন্ত্রিত) বিদেশি পর্যবেক্ষক, বিভিন্ন বিদেশি মিশনের ৬৪ জন কর্মকর্তা, দূতাবাস ও বিদেশি সংস্থায় কর্মরত ৬১ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।

দশম সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশ না নেওয়ায় পর্যবেক্ষকও কম ছিল। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ওই নির্বাচনে মাত্র ৪ জন বিদেশি এবং স্থানীয় ৩৫টি সংস্থার ৮ হাজার ৮৭৪ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।

২০০৮ সালে ৫৯৩ জন বিদেশি এবং ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন দেশি, ২০০১ সালে ২২৫ জন বিদেশি এবং ২ লাখ ১৮ হাজার জন দেশি, ১৯৯৬ সালে প্রায় ৪০ হাজার দেশি এবং ২৬৫ জন বিদেশি, ১৯৯১ সালে ৩০ হাজার দেশি এবং ৫৯ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।

চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে চায় ইসি। নভেম্বরে তফসিল ঘোষণার আভাসও রয়েছে।