নিজস্ব প্রতিবেদক :
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার বাজেটের নামে মশকরা করেছে দেশের জনগণের সঙ্গে। এটা গরিব মারার বাজেট।
শনিবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সাজা বহাল রেখে যে রায় হয়েছে- সেটির প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখনো সময় আছে ক্ষমতা ছেড়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। সরকারের পেছনে আজরাইল দাঁড়িয়ে গেছে, তাদের সময় শেষ।
মির্জা ফখরুল বলেন, মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিরোধীদলীয় নেতাদের রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে চায়। এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়ার মাধ্যমে।
বিএনপি নেতাদের সাজা দিয়ে জনগণের আন্দোলন দমানো যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এভাবেই নেতাদের কারাগারে রেখে নির্বাচনে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু তাদের সেই আশায় গুড়ে বালি। কারণ মানুষ জেগে উঠেছে।
সরকারের পেছনে আজরাইল দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিরোধী দলীয় নেতাদের রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে চায়। এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়ার মাধ্যমে। নেতাদের কারাগারে রেখে নির্বাচনে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু তাদের সেই আশায় গুঁড়েবালি, মানুষ জেগে উঠেছে। নেতাদের সাজা দিয়ে জনগণের আন্দোলন দমানো যাবে না।
বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আজকে সরকারের অপকর্ম সারা বিশ্ব জানে। তারা এ বাঙালি জাতিকে বিশ্বের বুকে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। আমেরিকার ভিসা নীতি কেন? কই আর কোনো রাষ্ট্রের জন্য তো এই ভিসা নীতি হয়নি। কারণ, এদেশে গণতন্ত্র নেই, বাকস্বাধীনতা নেই।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ আওয়ামী লীগের লক্ষ্য ছিল একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করার। তারা এই লক্ষ্যকে বাস্তবায়িত করতে তারা কোর্টের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে। এজন্য তারা দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচনের ব্যাবস্থা করেছে। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে মিথ্যা রায় দিয়েছে সরকার। এরা আদালত ব্যাবহার করে নির্বাচনে ফাঁকা মাঠ পেতে চায়। এ আশায় গুড়ে বালি। সেটা কখনো হবে না। এ দেশের মানুষ সেটা কখনো হতে দিবে না।
তিনি বলেন, মানুষ ভেবে ছিল বাজেট তাদের জন্য কোনো সুখবর থাকবে। কিন্তু ওই বিধিবাম। আল্লাহ করে এক, মানুষ ভাবে আরেক। সরকার মশকরা করছে। এটা নাকি গরিব বান্ধব বাজেট। যার আয় নেই তাকেও নাকি ২ হাজার টাকা আয়কর রিটার্ন দিতে হবে। এই হাইকোর্ট থেকেই আমান, টুকু খালাস পেয়েছিলেন, ওই মামলাগুলো উজ্জীবিত করে তাদের বিরুদ্ধে রায় দেয়া হয়েছে। একই মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা মায়াকে খালাস দেয়া হয়েছে। এরা কারা, এরা সবাই আওয়ামী লীগের নেতা।
সামনে কোরবানি ঈদ, একজন শ্রমিক বলছে আমরা একদিন গোশত খাইতে চাই, কিন্তু কিভাবে খাবে এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, তারা আদা মসলা কিনবে কি করে। এই সরকার দেয়ালের লিখন পড়ে না। সাধারণ মানুষের কথা ভাবে না। এখন এরা সুবোধ সেজেছে। ভালো পোশাক পরে, এসি রুমে বসে থাকছে বলে দেশ নাকি সিঙ্গাপুর হয়ে গেছে। এদের এখন একটু মাথা ব্যাথা শুরু হয়েছে, ভিসা নীতি নিয়ে। মার্কিন বলেছে সুষ্ঠু নির্বাচন না করলে ভিসা থেকে বঞ্চিত হবেন।
মহাসচিব বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে, মাথা ফাটিয়ে এরা কি আমাদেরকে আটকে রাখতে পেয়েছে? নেতাকর্মীরা তখন উচ্চস্বরে বলে না। এদেরকে পদত্যাগ করতে হবে। বর্তমান সঙ্কট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। আর সময় নেই সরকারর। এদের পেছনে আজরাঈল দাঁড়িয়ে গেছে। আর পার পাবে না।
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, এখনো সময় আছে। ক্ষমতা ছেড়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। অনেক অত্যাচার অবিচার করেছেন। মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করেছেন। এবার জনগণকে রেহাই দেন। এ সময় তিনি বলেন, সরকারের পেছনে আজরাইল দাঁড়িয়ে গেছে, তাদের সময় শেষ।
আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল, মহিলা দলের সভানেত্রী মির্জা আফরোজা আব্বাস, বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।